দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: ২০২১ সালে তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবলে যুক্ত হতে পারে বাংলাদেশ। এরই মধ্যে বাংলাদেশ সরকার সাবমেরিন ক্যাবল বিষয়ক কনসোর্টিয়ামে যুক্ত হতে সম্মতি জানিয়েছে। এখন থেকে ২-৩ বছরের মধ্যে তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবল থেকে ব্যান্ডউইথ পাওয়া যাবে। এই কারণে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিটির শেয়ারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ ক্রমশ বাড়ছে।

সার্বিক লেনদেন ও দরে ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে প্রতিদিনই। তবে এই সুযোগে রাষ্ট্রায়ত্ব বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি) হাতে থাকা শেয়ার বিক্রি করে মুনাফা তুলে নিচ্ছেন। যার চাপ পড়ছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ওপর।

বাজার সংশ্লিষ্টদের মতে, পুঁজিবাজারের সূচক যেখানে প্রতিনিয়ত কমছে সেখানে রাষ্ট্রায়ত্ব বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান আইসিবির শেয়ার বিক্রি বাড়ানো কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না। কারণ সরকার ও নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) যখন শেয়ারবাজারকে স্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে সেখানে আইসিবির ট্রেডারের ভূমিকা মেনে নেয়া যায় না। বাজারকে সার্পোট না দিয়ে উল্টো পতনকে উস্কে দিচ্ছেন প্রতিষ্ঠানটি।

সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সি-মি-উই-৬ কনসোর্টিয়াম গঠন হচ্ছে। বাংলাদেশ ওই কনসোর্টিয়ামে থাকার বিষয়ে মন্ত্রণালয় ইতিবাচক মনোভাব জানিয়েছে। এখন প্রক্রিয়া শুরু হবে। বাংলাদেশ ২-৩ বছরের মধ্যে বাংলাদেশ সি-মি-উই-৬ থেকে ব্যান্ডউইথ পাবে। বর্তমানে প্রায় এক হাজার জিবিপিএস (গিগা বিটস পার সেকেন্ড) ব্যান্ডউইথ দেশে ব্যবহার হচ্ছে।

আগামীতে বর্ধিত চাহিদা মেটাতে এই উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। এছাড়া সরকারের ডিজিটাইলাইজেশনের অংশ হিসেবে ইউনিয়ন পর্যায়ে ইন্টারনেট ব্যবস্থা স¤প্রসারণের উদ্যোগ সফল করতে হলে সাবমেরিন ক্যাবলের ব্যবহার বাড়বে। কোম্পানিটির আয়ও আগের তুলনায় অনেক বাড়বে।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, জানুয়ারি মাসে কোম্পানিটির অর্ধবার্ষিকীর আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশের পর থেকেই কোম্পানিটির শেয়ারেরপ্রতি বিনিয়োগকারীদের চাহিদা বাড়তে থাকে। মূলত আগের তুলনায় প্রবৃদ্ধি বাড়া ও টেকনোলজির অগ্রগতির কারণেই বিনিয়োগকারীরা দীর্ঘমেয়াদে কোম্পানিটির প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছেন। এই কারণে কোম্পানিটির প্রাতিষ্ঠানিক ও বিদেশী বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বাড়ছে।

সর্বশেষ ডিএসইতে প্রকাশিত অর্ধবার্ষিকী অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ৬ মাসে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে ৯৬ পয়সা। যা আগে ছিল মাত্র ৪ পয়সা। একইভাবে কোম্পানিটির অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো দাঁড়িয়েছে ৩.৪৮ টাকা। যা আগে ছিল ১.০৪ টাকা। অর্থাৎ কোম্পানিটির অভাবনীয় প্রবৃদ্ধি ঘটেছে। ডিএসইতে শেয়ারধারণ সংক্রান্ত

সর্বশেষ তথ্যানুসারে, জানুয়ারি মাসে কোম্পানিটিতে প্রাতিষ্ঠানিক ও বিদেশী বিনিয়োগকারীদের শেয়ার কেনার হার বেড়েছে। জানুয়ারি মাসে কোম্পানিটির উদ্যোক্তার কাছে শেয়ার রয়েছে ৭৩.৮৪ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ১৪.৯৬ শতাংশ ও বিদেশীদের কাছে ৩.০৪ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে শেয়ারধারণ আগের তুলনায় কমে দাঁড়িয়েছে ৮.১৬ শতাংশ। আগের মাসে ডিএসইতে উদ্যোক্তার কাছে সমান সংখ্যক শেয়ার ছিল।

কিন্তু প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর কাছে ছিল ১৪.১০ শতাংশ আর বিদেশীদের কাছে ছিল ২.৪৪ শতাংশ শেয়ার। সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে এই কোম্পানিটির মোট ৯.৬১ শতাংশ শেয়ার ছিল। অর্থাৎ সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে থেকে দীর্ঘমেয়াদে কোম্পানিটির শেয়ার ধারণের হার কমছে।