এম মনজুর তালুকদার, দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা:  পুঁজিবাজারে আজ সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে নতুন করে দরপতনে অজানা আতঙ্ক বিরাজ করছে বিনিয়োগকারীদের মাঝে। বর্তমান বাজার পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারীরা পুঁজি নিয়ে ফের দু:চিন্তায় রয়েছে বিনিয়োগকারীরা।

তাছাড়া পুঁজিবাজার স্থিতিশীলতার স্বার্থে সরকারের নানামুখী উদ্যোগের পরও ঘুরে দাঁড়াতে পারছে না। ফলে সকলের মাঝে বাজার পরিস্থিতি নিয়ে অজানা আতঙ্ক বিরাজ করছে।

তাছাড়া বর্তমান বাজারে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারের বিনিয়োগ অনুক‚ল পরিবেশ থাকলেও প্রায় প্রতিদিনই নিন্মমুখী হচ্ছে বাজার। সেই সঙ্গে প্রায় প্রতিদিনই কমছে বাজার মূলধন। বিষয়টি যেমন সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ভাবিয়ে তুলছে, ঠিক তেমনি বাজার সংশ্লিষ্টদের কাছে এর প্রকৃত কারণ অজানাই রয়ে গেছে।

আর এ কারনে লাখ লাখ বিনিয়োগকারী উৎকন্ঠায় দিন কাটাচ্ছেন। এ পরিস্থিতিতে বাজারের ভারসাম্য ধরে রাখতে ইনভেষ্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশসহ (আইসিবি) সহ সকল প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা নিস্ক্রিয় ভূমিকা পালন করছে।

পোর্টফলিও ম্যানেজারসহ বেশিরভাগ বিনিয়োগকারী বর্তমানে সাইডলাইনে থেকে বাজার পর্যবেক্ষণে বেশি ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। অতীত থেকে শিক্ষা নেয়া, বিনিয়োগকৃত অর্থের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা না পাওয়ায় নতুন করে বিনিয়োগে আসছেন না বেশিরভাগ বিনিয়োগকারী।

বিনিয়োগকারীদের প্রশ্ন পুঁজিবাজার দরপতনের শেষ কোথায়, আর কত প্রণোদণা দরকার। এ কথা এখন ২৮ লাখ বিনিয়োগকারীদের মুখে মুখে। দেশের পুঁজিবাজার কোন প্রণোদনাই মাথা তুলে দাঁড়াতেই পারছে না।

দরপতনে বিনিয়োগকারীদের মুল পুঁজি দিনের পর দিন নি:স্ব হতে চলছে। এমন অবস্থা চলছে যে পুঁজিবাজার অবিভাবকহীন। বিনিয়োগকারীদের প্রশ্ন আর কতদিন এ ভাবে চলবে। টানা দরতনের শেষ কোথায়। এ ভাবে চলতে থাকলে বাজার বিমুখ হয়ে পড়বে বিনিয়োগকারীরা।

আজ ব্রোকারেজ হাউজগুলো ঘুরে দেখা গেছে, বিনিয়োগকারীদের মাঝে দু:চিন্তা ভর করছে। বিশেষত হঠাৎ করে দুই ইস্যুতে পুঁজিবাজারে দরপতনে দেখা গেছে। এর মধ্যে বিআরটিসি ও গ্রামীনফোনের দরপতনের কারনে সূচকের দরপতন ঘটছে।

অন্যদিকে বিনিয়োগকারীরা দরপতনের ইস্যুতে মানবন্ধন করার কারনে বিনিয়োগকারীদের বিরুদ্ধে জিডি করায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। এই দুই ইস্যুতে দরপতনের কারন বলে বাজার বিশ্লেষকরা মনে করেন।

এদিকে সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচকের পতনে লেনদেন শেষ হয়েছে। এদিন লেনদেনের শুরুতে উত্থান থাকলেও ৩৫ মিনিট পর সেল প্রেসারে টানা নামতে থাকে সূচক। আজ লেনদেন শেষে সূচকের পাশাপাশি কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার দর। আর টাকার অংকেও লেনদেন আগের দিনের তুলনায় কিছুটা কমেছে। আজ দিন শেষে ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৪৫৬ কোটি ৭১ লাখ ৩৪ হাজার টাকা।

আজ দিন শেষে ডিএসইর ব্রড ইনডেক্স আগের দিনের চেয়ে ৩৮ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৫১৩৯ পয়েন্টে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৫ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১১৯২ পয়েন্টে এবং ডিএসই ৩০ সূচক ১১ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১৮১৭ পয়েন্টে। দিনভর লেনদেন হওয়া ৩৫০টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৫৯টির, কমেছে ২৬২টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৯টির।

আর দিন শেষে লেনদেন হয়েছে ৪৫৬ কোটি ৭১ লাখ ৩৪ হাজার টাকা। এর আগের কার্যদিবস দিন শেষে ডিএসইর ব্রড ইনডেক্স ১২ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করে ৫১৭৮ পয়েন্টে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করে ১১৯৮ পয়েন্টে এবং ডিএসই ৩০ সূচক ৯ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করে ১৮২৯ পয়েন্টে।

আর ওইদিন লেনদেন হয়েছিল ৪৬৭ কোটি ৭৫ লাখ ৫৭ হাজার টাকা। সে হিসেবে আজ ডিএসইতে লেনদেন কমেছে ১১ কোটি ৪ লাখ ২৩ হাজার টাকা। এদিকে গতকাল দিন শেষে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সাধারণ মূল্য সূচক সিএসইএক্স ৫৪ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৯ হাজার ৫৫৪ পয়েন্টে।