করোনা ভাইরাস নিয়ে সুখবর: মাস্কের সংস্পর্শে এলেই মারা যাবে
দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: করোনার দ্বিতীয় ঢেউ সামাল দিতে এই মুহূর্তে হিমশিম খেতে হচ্ছে সারা বিশ্বকে। এই ভাইরাসের হাত থেকে রক্ষা পেতে মাস্ক, পিপিই, সঠিকভাবে জীবাণুমুক্তকরণ ছাড়া কোনো উপায় নেই। এই অবস্থায় এমন এক মাস্ক তৈরি করেছেন একদল গবেষক যেটি শুধু ভাইরাসকে শরীরে প্রবেশই ঠেকাতে পারবে না, বরং মাস্কের উপর চলে আসা ভাইরাসটিকেও মেরে ফেলবে। সম্প্রতি ‘আমেরিকান কেমিক্যাল সোসাইটি- অ্যাপ্লায়েড মেটেরিয়ালস অ্যান্ড ইন্টারফেসেস’ সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে এই গবেষণা।
গবেষকরা জানিয়েছেন, মলিবডেনাম ডাইসালফাইড দিয়ে তৈরি হবে এই মাস্ক। এই বিশেষ উপাদান দিয়ে একটি চুলের থেকেও কয়েক গুণ পাতলা একটি আস্তরণ তৈরি করা হয়েছে। এটি মাস্কের উপরে লাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এই উপাদানটির রয়েছে অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল, অ্যান্টিভাইরাল গুণাগুণ। ১০০ থেকে ২০০ ন্যানোমিটারের কোনো ভাইরাস বা ব্যাক্টেরিয়া এই আস্তরণের উপর চলে এলে নিমেষে তার মৃত্যু ঘটবে। কোভিড ১৯ ভাইরাসটি ১২০ ন্যানোমিটারের। তাই এই উপাদানের সংস্পর্শে এলে কোভিড ১৯ ভাইরাসও মারা যাবে।
গবেষকরা জানিয়েছেন, মলিবডেনাম ডাইসালফাইডের ওই আস্তরণ জীবাণুনাশে দুই ভাবে কাজ করে। এর উপরিতল অত্যন্ত ধারালো। ইলেকট্রন অণুবীক্ষণ যন্ত্রের তলায় দেখলে মনে হবে ঠিক যেন অনেকগুলি ছুরি পর পর রাখা। কোভিড-১৯ বা কোনো জীবাণুর সংস্পর্শে এলেই তাদের কোষপর্দা ভেদ করে ভিতরে প্রবেশ করে ছুরির মতো ধারালো অংশগুলি। ফলে মারা যায় ভাইরাস-ব্যাক্টেরিয়া। সূর্যের আলোয় অত্যন্ত সক্রিয় হয়ে ওঠে মলিবডেনাম ডাইসালফাইড। কিছুক্ষণ সূর্যালোকে থাকলেই ৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত এর তাপমাত্রা হয়ে যায়, যা অনেক জীবাণুকেই বাঁচতে দেয় না।
করোনাভাইরাসকে মেরে ফেলার জন্য নিশ্চিন্ত হয়ে একাধিকবার ব্যবহার করা যেতে পারে এই মাস্ক। আবার সহজেই শুধুমাত্র রোদে ফেলে রেখে জীবাণুমুক্তও করে ফেলা যায়। বারবার সাবান-পানি দিয়ে ধুয়ে পরিষ্কার করলেও এর কার্যকারিতা হ্রাস পাবে না। পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে ৬০ বার সাবান জলে ধোওয়ার পরও একইভাবে জীবাণু ধ্বংস করতে পারছে এই মাস্ক।
মলিবডেনাম ডাইসালফাইড দিয়ে শুধু মাস্কই নয়, পিপিই-ও তৈরি করা সম্ভব বলে জানিয়েছেন গবেষকরা। গবেষকরা আরও জানিয়েছেন, এখনও তারা কোনো মাস্ক বা পিপিই উৎপাদনকারী সংস্থার সঙ্গে কথা বলেননি। আরো কিছু দিন গবেষণা চালাতে চান তারা। তারপরই বাণিজ্যিক উৎপাদনের জন্য এই ফর্মূলা বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে ভাগ করে নেবেন তারা। এর দাম আকাশছোঁয়া হবে না বলেও আশ্বাস দিয়েছেন গবেষকেরা। মধ্যবিত্ত মানুষের নাগালের মধ্যেই থাকবে দাম।