ডুয়েল ফর পাওয়ার থ্র্যাটেন্স বাংলাদেশ: নিউইয়র্ক টাইমস
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, ঢাকা: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী দৈনিক নিউইয়র্ক টাইমস বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে বাদ দিয়ে নতুন সরকারের শপথ গ্রহণের মধ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশে একদলীয় শাসনের সূচনা করছেন বলে মন্তব্য করেছে।
‘ম্যাট্রিয়ার্চেস ডুয়েল ফর পাওয়ার থ্র্যাটেন্স টু টিলট বাংলাদেশ অব ব্যালেন্স’ শীর্ষক প্রতিবেদনে পত্রিকাটি জানায়, নির্বাচনের সমালোচনা এবং এমনকি অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার হুমকিও শেখ হাসিনার কাছে কোন ব্যাপার নয়।
ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম বলেন, নির্বাচনোত্তর মধ্য সপ্তাহান্তে এসে মনে হচ্ছে, একমাত্র সেনাবাহিনীই সরকারকে সমঝোতায় আসতে বাধ্য করতে পারে। কিন্তু শেখ হাসিনা যদি সেনাবাহিনীকে খুশী রাখতে পারেন তবে তার ক্ষমতায় থাকতে কোন সমস্যা হবে না। খালেদা জিয়া বাসে আগুন লাগানো ছাড়া আর কিছুই করতে পারবেন না।
প্রধানমন্ত্রীর একজন ঘনিষ্ঠ সহযোগী ও পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভী বলেন, নতুন নির্বাচন হবে এটা নিশ্চিত। তবে কখন হবে সেটা অনিশ্চিত। তিনি আরো বলেন, দু’টি বিষয় নিশ্চিত, নির্বাচন হবে এবং বিএনপি এতে অংশ নিবে। তবে ওই নির্বাচনে খালেদা জিয়া থাকতে পারেন, আবার নাও থাকতে পারেন।
নিউইয়র্ক টাইমস জানায়, গত ২০ বছর ধরে বাংলাদেশ নিয়ন্ত্রণ করছেন দুই নারী- বেগম খালেদা জিয়া এবং শেখ হাসিনা। মধ্যযুগীয় একগুঁয়ে ও স্বৈরাচারী মনোভাবী এই জনপ্রিয় দুই নেত্রী প্রত্যেকে গত চারটি নির্বাচনের দু’টিতে জয়ী হয়েছেন এবং তাদের প্রতিদ্বন্দ্বিতার কারণে এক ধরণের ভারসাম্য ছিল। তবে গত সপ্তাহে এই সহাবস্থানের সমাপ্তি ঘটেছে এবং একদলীয় শাসনের ঝুঁকিপূর্ণ প্রচেষ্টা শুরু হয়েছে। এতে বলা হয়, দীর্ঘস্থায়ী দাঙ্গা-হাঙ্গামার পরিণতি হতে পারে ভয়াবহ।
একটি বিরল মুসলিম গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে বাংলাদেশে ব্যাপক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হচ্ছিল। দেশটির বিশাল আকাশ, স্থল ও নৌ সীমানা সন্ত্রাসীদের আদর্শ ট্রানজিট পয়েন্টে পরিণত হতে পারে। দেশটির ‘বিজয়ীদের সব কিছু ভোগের’ নীতির কারণে দুই নেত্রী জুয়াখেলায় জড়িয়ে পড়েছেন।
খালেদা জিয়া নির্বাচন বর্জন করে রাজপথে সহিংস বিক্ষোভের ওপর নির্ভর করে জুয়া খেলেছেন আর শেখ হাসিনা প্রধান বিরোধী দলকে বাদ দিয়েই নির্বাচন করে জুয়া খেলেছেন। এমনকি আন্তর্জাতিক নিন্দার মুখেও তিনি নির্বাচন করেছেন এবং বেশিরভাগ পশ্চিমা সরকারগুলো নতুন নির্বাচনে দাবি জানালেও তা তিনি আমলে নিচ্ছেন না।
তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, সরকারের মধ্যে বিতর্ক শুরু হয়েছে খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে বাদ দেওয়া উচিত হবে কিনা। তিনি বলেন, ‘তারা বলছে- এটা খুব ঝুঁকিপূর্ণ হবে। কিন্তু আমি বলছি, তিনি থাকলে বাংলাদেশই ঝুঁকিপূর্ণ হবে’।
নির্বাচনে বিএনপির জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও তত্ত্বাবধায়ক সরকার ইস্যুতে বিএনপি নির্বাচন বর্জন করে। ফলে ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের দিন ভোটার উপস্থিতি ছিল খুবই কম। পশ্চিমা সরকারগুলো এই নির্বাচনের কড়া সমালোচনা করে এবং যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা নতুন নির্বাচনের দাবি জানায়।
বিএনপির স্থান নেবে অন্য দল : পত্রিকা তার প্রতিবেদনে জানায়, আ.লীগ চাইছে নতুন সরকারে এমন কোন দলকে বিরোধী দলে বসানো যারা বিরোধী দলের ভূমিকা ভালোভাবে করতে পারবে। দশম সংসদের মেয়াদে ভালো কাজ করে ওই দলটি বিএনপির স্থান দখল করে নেবে।