দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: আইপিওর আগে ইস্যু করা সব শেয়ারে (প্লেসমেন্ট ও পরিচালক) তিন বছরের লক-ইন রেখে আইপিও আইন সংশোধন করতে যাচ্ছে বিএসইসি। পাশাপাশি পরিচালকদের শেয়ার বিক্রয়ে স্বচ্চতা আনতে উদ্যোক্তা/পরিচালকদের শেয়ার সেন্ট্রাল ডিপোজিটারী বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিডিবিএল) তৈরি করা নতুন মডিউলের মাধ্যমে ব্লক থাকবে। যা ইচ্ছে করলেই কোম্পানির উদ্যোক্তারা বিক্রয় করতে পারবে না। বিএসইসি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

জানা যায়, গত সোমবার বিএসইসি’র সাথে অনুষ্ঠিত বৈঠকে পুঁজিবাজারের স্টেকহোল্ডাররা পাবলিক ইস্যু রুলস ২০১৫-এর সংশোধনীর ওপর কমিশনের কাছে তাদের মতামত জমা দিয়েছেন। এ সময় স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে পাবলিক ইস্যু রুলসের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এম খায়রুল হোসেন।

একাধিক সূত্র জানিয়েছে, মার্চেন্ট ব্যাংকের পক্ষ থেকে প্লেসমেন্ট শেয়ারের লকইন ১ বছর করার কথা বলা হলেও বিএসইসি’র কমিশন বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে ৩ বছরে রাখার পক্ষে। তাদের পক্ষ থেকে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষার সর্বোচ্চ চেষ্ঠা করা হচ্ছে।

এছাড়াও ঘোষণা ছাড়া উদ্যোক্তাদের শেয়ার বিক্রয়, নাম মাত্র শেয়ার হাতে রেখে পর্ষদে খবরধারী করায় উদ্যোক্তা পরিচালকদের শেয়ার বিক্রয়ে স্বচ্চতা আনতে কাজ করছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা। এখন থেকে সিডিবিএলের নতুন মডিউলের মধ্যে উদ্যোক্তা পরিচালকদের শেয়ার ব্লক রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

সূত্র জানায়, ৪৬টি প্রতিষ্ঠানের উদ্যোক্তা পরিচালকদের নিকট নূন্যতম ৩০ শতাংশ শেয়ার নাই। এছাড়া অনেক পরিচালকের নিকট ২ শতাংশ শেয়ার নাই। তাদের নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শেয়ার কিনতে হবে। নতুবা পর্ষদ থেকে অপসরণ করার জন্য কঠোর ব্যবস্থা নিবে বিএসইসি।

জানা যায়, শুধু পূর্ব ঘোষণা এবং সংশ্নিষ্ট সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের পূর্বানুমোদন সাপেক্ষে মালিকপক্ষ অর্থাৎ কোম্পানির উদ্যোক্তা বা পরিচালকরা তাদের শেয়ার কেনাবেচা করতে পারবেন। শিগগির এ ব্যবস্থা কার্যকর হবে। ডিজিটাল ব্যবস্থায় তালিকাভুক্ত সব কোম্পানির শেয়ারের তথ্য সংরক্ষণকারী প্রতিষ্ঠান সিডিবিএল এ বিষয়ে ইতিমধ্যে প্রযুক্তিগত উন্নয়নের কাজ শেষ করেছে।

আইন অনুযায়ী, হিসাব বছর শেষ হওয়ার দুই মাস আগে থেকে নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্ষদ সভায় গৃহীত না হওয়া পর্যন্ত সংশ্নিষ্ট কোম্পানির উদ্যোক্তা-পরিচালকরা শেয়ার কেনাবেচা করতে পারেন না। তবে অন্য সময়ে আগাম ঘোষণা দিয়ে শেয়ার কেনাবেচা করতে পারেন তারা। কোম্পানির লাভ-লোকসান বা অপ্রকাশিত মূল্য সংবেদনশীল তথ্য ব্যবহার করে শেয়ার কেনাবেচার মাধ্যমে মুনাফা করা ঠেকাতেই মূলত এ বিধিনিষেধ।

উল্লেখ্য, লাগাতার দরপতনের প্রেক্ষাপটে গত ২৯ এপ্রিল পুঁজিবাজারের সব স্টেকহোল্ডারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করে বিএসইসি। সেখানে আইপিওসহ প্রাথমিক শেয়ারবাজার-সংক্রান্ত বিদ্যমান আইনের যেসব সংশোধনী আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল বিএসইসি, তা পূরণে ওই সময় দুটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংস্থাটি। যা পরবর্তীতে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।