দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: পরিচালকদের ন্যূনতম ২ শতাংশ এবং সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণে ব্যর্থ সদস্যদের শূন্যপদ পূরণ হয়েছে কি না জানতে চেয়ে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোকে চিঠি দিয়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। কোম্পানিগুলোকে আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে এ-সংক্রান্ত চিঠির জবাব দিতে বলা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

বিএসইসি সূত্রে জানা যায়, যেসব কোম্পানির পরিচালকদের এককভাবে ২ শতাংশ এবং উদ্যোক্তা ও পরিচালকের সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ার নেই; তাদের শেয়ার ধারণের জন্য ৩০ কার্যদিবস সময় বেঁধে দেয়া হয়েছিল। ইতোমধ্যে সেই সময় পার হয়ে গেছে।

নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কোম্পানিগুলো তাদের ব্যর্থ পরিচালককে সরিয়ে নতুন পরিচালক অন্তর্ভুক্ত করেছে কি না-তা জানতে স্টক এক্সচেঞ্জ চিঠি দিয়েছে। কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে তথ্য পাওয়ার পর ডিএসই তা বিএসইসি-কে পাঠাবে। ডিএসই’র দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে বিএসইসি পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

সূত্র জানায়, গত ২১ মে বিএসইসি “সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিন্যান্স, ১৯৬৯”-এর ক্ষমতাবলে এ সংক্রান্ত নোটিফিকেশন সংশোধন করে প্রজ্ঞাপন জারি করে। এ সময় ৪৭টি কোম্পানির উদ্যোক্তা ও পরিচালকের শেয়ারধারণ ৩০ শতাংশের কম ছিল। ওই সময়ে ডিএসই’র ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে দেখা যায়, ব্যাংক খাতের দুইটি কোম্পানি নির্দেশনা পালনে ব্যর্থ এর মধ্যে আইএফআইসি ব্যাংক ৮.৩৩ শতাংশ, উত্তরা ব্যাংক ২০.৮৮ শতাংশ ধারন করেছেন।

এছাড়া খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের প্রতিষ্ঠান ফাইন ফুডস ১.০৯ শতাংশ, ইনটেক অনলাইন ৩.৯৭ শতাংশ, ফ্যামিলি টেক্সটাইল ৪.০২ শতাংশ, ইউনাইটেড এয়ার ৪.১৬ শতাংশ, ফুয়াং সিরামিকস ৫.৩৩ শতাংশ, ফুয়াং ফুড ৫.৩৬ শতাংশ, অগ্নি সিস্টেম ৯.৩৯ শতাংশ, সুহ্রদ ৯.০৯ শতাংশ, একটিভ ফাইন ১২.০৪ শতাংশ, বেক্সিমকো ফার্মা ১৩.১৯ শতাংশ, ফাস ফাইন্যান্স ১৩.০২ শতাংশ, জেনেক্স ১৩.৮২ শতাংশ,

বিজিআইসি ১৪.৮৯, নর্দান জুট ১৫.২৭ শতাংশ, আলহাজ্ব টেক্সটাইল ১৬.৮১ শতাংশ, মিঠুন নিটিং ১৭.০২ শতাংশ, ইস্টার্ন ক্যাবলস ১৭.৭৭ শতাংশ , পিপলস ইন্সুরেন্স ১৭.৮৯ শতাংশ, ডেল্টা স্পিনার্স ১৮ শতাংশ, মেঘনা লাইফ ১৮.০৭ শতাংশ, এপেক্স ট্যানারী ১৯.৪২ শতাংশ, বেক্সিমকো লিমিটেড ২০.১৫ শতাংশ, এপোলো ইস্পাত ২০.২৪ শতাংশ, অলিম্পিক এক্সেসরিজ ২০.৬৮ শতাংশ, দুলামিয়া কটন ২১.০৪ শতাংশ,

ইনফরমেশন সার্ভিস ২১.৬২ শতাংশ, সিএনএ টেক্সটাইল ২২.১৪ শতাংশ, সালভো ক্যামিকেল ২২.১৪ শতাংশ, বিডিকম ২৩.০১ শতাংশ, পিপলস লিজিং ২৩.২১ শতাংশ, জাহিন স্পিনিং ২৩.৯৪ শতাংশ, কে অ্যান্ড কিউ ২৪.০৬ শতাংশ, ফার্মা এইডস ২৪.২২ শতাংশ, সেন্ট্রাল ফার্মা ২৫.৮৯ শতাংশ, মেট্রো স্পিনিং ২৬.২৩ শতাংশ,

অলেম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ ২৭.৭৭ শতাংশ, বিডি থাই ২৮.২৩ শতাংশ, বে লিজিং ২৮.২৮ শতাংশ, ম্যাকসন স্পিনিং ২৮.৩৭ শতাংশ, আফতাব অটো ২৮.৪২ শতাংশ, এমারেল্ড অয়েল ২৮.৪২ শতাংশ, স্ট্যান্ডার্ড সিরামিকস ২৮.০৫ শতাংশ, পপুলার লাইফ ইন্সুরেন্স ২৮.৯২ শতাংশ, তাল্লু স্পিনিং ২৯.০৪ শতাংশ, কনফিডেন্ড সিমেন্ট ২৯.৮৮ শতাংশ।

এদিকে এসব ব্যর্থ কোম্পানির পরিচালকরা গত জুলাইয়ের দ্বিতীয় সপ্তাহে বিএসইসি’র প্রজ্ঞাপন পরিপালনে ২০২০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় চেয়ে চিঠি দিয়েছে। কারণ প্রজ্ঞাপনটি পরিপালনে কোম্পানির পরিচালকদের সময়ের প্রয়োজন বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।

বিএসইসি’র জারি করা প্রজ্ঞাপনে ব্যর্থ উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের ওপর আরোপ করা শর্তের মধ্যে ছিল স্বতন্ত্র পরিচালক বাদে সব উদ্যোক্তা ও পরিচালকের সম্মিলিতভাবে কোম্পানির পরিশোধিত মূলধনের ৩০ শতাংশ শেয়ারধারণ করবে।

এ শেয়ারধারণ না করলে কোম্পানির উদ্যোক্তা ও পরিচালকরা কোনো রকম শেয়ার বিক্রি, স্থানান্তর, হস্তান্তর, বন্ধক কার্যকর করতে পারবে না। তবে ঋণ খেলাপি ও মৃত্যুজনিত শেয়ার স্থানান্তরের বিষয়টি এর বাইরে থাকবে। এছাড়া ব্যর্থ কোম্পানি রাইট অফার, আরপিও, বোনাস শেয়ার, কোম্পানি অ্যামালগামেশনসহ কোনো প্রকারে মূলধন উত্তোলন করতে পারবে না।

পাশাপাশি উভয় স্টক এক্সচেঞ্জে ওই কোম্পানিগুলোকে নিয়ে একটি আলাদা ক্যাটাগরিতে স্থানান্তর করবে। যদি কোনো উদ্যোক্তা পরিচালক এককভাবে ২ শতাংশ শেয়ার ধরণে ব্যর্থ হয়; তবে কোম্পানির পরিচালকের ওই পদটি শূন্য হয়ে যাবে। এ ব্যর্থতার কারণে যে শূণ্য পদের সৃষ্টি হবে, তা ২ শতাংশ শেয়ার ধারণ করে; এমন শেয়ারহোল্ডারের মধ্য থেকে ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে পূরণ করতে হবে।