দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: ধর্ষণ প্রতিরোধ চলমান আইন আরও কঠোর করার প্রয়োজন বলে মন্তব্য করে সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমাদের আইনটা আরও কঠোর করা দরকার এবং আরও কঠোরভাবে তাদের শাস্তি দেওয়া দরকার। কারণ এই ধরনের অসামাজিক কার্যকলাপ কখনো মেনে নেয়া যায় না। বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) বিকেলে একাদশ জাতীয় সংসদের তৃতীয় অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

শিশু ধর্ষণ ও নারী নির্যাতন নিয়ে বিরোধী দলীয় সংসদ উপনেতা রওশন এরশাদের বক্তব্যের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের কিছু সামাজিক অপরাধ প্রবণতা বেড়ে গেছে। শিশুদের ওপর পাশবিক অত্যাচার বা কথায় কথায় মানুষ খুন করা। ছোট শিশুদের খুন করা। একটা ঘটনা যখন হয় পত্রিকায় এটা নিউজ হয় তখন যেন এগুলো আরও বেশি বৃদ্ধি পায়।’

এ ব্যাপারে গণমাধ্যমের সঙ্গে জড়িত সকলের উদ্দেশে সংসদ নেতা বলেন, ‘আমাদের মিডিয়ায় যারা আছে তারা যেন এই ধর্ষকদের চেহারা বারবার দেখান। কারণ তাদের যেন একটা লজ্জা হয়।’

ধর্ষণ প্রবণতার মতো সামাজিক অপরাধ প্রতিরোধ প্রচলিত আইনের প্রয়োগ আরও কঠোর হওয়া উচিত বলে দাবি করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের আইনটা আরও কঠোর করা দরকার এবং আরও কঠোরভাবে তাদের শাস্তি দেয়া দরকার। কারণ এই ধরনের অসামাজিক কার্যকলাপ এটা কখনো মেনে নেয়া যায় না।

একইসঙ্গে পুরুষ সমাজের প্রতি আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘সেই সঙ্গে বলব, আমরা শুধু মেয়েরাই প্রতিবাদ করব কেন? এখানে পুরুষ সম্প্রদায় তাদের জন্য লজ্জার বিষয় যে, এই পুরুষরাই অপরাধটা করে যাচ্ছে। সে জন্য আমাদের পুরুষ সম্প্রদায়কেও আরও সোচ্চার হতে বলে মনে করি।’ আর এই ব্যাপারে সরকার যথাযথ ব্যবস্থা নেবে বলেও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

ডেঙ্গুর প্রকোপ বৃদ্ধি নিয়ে সংসদ নেতা বলেন, ‘ডেঙ্গুর প্রকোপটা একটু বেড়ে গেছে। তবে ডেঙ্গু মশা আবার একটু অ্যারোস্ট্রোকেট মশা হয়ে গেছে। বস্তি এলাকায় থাকে না। ময়লা পানিতে থাকে না। তারা ভদ্র জায়গা খোঁজে। এখানেই সমস্যা, ওষুধ দিলেও যায় না।’

তাই দেশবাসীকে নিজের ঘরবাড়ি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রেখে ডেঙ্গু মশা যাতে বংশ বৃদ্ধি করতে না পারে না সেদিকে দৃষ্টি দেওয়ার আহ্বান জানান। এ জন্য বাসাবাড়ির কোথায় পানি জমে আছে কি না, ফুলের টব, এয়ারকন্ডিশনসহ বিভিন্ন জিনিস পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে দৃষ্টি দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

ডেঙ্গুর হাত থেকে রক্ষা পেতে মশারি টাঙিয়ে ঘুমানোর আহ্বান জানানোর পাশাপাশি এই চিকিৎসায় যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে এবং চিকিৎসার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

‘আমাদের দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, আমরা দেশকে এগিয়ে নিতে যেতে চাই। আজকে বাংলাদেশ কৃষি প্রধান দেশ কিন্তু শিল্পায়নের দিকে যাচ্ছি। বাংলাদেশের যে অগ্রযাত্রা শুরু হয়েছে, এই অগ্রযাত্রা অব্যহত থাকবে এবং বাংলাদেশের উন্নয়নের পথে আমরা এগিয়ে যাব। দেশকে আরও সমৃদ্ধশালী করব’ বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘২০২০ সালে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী এবং ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করব এবং ২০৪১ সালের মধ্যে দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ সবথেকে উন্নত সমৃদ্ধ একটা দেশ হিসাবে গড়ে উঠবে।’

এছাড়াও ডেল্টা প্ল্যানসহ সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একটা মানুষও গৃহহারা থাকবে না। একটি মানুষও না খেয়ে মারা যাবে না। কেউ ভিক্ষা করবে না। প্রত্যেকের যা যা প্রয়োজন আমরা করে যাব। ভিক্ষুকমুক্ত দারিদ্র্যমুক্ত একটা উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলব। এটিই আমাদের লক্ষ্য।’