পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের উপযোগী পরিবেশ এখন, অথচ…
দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: করোনাজনিত মহামারির কারণে দীর্ঘ ৬৬ দিন পর পুঁজিবাজার খুললেও স্বস্তিতে নেই সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। কারণ পুঁজিবাজার সচল হলেও লেনদেন নেমে গেছে তলানিতে। ৫০ কোটি টাকার নিচেও লেনদেন হচ্ছে। পুঁজিবাজারে টানা কয়েক কার্যদিবস ধরে লেনদেন বাড়ছে না। বিশেষ করে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের নিরব আচরণে লেনদেন বাড়ছে না। নিয়ন্ত্রক সংস্থা পুঁজিবাজার নিয়ে একের পর এক পদক্ষেপ নিলেও সাইডলাইন আছে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রাইস আর্নিংস অনুযায়ী পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে সবচেয়ে উপযোগী পরিবেশ এখন। শেয়ার দাম কমে গেছে। তলানীতে থাকায় বাজার গতিশীল হলেও দাম বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবুও প্রাতিষ্ঠানিক কিংবা ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী নিরব ভূমিকায় অবর্তীর্ণ হয়েছে। বাজার পড়ে গেলেও হাতগুটিয়ে বসে আছে সবাই।
সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, পর্যাপ্ত ফান্ড নেই এই অজুহাতে নিষ্ক্রিয় প্রতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী। আর বড় বিনিয়োগকারী হিসাবে প্রাতিষ্ঠানিকরা সক্রিয় না হওয়ায় নিরাপদ অবস্থান খুঁজছে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী।
পুঁজিবাজারে সোনালী পেপার ২২ সুবিধায় তালিকাভুক্ত হচ্ছে
স্টক অ্যান্ড বন্ডের অভিজ্ঞ বিনিয়োগকারী কাজী হোসাইন আলী বলেন, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী শেয়ারের দর বাড়িয়ে বিক্রি করে দিয়ে এখন হাত গুটিয়ে বসে রয়েছেন। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের উপস্থিতি না থাকলে পুঁজিবাজার তার স্বাভাবিক গতি হারায়। যে কারণে কমে যায় লেনদেন। এখন যারা বাজারে লেনদেন করছেন তারা সাধারণ বিনিয়োগকারী। অথচ বর্তমান বাজার পরিস্থিতিতে এখন বিনিয়োগের উত্তম সময়।
বর্তমান বাজার পরিস্থিতি নিয়ে আলাপ করলে সাবেক তত্ত্ববধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, করোনাজনিত পরিস্থিতির জন্য বর্তমানে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি ভালো নয়। ভালো নেই অর্থনীতিও, যে কারণে মানুষ হাতে অর্থ রাখতে চাচ্ছে। তারা পুঁজিবাজারেও বিনিয়োগ করতে চাচ্ছে না। যে কারণে লেনদেন সন্তোষজনক হচ্ছে না। তবে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে লেনদেন বেড়ে যাবে। এখন বিনিয়োগকারীদের ধৈর্য্য ধরার সময়। আর প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের এখন শেয়ার কেনার উপযোগী সময় বলে মনে করেন তিনি। কারন তারা দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ করবে।
সিএসইর করমুক্ত লভ্যাংশের সীমা এক লাখ টাকা করার দাবি
পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগ ইস্যুতে হার্ডলাইনে বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসি
এদিকে সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস বৃহস্পতিবারও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মূল্য সূচকের সামান্য পতনে লেনদেন চলছে। আজ ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ শেয়ারের দর অপরিবর্তিত রয়েছে। এদিন বেলা ১১টা ৩০ মিনিটে ডিএসইতে ১৬ কোটি ১১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, ডিএসই প্রধান বা ডিএসইএক্স সূচক দশমিক ৭৬ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৩ হাজার ৯৬৫ পয়েন্টে। অন্য সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসইএস বা শরীয়াহ সূচক দশমিক ১৪ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৯১৯ পয়েন্টে এবং ডিএস৩০ সূচক দশমিক ১ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৩৩১ পয়েন্টে।
আজ ডিএসইতে ২০৯টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১৬টির, কমেছে ১৫টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৭৮টির। অপরদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই দশমিক ৫৩ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১১ হাজার ২৫৮ পয়েন্টে। সিএসইতে টাকার অংকে ১ কোটি ৫৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।