দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত সাধারণ বীমা খাতের কোম্পানি প্রভাতী ইন্স্যুরেন্স। গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর লেনদেন শেষে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম দাঁড়ায় ১৭ টাকা ১০ পয়সা। এরপর অনেকটা টানা বেড়ে চলতি বছরের ১১ ফেব্রুয়ারি কোম্পাটির শেয়ারের দাম ৪৩ টাকা ২০ পয়সায় পৌঁছায়। শেয়ারের দাম বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। দুটি কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়ে হয়েছে চারগুণ।

বীমা কোম্পানিগুলোর শেয়ারের এ দাম বৃদ্ধিকে ‘অস্বাভাবিক’ বলেও উল্লেখ করেছে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) কর্তৃপক্ষ। কিন্তু এরপরও থামেনি দাম বৃদ্ধির প্রবণতা। হঠাৎ করে শেয়ারের এমন ‘অস্বাভাবিক’ দাম বাড়ায় প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ বিভিন্ন কোম্পানির মোটা অংকের শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছেন।

প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের শেয়ার ধারণ নিয়ে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের হালনাগাদ তথ্য পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ফেব্রুয়ারি মাসে ২৭টি বীমা কোম্পানির বড় অংকের শেয়ার বিক্রি করে দিয়েছেন প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা। বিপরীতে ১৩টি বীমা কোম্পানির কিছু শেয়ার কিনেছেন প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা। সাতটি কোম্পানিতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের শেয়ার ধারণ অপরিবর্তিত রয়েছে।

দাম অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে ফাব্রুয়ারি মাসে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা সবচেয়ে বেশি বিক্রি করেছেন প্রাইম ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার। জানুয়ারিতে কোম্পানিটির ৩০ শতাংশ শেয়ার প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে ছিল। যা ফেব্রুয়ারি শেষে দাঁড়ায় মাত্র ৩ শতাংশে। অর্থাৎ এক মাসে কোম্পানিটির ২৭ শতাংশ শেয়ার বিক্রি করেছে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা।

এরপরই আছে কন্টিনেন্টাল ইন্স্যুরেন্স। কোম্পানিটির সাড়ে ১২ শতাংশের ওপরে শেয়ার বিক্রি করে দিয়েছেন প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা। জানুয়ারিতে কোম্পানিটির ৪২ দশমিক ৬৩ শতাংশ শেয়ার ছিল প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে। যা ফেব্রুয়ারি শেষে কমে দাঁড়িয়েছে ২৯ দশমিক ৯৩ শতাংশে।

ফেব্রুয়ারিতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের ১২ শতাংশের বেশি শেয়ার বিক্রির তালিকায় আরও রয়েছে গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্স। জানুয়ারিতে কোম্পানিটির ৩৩ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ শেয়ার ছিল প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে। যা ফেব্রুয়ারি শেষে কমে দাঁড়িয়েছে ২১ দশমিক ৮৯ শতাংশে।

এছাড়া প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের বড় অংকের শেয়ার বিক্রি করে দেয়া কোম্পানির তালিকায় রয়েছে- বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্স, সিটি জেনারেল ইন্স্যুরেন্স, ইষ্টল্যান্ড ইন্স্যুরেন্স, ফেডারেল ইন্স্যুরেন্স, জনতা ইন্স্যুরেন্স, মার্কেন্টাইল ইন্স্যুরেন্স ও প্রভাতী ইন্স্যুরেন্স।

এর মধ্যে ফেব্রুয়ারি শেষে মার্কেন্টাইলের ২৭ দশমিক ৮০ শতাংশ শেয়ার রয়েছে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে, যা জানুয়ারি শেষে ছিল ৩৭ দশমিক ৭৭ শতাংশ। প্রভাতী ইন্স্যুরেন্সের ২৩ দশমিক ৫০ শতাংশ শেয়ার রয়েছে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে, যা জানুয়ারিতে ছিল ৩১ দশমিক ৭৩ শতাংশ।

এছাড়া প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের শেয়ার সংখ্যা বাংলাদেশ ন্যাশনালে ১২ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ থেকে কমে ৭ দশমিক ৬০ শতাংশ, সিটি জেনারেলে ২৮ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ থেকে কমে ২২ দশমিক ৭৭ শতাংশ, ইষ্টল্যাল্ডে ৩১ দশমিক ৯০ শতাংশ থেকে কমে ২৪ দশমিক ৫৩ শতাংশ, ফেডারেলে ১০ দশমিক ৫৮ শতাংশ থেকে কমে ৫ দশমিক ৩০ শতাংশ এবং জনতায় ২০ দশমিক ২২ শতাংশ থেকে কমে ১১ দশমিক ৮৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।