শাটডাউন নয়, হবে ‘কঠোর বিধিনিষেধ’: ফরহাদ হোসেন
দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার ঊর্ধ্বমুখী। এ অবস্থায় সংক্রমণের লাগাম টেনে ধরতে আবারও জনসাধারণের চলাচলের ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। শাটডাউন নয়, এটিকে ‘কঠোর বিধিনিষেধ’ হিসেবেই বাস্তবায়ন করা হবে। সোমবার থেকে এটি বাস্তবায়ন হবে। এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন শিগগিরই জারি হবে।
শুক্রবার (২৫ জুন) সন্ধ্যায় জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, ‘সরকারের পক্ষ থেকে অনেক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ঢাকার আশপাশের সাত জেলাসহ বিভিন্ন জায়গায় স্থানীয়ভাবে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। ঢাকা থেকে সড়ক, রেল ও নৌপথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এখন আরও কঠোর বিধিনিষেধ জারি করা হবে, এটি সারাদেশব্যাপী হবে। তাহলে হয়তো সংক্রমণের চেইনটা ভাঙা সম্ভব হবে।’
এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা হয়েছে বলেও জানান তিনি। ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী অনুমোদন দিলেই প্রজ্ঞাপন জারি হবে। আমরা অপেক্ষা করছি, দেখা যাক; আগামীকাল (শনিবার) যদি (প্রজ্ঞাপন জারি) সম্ভব হয়।’
সরকারের পক্ষ থেকে অনেক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ঢাকার আশপাশের সাত জেলাসহ বিভিন্ন জায়গায় স্থানীয়ভাবে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। ঢাকা থেকে সড়ক, রেল ও নৌপথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এখন আরও কঠোর বিধিনিষেধ জারি করা হবে, এটি সারাদেশব্যাপী হবে
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন তাহলে শনিবারের মধ্যেই প্রজ্ঞাপন জারি হচ্ছে? এ প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সে চেষ্টা আমাদের থাকবে।’
এর আগে বৃহস্পতিবার (২৪ জুন) কোভিড-১৯ কারিগরি পরামর্শক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ সহিদুল্লাহ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে সারাদেশে ১৪ দিনের ‘শাটডাউন’ এর সুপারিশ করা হয়। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘শাটডাউন’ নয়, এটি ‘বিধিনিষেধ’ হিসেবেই বাস্তবায়ন করা হবে। ‘যেটাই বলেন না কেন, এটি কঠোর বিধিনিষেধ। আমাদের দেশের প্রেক্ষাপট অনুযায়ী আমরা এটি বলতে পারি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা চাইব মানুষ ঘরে থাকুক। এটি সবাইকে মেনে নিতে হবে। সবাই যদি বাসায় থাকি, তাহলে সংক্রমণের চেইনটা ভেঙে যাবে এবং সেটাই আমাদের উদ্দেশ্য। যথেষ্ট পরিকল্পনা নিয়েই এটি আমরা বাস্তবায়ন করতে চাই, যাতে চলাচলের ওপর নিয়ন্ত্রণটা কার্যকর হয়।’
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে গত ৫ থেকে ১১ মে পর্যন্ত বিধিনিষেধ আরোপ করে সরকার। সেটি পরে ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানো হয়। এরপর ১৪ এপ্রিল থেকে শুরু হয় ‘কঠোর’ বিধিনিষেধ।
প্রধানমন্ত্রী অনুমোদন দিলেই প্রজ্ঞাপন জারি হবে। আমরা অপেক্ষা করছি, দেখা যাক; আগামীকালকে যদি (প্রজ্ঞাপন জারি) সম্ভব হয়। বিভিন্ন শর্ত আরোপ ও শিথিল করে কয়েকবার এ বিধিনিষেধের মেয়াদ বাড়ানো হয়। সর্বশেষ গত ১৬ জুন বিধিনিষেধের মেয়াদ প্রায় এক মাস বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
শুরুতে বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে সরকার কঠোর থাকলেও আস্তে আস্তে নমনীয় হতে দেখা যায়। এ কারণে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সরকারের দেওয়া নির্দেশনা এখন আর মানা হচ্ছে না। সেক্ষেত্রে কীভাবে নতুন করে বিধিনিষেধ বাস্তবায়ন করা হবে, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
এ বিষয়ে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বিধিনিষেধ না মানার প্রবণতার বিষয়গুলো আমাদের মাথায় আছে। সেগুলো নিয়ে আমরা চিন্তাভাবনা করছি।’
নতুন বিধিনিষেধে সরকারি-বেসরকারি সব অফিস ও দোকানপাট বন্ধ রাখার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি। তবে গার্মেন্টস ও কলকারখানা বন্ধ রাখা হবে কি না, সে বিষয়ে কিছু জানাতে পারেননি প্রতিমন্ত্রী। ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘এগুলো অতি গুরুত্বপূর্ণ। এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারব না। কারণ জরুরি কিছু বিষয় আছে। এ বিষয়গুলো নিয়ে প্রধানমন্ত্রী সিদ্ধান্ত দেবেন। তিনি যেভাবে অনুমোদন দেবেন বা যেভাবে নির্দেশনা দেবেন, সে অনুযায়ী আগামীকাল অথবা খুবই তাড়াতাড়ি প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।’
এদিকে, গত বৃহস্পতিবার (২৪ জুন) কোভিড-১৯ কারিগরি পরামর্শক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ সহিদুল্লাহ স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে সারাদেশে ১৪ দিনের ‘শাটডাউন’ দেওয়ার সুপারিশ করা হয়। এতে বলা হয়, দেশে কোভিড-১৯ রোগের ভারতীয় ডেল্টা ধরনের সামাজিক সংক্রমণ চিহ্নিত হয়েছে। ইতোমধ্যে এর প্রকোপ অনেক বেড়েছে। এ প্রজাতির জীবাণুর সংক্রমণ ক্ষমতা তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি। স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য বিশ্লেষণে সারাদেশেই উচ্চ সংক্রমণ, পঞ্চাশটির বেশি জেলায় অতি উচ্চ সংক্রমণ লক্ষ্য করা গেছে। এটি প্রতিরোধে খণ্ড খণ্ডভাবে নেওয়া কর্মসূচির উপযোগিতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে।
অন্যান্য দেশ, বিশেষত পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের অভিজ্ঞতা হলো, কঠোর ব্যবস্থা ছাড়া এর বিস্তৃতি প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়। ভারতের শীর্ষস্থানীয় বিশেষজ্ঞদের সঙ্গেও এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। তাদের মতামত অনুযায়ী, যেসব স্থানে পূর্ণ ‘শাটডাউন’ প্রয়োগ করা হয়েছে সেখানে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করা গেছে।
বর্তমান পরিস্থিতিতে রোগের বিস্তার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়া ঠেকাতে এবং জনগণের জীবনের ক্ষতি প্রতিরোধে কমিটি সর্বসম্মতিক্রমে সারাদেশে কমপক্ষে ১৪ দিন সম্পূর্ণ ‘শাটডাউন’ দেওয়ার সুপারিশ করছে। এতে বলা হয়, জরুরি সেবা ছাড়া যানবাহন, অফিস-আদালতসহ সবকিছু বন্ধ রাখা প্রয়োজন। এ ব্যবস্থা কঠোরভাবে পালন করতে না পারলে আমাদের যত প্রস্তুতিই থাকুক না কেন স্বাস্থ্য ব্যবস্থা অপ্রতুল হয়ে পড়বে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী কোভিড-১৯ এর ভ্যাকসিন সংগ্রহের জন্য সর্বাত্মক উদ্যোগ নিয়েছেন। এজন্য সভায় তাকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয়। এ রোগে থেকে পূর্ণ মুক্তির জন্য ৮০ শতাংশের বেশি মানুষকে ভ্যাকসিন দেওয়া প্রয়োজন। বিদেশ থেকে টিকা সংগ্রহ, লাইসেন্সের মাধ্যমে দেশে টিকা উৎপাদন করা এবং নিজস্ব টিকা তৈরির জন্য সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে গবেষণার জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রচেষ্টার প্রতি কমিটি পূর্ণ সমর্থন জানায়।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সাবেক উপাচার্য ও কোভিড–১৯ বিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, বিকল্প উপায় না থাকায় ঢাকার আশপাশের জেলাসহ সাত জেলায় লকডাউন দেওয়া হয়েছে। সারাদেশের সঙ্গে ঢাকার বাস, ট্রেন, লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। কিন্তু অন্য জেলা থেকে ঢাকায় বা ঢাকা থেকে অন্য জেলায় মানুষের চলাচল বন্ধ হয়নি। এতে মূল উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন হচ্ছে না। তবে খানিকটা ফল পাওয়া যাবে।
তিনি বলেন, সীমান্ত থেকে ঢাকামুখী সংক্রমণ ছড়াতে হয়তো সময় লাগছে। কিন্তু ঢাকায় সংক্রমণ বেশি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আসলে কার্যপ্রণালী সঠিক করতে হবে, না হলে সুফল পাওয়া যাবে না। প্রধানমন্ত্রী অনেক নির্দেশনা দেন, কিন্তু সেগুলো প্রতিপালন হয় না। কারণ, যারা বাস্তবায়ন করবেন তাদের মধ্যে ভাবনা, দায়িত্ববোধ ও জবাবদিহিতার অভাব রয়েছে।
জেলার মধ্যে গণপরিবহন চলাচল বন্ধ করতে হবে। বিকল্প গণপরিবহনও বন্ধ করতে হবে। রাজধানী ঢাকায় সংক্রমণ বাড়ছে বলে এখানেও গণপরিবহন বন্ধ করতে হবে। এটি বন্ধের পর মাস্ক ব্যবহারের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। সংক্রমিত ব্যক্তির আইসোলেশন নিশ্চিত করতে হবে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের পাবলিক হেলথ অ্যাডভাইজরি কমিটির সদস্য ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ আবু জামিল ফয়সাল বলেন, ‘এখন আমাদের খুব কঠিন অবস্থানে যেতে হবে। আন্তঃজেলা বাস চলাচল বন্ধ করা হয়েছে। কিন্তু যাত্রীদের চলাচল থেমে নেই। বিভিন্ন জেলা থেকে মানুষজন ঢাকায় আসছে। বিকল্প যানে এ চলাচল বন্ধ করতে হবে।’
তিনি বলেন, জেলার মধ্যে গণপরিবহন চলাচল বন্ধ করতে হবে। বিকল্প গণপরিবহনও বন্ধ করতে হবে। রাজধানী ঢাকায় সংক্রমণ বাড়ছে বলে এখানেও গণপরিবহন বন্ধ করতে হবে। এটি বন্ধের পর মাস্ক ব্যবহারের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। সংক্রমিত ব্যক্তির আইসোলেশন নিশ্চিত করতে হবে। তাহলে সংক্রমণের হার কমানো যেতে পারে।
আবু জামিল ফয়সাল বলেন, সন্ধ্যার পর রেস্তোরাঁ, শপিং মল, চায়ের দোকানসহ জনসমাগম হয় এমন প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ রাখতে হবে। দরকার হলে অফিস-আদালত সীমিতভাবে খোলা রাখা যায়। গণপরিবহনের শ্রমিকরা মাস্ক পরিধানসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি না মানলে পরিবহন মালিকদের জরিমানা করার দরকার ছিল। কিন্তু সেটা করা যায়নি।
সন্ধ্যার পর রেস্তোরাঁ, শপিং মল, চায়ের দোকানসহ জনসমাগম হয় এমন প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ রাখতে হবে। দরকার হলে অফিস-আদালত সীমিতভাবে খোলা রাখা যায়। গণপরিবহনের শ্রমিকরা মাস্ক পরিধানসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি না মানলে পরিবহন মালিকদের জরিমানা করার দরকার ছিল। কিন্তু সেটা করা যায়নি
‘করোনার বিস্তার রোধে পরীক্ষা, রোগী শনাক্ত, আইসোলেশন, কন্টামিনেশন ও কোয়ারেন্টাইন—এ পাঁচটি বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে। আমাদের এখানে এসব বিষয়ে যত গুরুত্ব দেওয়া হবে ট্রান্সমিশনের চেইন ভাঙা তত সহজ হবে’— বলেন এ জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ।
এদিকে, সাধারণের চলাচলের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ থাকলেও শুক্রবার মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাটে যাত্রীদের চাপ লক্ষ্য করা যায়। সকাল থেকেই এখানে যাত্রীদের ভিড় ছিল লক্ষণীয়। ফেরিতে চড়ে মাদারীপুরের বাংলাবাজার ঘাট থেকে যাত্রীরা এপারে আসছেন। তবে শিমুলিয়া ঘাট থেকেও কিছু যাত্রী ওপারে বাংলাবাজার ঘাটে যাচ্ছেন।
সরকার ঘোষিত লকডাউনে চলাচলের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌরুটের ফেরিতে যাত্রীরা পারাপার হচ্ছেন। শাটডাউন ঘোষণার আশঙ্কায় যাত্রীদের ভিড় বেড়ে গেছে। সড়কে চেকপোস্ট বসিয়েও আটকানো যাচ্ছে না যাত্রীদের।
বিআইডব্লিউটিসির শিমুলিয়া ঘাটের সহকারী ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) ফয়সাল আহমেদ জানান, শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌরুটে বর্তমানে ১৫টি ফেরি সচল রয়েছে। ঘাটে গাড়ির চাপ নেই। স্বাভাবিকভাবেই পণ্যবাহী ও সেবামূলক কাজে নিয়োজিত গাড়ি পারাপার হচ্ছে। লকডাউনের নিয়ম অনুযায়ী, শুধু পণ্যবাহী ও জরুরি যান পারাপারের কথা থাকলেও যাত্রীরা ঘাটে আসছেন। ফেরিতে গাড়ি ওঠানোর সময় তারা ফেরিতে উঠে পড়ছেন।
মাওয়া ট্রাফিক পুলিশের ইনচার্জ জাকির হোসেন বলেন, মাদারীপুরের কাঁঠালবাড়ি ঘাট থেকে ফেরি ভরে যাত্রীরা এপারে আসছেন। সকালে যাত্রী চাপ কম থাকলেও বিকেলে যাত্রীর চাপ বাড়ছে। শিমুলিয়া ঘাটের প্রবেশমুখে চেকপোস্ট রয়েছে। তবে এপার থেকে খুব কম সংখ্যাক যাত্রীই ওপারে যাচ্ছেন। মূলত শাটডাউন ঘোষণার আশঙ্কায় ঘাট এলাকায় মানুষের ভিড় বেড়েছে।
এদিকে, করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবার (২৫ জুন) দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মৃত্যু দেখল দেশ। এদিন স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও ১০৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এখন পর্যন্ত মোট মৃত্যু হয়েছে ১৩ হাজার ৯৭৬ জনের। একদিনে সর্বাধিক ২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে খুলনায়; ঢাকায় মারা গেছেন ২৫ জন।
২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনা আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন পাঁচ হাজার ৮৬৯ জন। মোট শনাক্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৮ লাখ ৭৮ হাজার ৮০৪ জনে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য বলছে, চলতি বছরের ১৯ এপ্রিল দেশে করোনায় সর্বাধিক ১১২ জনের মৃত্যু হয়েছিল। তার আগের দিন ১৮ এপ্রিল ১০২ জন মারা যান। এছাড়া ১৬, ১৭ ও ২৫ এপ্রিল ১০১ জন করে মারা যান।
করোনাভাইরাস সংক্রমণের অতি উচ্চ ঝুঁকিতে ৫৯ জেলা: সারাদেশে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস সংক্রমণের অবিশ্বাস্য ঊর্ধ্বগতি হয়েছে। দেশে মোট ৬৪ জেলার ৫৯টিই অতি উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে বলে জানিয়েছে সেন্টার ফর রিসার্চ, ইনোভেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অ্যাকশন (সিআরআইডিএ)। শনিবার (২৬ জুন) প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. শাহরিয়ার রোজেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সিআরআইডিএ জানিয়েছে, গত ১৪ থেকে ২০ জুনের সংক্রমণের তথ্য বিশ্লেষণ করে বাংলাদেশের ৪০টি জেলা অতি উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে বলে অভিমত দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। তবে ২০ জুনের পর সংক্রমণের মাত্রা আরও অনেক বেড়ে গেছে। সর্বশেষ তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে (১৮-২৪ জুন) দেখা যায় যে, দেশের ৫৯টি জেলা অতি উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে (সাপ্তাহিক শনাক্তের হার ১০ শতাংশের বেশি)।
এর মধ্যে ৩৯টি জেলায় সংক্রমণের হার ভয়াবহ পর্যায়ের (সাপ্তাহিক শনাক্তের হার ২০ শতাংশের বেশি)। প্রতিষ্ঠানটি জানায়, মাত্র ৭ দিনের ব্যবধানে মৃত্যুহার বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। জুনের ১৮ তারিখে দৈনিক মৃত্যু ছিল ৫৪, যা ৭ দিনের ব্যবধানে বেড়ে ১০৮ হয়েছে।
সংক্রমণ বাড়ার কারণ জানিয়ে বলা হয়, ভারতের ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের প্রভাবে বাংলাদেশে সংক্রমণ হঠাৎ করে বেড়ে গেছে। বিপদজনক ভ্যারিয়েন্টগুলোর মধ্যে ভারতের ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টটিই সবচেয়ে বেশি সংক্রামক। ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট অধিক সংক্রমণক্ষম যুক্তরাজ্যের ভ্যারিয়েন্ট থেকেও কমপক্ষে ৪০ শতাংশ বেশি সংক্রামক এবং হাসপাতালে ভর্তির ঝুঁকি দ্বিগুণ বাড়িয়ে দেয়।
এসব প্রসঙ্গে ডা. শাহরিয়ার রোজেন বলেন, ফাইজার এবং অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকার দুটি ডোজ ভারতীয় ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের বিপক্ষে কার্যকর। তবে বাংলাদেশে খুব অল্প মানুষ ভ্যাকসিনের আওতায় আসায় (৪ শতাংশের কম) অধিকাংশ মানুষ প্রচণ্ড ঝুঁকির মধ্যে আছে। সংক্রমণের হার যদি ক্রমাগত বাড়তে থাকে তাহলে আমাদের স্বাস্থ্যসেবার সক্ষমতা দিয়ে তা সামাল দেওয়া কঠিন হয়ে যাবে।
তিনি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে এখন আর কেবল সরকারের পক্ষ থেকে লকডাউন বা শাটডাউন দিয়ে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না, বরং সংক্রমণের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে আনতে জনসাধারণকে অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। মাস্ক পরা, হাত ধোয়া, জনসমাগম এড়ানো এবং সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতে হবে। এই সহজ কিন্তু বিজ্ঞানসম্মত উপায়গুলো শত বছর আগে স্প্যানিশ ফ্লু মহামারি নিয়ন্ত্রণে কার্যকর হয়েছিল এবং করোনার সব বিপদজনক ভ্যারিয়েন্টকে এসব স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার মাধ্যমে প্রতিরোধ করা সম্ভব।
বিশ্লেষণ ও লেখচিত্র প্রস্তুত করেছেন সেন্টার ফর রিসার্চ, ইনোভেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অ্যাকশনের এপিডেমিওলজি বিভাগের ডা. কেএম তৌহিদুর রহমান, ডা. আয়শা আকতার, ডা. শাহরিয়ার রোজেন, ডা. নওরিন আহমেদ, ডা. নাজিফ মাহবুব, ডা. মামুনূর রহমান। স্বাস্থ্য অধিদফতর এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মেথডোলজি ব্যবহার করে ৭ দিনের গড় শনাক্তের হারকে সূচক হিসেবে ব্যবহার করে তথ্যচিত্রটি প্রস্তুত করা হয়েছে।
এর আগে গত ২১ জুন বাংলাদেশের সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। ১৪ থেকে ২০ জুন এই এক সপ্তাহের নমুনা পরীক্ষা ও রোগী শনাক্তের হার বিবেচনায় তারা জানিয়েছিল, ৬৪টি জেলার মধ্যে ৪০টিই সংক্রমণের অতি উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে। এর বাইরে আরও ১৫টি জেলা আছে সংক্রমণের উচ্চ ঝুঁকিতে। সংক্রমণের মধ্যম ঝুঁকিতে আছে ৮টি জেলা। বান্দরবানে নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা কম হওয়ায় সেটি বিবেচনায় আনা হয়নি।
সপ্তাহজুড়ে ৬ কোম্পানির লভ্যাংশ ঘোষণা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ৬ কোম্পানি সপ্তাহজুড়ে লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। তবে এর মধ্যে ৫টি কোম্পানি লভ্যাংশ ঘোষণা করলেও প্রাইম লাইফ ইন্সুরেন্স নো ডিভিডেন্ড ঘোষণা করে। কোম্পানিগুলো হলো: ফনিক্স ফাইন্যান্স, পাইওনিয়ার ইন্সুরেন্স, পপুলার লাইফ ইন্সুরেন্স, রূপালী ব্যাংক, প্রাইম লাইফ ইন্সুরেন্স ও ঢাকা ডাইং লিমিটেড। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
ফনিক্স ফাইন্যান্স লিমিটেড : কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ১২ শতাংশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে। এর মধ্যে ৬ শতাংশ ক্যাশ এবং ৬ শতাংশ স্টক। সমাপ্ত অর্থবছরে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ১ টাকা ৩৬ পয়সা। আগের বছর ইপিএস ছিল ১ টাকা ৭৯ পয়সা।আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর কোম্পানিটির বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হবে। এর জন্য রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে ২৯ জুলাই।
পাইওনিয়ার ইন্সুরেন্স লিমিটেড : কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ৩০ শতাংশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে। এর মধ্যে ২০ শতাংশ ক্যাশ ও ১০ শতাংশ স্টক। সমাপ্ত অর্থবছরে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছে ৭ টাকা ৬১ পয়সা। আগের বছর কোম্পানিটির ইপিএস ছিল ৪ টাকা ৮৯ পয়সা।
আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি সম্পদ মূল্য হয়েছে ৪৯ টাকা ৭৫ টাকা। আগের বছর যা ছিল ৪৪ টাকা ৯ পয়সা। এ সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি ক্যাশ ফ্লো হয়েছে ৮১ পয়সা। আগের বছর যা ছিল ৫ টাকা ৪৮ পয়সা। আগামী ২৫ আগস্ট কোম্পানিটির বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হবে। এর জন্য রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে ১৮ জুলাই।
পপুলার লাইফ লিমিটেড : কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ৪০ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে। সমাপ্ত অর্থবছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৩ টাকা ৭৭ পয়সা। আগের বছর কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় ছিল ৩ টাকা ৮২ পয়সা।
আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ১০৮ টাকা ৯০ পয়সা। আগামী ২৪ আগষ্ট ব্যাংকের বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হবে। এর জন্য রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে ১৬ জুলাই।
রূপালী ব্যাংক লিমিটেড : কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ১০ শতাংশ স্টক ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে। সমাপ্ত অর্থবছরে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছে ৪৯ পয়সা। আগের বছর কোম্পানিটির ইপিএস ছিল ১ টাকা ৩৮ পয়সা। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি সম্পদ মূল্য হয়েছে ৪৪ টাকা ১০ টাকা। আগের বছর যা ছিল ৪১ টাকা ১৪ পয়সা।
এ সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি ক্যাশ ফ্লো হয়েছে ২০৬ টাকা ৫৩ পয়সা। আগের বছর যা ছিল ৭৫ টাকা ৩১ পয়সা (নেগেটিভ। আগামী ১৮ আগস্ট কোম্পানিটির বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হবে। এর জন্য রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে ১৪ জুলাই।
প্রাইম লাইফ ইন্সুরেন্স লিমিটেড : কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ‘নো ডিভিডেন্ড’ ঘোষণা করেছে। কোম্পানিটি সমাপ্ত অর্থবছরের আয় সম্পর্কিত কোন তথ্য ডিএসইতে প্রকাশ করেনি। আগামী ২৩ আগস্ট কোম্পানিটির বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হবে। এর জন্য রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে ১২ জুলাই।
ঢাকা ডাইং লিমিটেড : কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ১ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে। ৩০ জুন, ২০২০ অর্থবছরের জন্য এই ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে কোম্পানিটি। তবে কোম্পানিটি ২০১৯ ও ২০১৮ বছরের জন্য কোন ভিভিডেন্ড দেয়নি। সমাপ্ত অর্থবছরে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছে ১৩ পয়সা। আগের বছর কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি লোকসান ছিল ৪ টাকা ২৫ পয়সা।
আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি সম্পদ মূল্য হয়েছে ৮ টাকা ৩৬ টাকা। আগের বছর যা ছিল ৮ টাকা ২১ পয়সা। এ সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি ক্যাশ ফ্লো হয়েছে ১ টাকা ৮৭ পয়সা। আগের বছর যা ছিল ১ টাকা ২ পয়সা। আগামী ৩০ জুলাই কোম্পানিটির বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হবে। এর জন্য রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে ১২ জুলাই।
রিংশাইন টেক্সটাইলের ১৬১ কোটি টাকার জাল শেয়ার: প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার আগের বছর ঢাকা ইপিজেডের কোম্পানি রিং শাইন টেক্সটাইলের সাবেক চেয়ারম্যান এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ ৯ উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের সবাই ব্যাপক শেয়ার জালিয়াতি করেন বলে এক তদন্ত প্রতিবেদনে প্রমাণ পাওয়া গেছে।
কোম্পানিটির উদ্যোক্তারা কোম্পানিটির অ্যাকাউন্টে কোনো টাকা জমা না দিয়েই ১৬১ কোটি টাকার শেয়ার নিয়েছেন। যদিও প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের প্রসপেক্টাসে টাকার বিপরীতে এই শেয়ার ইস্যু করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
২০১৯ সালে আইপিও প্রক্রিয়ায় শেয়ার বিক্রি করতে যে প্রসপেক্টাস প্রকাশ করা হয়েছিল, তাতে এ কোম্পানির ৯ উদ্যোক্তা-পরিচালক নিজেদের সিংঙ্গাপুর, হংকং, তাইওয়ান এবং ইন্দোনেশিয়ার নাগরিক বলে পরিচয় দিয়েছিলেন। তালিকাভুক্তির বছরই এদের অধিকাংশই দেশ ছেড়ে চলে যান। এরপর কোম্পানিটির উৎপাদন দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল।
পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসিতে নতুন নেতৃত্ব আসার পর তারা রুগ্ন ও বন্ধ কোম্পানিগুলোতে স্বতন্ত্র পরিচালক ও চেয়ারম্যান নিয়োগ দিয়ে পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করার উদ্যোগ নেয়। এ উদ্যোগের অংশ হিসেবে গত জানুয়ারিতে সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি মেজবাহ উদ্দিনকে চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেয়। এরপর কোম্পানির প্রকৃত অবস্থা জানতে বিশেষ অডিট ও তদন্ত কার্যক্রম পরিচালন করে। ওই তদন্তেই রিং শাইনের শেয়ার জালিয়াতির প্রমাণ মিলেছে।
জানা গেছে, শেয়ার বিক্রি করে বাংলাদেশ থেকে টাকা হাতিয়ে নিতে কোম্পানির অ্যাকাউন্টে কোনো টাকা না দিয়েই ১৬১ কোটি টাকার মূল্যের ১৬ কোটি ১০ লাখ শেয়ার নিজেদের নামে নিয়েছিলেন তারা। আইপিওতে আসার দুই বছর আগে ২০১৭ সালে ৯ বিদেশি উদ্যোক্তার নামে ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের মাত্র ৩১ লাখ শেয়ার ছিল। যার প্রকৃত মূল্য ছিল ৩ কোটি ১০ লাখ টাকা।
আইপিওতে আসার আগের বছর অর্থাৎ ২০১৮ সালেই এই ৯ পরিচালক আরও ১৩ কোটি ৪১ লাখ ৩৪ হাজার ২২০টি শেয়ার নতুন করে নগদ টাকায় নিয়েছেন বলে আইপিও প্রসপেক্টাসে তথ্য দেন।
কিন্তু কমিশনের তদন্তে দেখা গেছে, তারা প্রকৃতপক্ষে এ শেয়ার কিনতে কোনো টাকাই কোম্পানির অ্যাকাউন্টে জমা দেননি। এমনকি তালিকাভুক্তির পর উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের শেয়ার তিন বছরের লকইন (শেয়ার বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা) থাকায় নির্বিঘ্নে কোনো প্রকার ঘোষণা ছাড়াই শেয়ার বিক্রি করে টাকা তুলে নিতে নিজেদের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট দুটি প্রতিষ্ঠান ইউনির্ভাসাল নিটিং এবং লার্ক টেক্সটাইলের নামেও ২৪ কোটি টাকায় শেয়ার নেন। এক্ষেত্রেও কোনো টাকা পরিশোধ হয়নি। শুধু উদ্যোক্তা ও পরিচালক এবং তাদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট দুই প্রতিষ্ঠানই নয়, এর বাইরে অন্তত ৩৩ বাংলাদেশি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানও টাকা ছাড়া প্রাইভেট প্লেসমেন্টে শেয়ার নিয়েছেন।
গত বুধবার বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ৭৭৯তম কমিশন সভায় রিং শাইন টেক্সটাইলসের তদন্ত প্রতিবেদনের উপাত্ত পর্যবেক্ষণ ও মূল্যায়নের জন্য উপস্থাপন করা হয়। কমিশন বৈঠকে, সাধারণ বিনিয়োগকারী ও পুঁজিবাজারে সার্বিক উন্নয়নের স্বার্থে কমিশন তদন্ত প্রতিবেদনের কিছু বিষয় সবার জন্য প্রকাশের সিদ্ধান্ত নেয়।
বিএসইসি জানিয়েছে, বিনা টাকায় যারা জালিয়াতি করে শেয়ার নিয়েছেন, তাদের সব শেয়ারই বাতিল করা হবে। পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা জানান, শেয়ার বাতিল হলে কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন উল্লেখযোগ্য পরিমাণ কমবে। একই সঙ্গে এই শেয়ারের বিপরীতে পাওয়া মূলধন হালাল করতে ভুয়া সম্পদ মূল্য দেখানো হয়েছে।
শেয়ার বাতিল হলে ওই সম্পদের হিসাবও বাতিল হবে। তাতে কোম্পানির সম্পদ মূল্যও (এনএভি) কমে যাবে।আইপিওতে আসার আগের বছরে ৭৩ বাংলাদেশি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে ১১৪ কোটি টাকার প্রাইভেট প্লেসমেন্টে শেয়ার বিক্রি দেখিয়েছে কোম্পানিটি।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিএসইসি জানিয়েছে, আইপিওতে আসার আগের বছর কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন ৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা থেকে বেড়ে ২৮৫ কোটি ০৫ লাখ টাকায় উন্নীত হয়। এর মধ্যে সকল উদ্যোক্তা এবং ৩৩ বাংলাদেশি টাকা ছাড়াই জালিয়াতি করে শেয়ার নিয়েছেন। তবে তার মোট পরিমাণ কত, তা জানায়নি সংস্থাটি।
বিএসইসি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানায়, ২০১৮ সালে প্রাইভেট প্লেসমেন্ট প্রক্রিয়ায় শেয়ার বিক্রি দেখিয়ে ২৭৫ কোটি ০৫ লাখ টাকার মূলধন বাড়ায়। এক্ষেত্রে ১১ উদ্যোক্তা-পরিচালক (প্রকৃতপক্ষে ৯ উদ্যোক্তা এবং স্বার্থ সংশ্লিষ্ট দুই প্রতিষ্ঠান) এবং ৭৩ বাংলাদেশি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে প্রাইভেট প্লেসমেন্ট প্রক্রিয়ায় শেয়ার বিক্রি দেখানো হয়।
শেয়ার জালিয়াতির এ তথ্য গত ২০ মে প্রথম প্রকাশ করেছিল বিএসইসি। ওইদিনও সংস্থাটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছিল, কমিশন সভায় আইপিও পূর্ব শেয়ারের মধ্যে টাকা ছাড়াই যতগুলো শেয়ার ইস্যু করা হয়েছিল, তার সবটাই বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
আইপিওতে আসার আগের বছরে ৭৩ বাংলাদেশি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে ১১৪ কোটি টাকার প্রাইভেট প্লেসমেন্টে শেয়ার বিক্রি দেখানো হয়েছে। কমিশন জানিয়েছে, এর মধ্যে ৩৩ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানই জালিয়াতি করে শেয়ার নিয়েছেন। আইপিওর আগে রিং শাইন টেক্সটাইলের পরিশোধিত মূলধন ছিল ২৮৫ কোটি ৫ লাখ টাকা। এর মধ্যে উদ্যোক্তা ও পরিচালক এবং স্বার্থ সংশ্লিষ্ট দুই প্রতিষ্ঠানের অংশ ছিল ১৭১ কোটি টাকা।
আইপিও প্রক্রিয়ায় ১৫০ কোটি টাকার মূলধন সংগ্রহ করে তালিকাভুক্ত হলে এ কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন বেড়ে দাঁড়ায় ৪৩৫ কোটি টাকা। তালিকাভুক্তির পর ১৫ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ দিলে তা বেড়ে ৫০০ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
রিং শাইনের আইপিও প্রসপেক্টাস পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ২০১৭ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত কোম্পানিটির চেয়ারম্যান সুং জে মিন, এমডি সুং ওয়ে মিনসহ ৯ উদ্যোক্তার শেয়ারমূল্য ছিল অভিহিতমূল্যে ৩ কোটি ১০ লাখ টাকা। আইপিওতে আসার আগের বছর যা বেড়ে ১৩৭ কোটি ২৩ লাখ টাকা ছাড়ায়। অর্থাৎ ১৩৪ কোটি টাকার শেয়ারই জালিয়াতি করে নিয়েছেন।
এ জালিয়াতির কারণে ২০১৭ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত আর্থিক প্রতিবেদনে কোম্পানিটির প্রকৃত অবস্থার প্রতিফলন হয়নি। প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিয়েছে বিএসইসি। শেয়ার জালিয়াতির এ ঘটনায় সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং ও পুঁজিবাজার আইনে ব্যবস্থা নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে বিএসইসি জানায়।
কমিশন সূত্র জানায়, আইপিও প্রসপেক্টাসে দেওয়া নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনের নিরীক্ষক প্রতিষ্ঠান মাফেল হক অ্যান্ড কোং এর দায় খতিয়ে দেখা হবে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেন, ইস্যু ম্যানেজার ও অডিটর প্রতিষ্ঠানের এ বিষয়টি অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে পরীক্ষা করা দরকার ছিল। কিন্তু তারা তাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করেনি। করলে এ জালিয়াতি হতে পারতো না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শীর্ষ এক মার্চেন্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, এ ধরনের জালিয়াতি সংশ্লিষ্ট ইস্যু ম্যানেজার ও নিরীক্ষক প্রতিষ্ঠানের যোগসাজসেই হয়ে থাকে। অনেক ক্ষেত্রে ইস্যু ম্যানেজার ও অডিটরই আইপিওতে আসতে আগ্রহী কোম্পানির উদ্যোক্তাদের এমন জালিয়াতির পথ দেখিয়ে দেন। জালিয়াতি করে নেওয়া শেয়ারের একটা অংশ নানাজনের কাছে বিক্রি করেন। বাকিটা বেনামে (ভুয়া নামে) ভাগাভাগি করে নেন এবং পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হলে উচ্চমূল্যে বিক্রি করে শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নেন বলে জানান ওই মার্চেন্ট ব্যাংকার।
তিনি আরও জানান, গত ১০ বছরে আইপিও প্রক্রিয়ায় পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া ১০০ কোম্পানির মধ্যে অর্ধেকেরও বেশিক্ষেত্রে এ জালিয়াতি হয়েছে। কমিশন তদন্ত করলে এর প্রমাণ মিলবে বলেও জানান তিনি।
বিএসইসির মুখপাত্র রেজাউল করিম বলেন, বর্তমান কমিশন দায়িত্ব গ্রহণের পর পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করে বন্ধ কোম্পানিগুলোকে সচল করার উদ্যোগ নেয়। এরই অংশ হিসেবে স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ দিয়ে পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করেছে। এরপর কোম্পানিটির প্রকৃত অবস্থা জানতে বিশেষ অডিটের উদ্যোগ নেয় এবং তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করে। ওই বিশেষ অডিট ও তদন্তে রিং শাইন টেক্সটাইলে এই জালিয়াতির প্রমাণ পাওয়া যায়।
তিনি আরও বলেন, কমিশনের চেষ্টায় এরই মধ্যে রিং শাইন টেক্সটাইল কোম্পানিটি উৎপাদনে ফিরেছে। কোম্পানিটির শেয়ারদরে অস্বাভাবিক দরবৃদ্ধির ধারা পর্যবেক্ষণ করছে কমিশন। অনেক সাধারণ বিনিয়োগকারী কোম্পানিটির প্রকৃত অবস্থা না বুঝেই শেয়ার কিনছেন। তাদের কোম্পানিটির বিষয়ে ধারণা দিতে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে বলেও জানান তিনি।
সপ্তাহজুড়ে রিটার্নে এগিয়ে বস্ত্র খাত- ব্যাংক ও মিউচ্যুয়াল ফান্ড: পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত ২০টি খাতের মধ্যে সপ্তাহ জুড়ে রিটার্ন বেড়েছে ১০টি খাতের। অন্যদিকে রিটার্ন কমেছে ১০টি খাতের। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি রিটার্ন বেড়েছে বস্ত্র খাতের কোম্পানিগুলোর। তারপরেই রয়েছে ব্যাংক খাত। এরপরে রয়েছে মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাত। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। সপ্তাহ জুড়ে বস্ত্র খাতের রিটার্ন বেড়েছে ১০.৯০ শতাংশ। ব্যাংক খাতে রিটার্ন বেড়েছে চার শতাংশ। মিউচ্যুয়াল ফান্ড রিটার্ন বেড়েছে ২.৮০ শতাংশ।
এছাড়াও সপ্তাহটিতে চামড়া খাতের রিটার্ন বেড়েছে ২.১০ শতাংশ। ঔষধ এবং রসায়ন খাতের রিটার্ন বেড়েছে ১.৩০ শতাংশ। আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের রিটার্ন বেড়েছে ১.৩০ শতাংশ। খাদ্য এবং আনুষাঙ্গিক খাতের রিটার্ন বেড়েছে ১.১০ শতাংশ। পেপার অ্যান্ড প্রিন্টিং খাতের রিটার্ন বেড়েছে ০.৭০ শতাংশ। টেলিকমিনিউকেশন খাতের রিটার্ন বেড়েছে ০.৪০ শতাংশ এবং পাট খাতের রিটার্ন বেড়েছে ০.৩০ শতাংশ।
অন্যদিকে রিটার্ন কমা ১০ খাতের মধ্যে ভ্রমণ এবং সেবা খাতের রিটার্ন কমেছে ০.২০ শতাংশ। আইটি খাতের রিটার্ন কমেছে ০.৩০ শতাংশ। সিরামিক খাতের রিটার্ন কমেছে ১.০০ শতাংশ। সিমেন্ট খাতের রিটার্ন কমেছে ১.০০ শতাংশ। প্রকৌশল খাতের রিটার্ন কমেছে ১.১০ শতাংশ। বিদুৎ এবঙ জ্বালানি খাতের রিটার্ন কমেছে ১.১০ শতাংশ। বিবিধ খাতের রিটার্ন কমেছে ২.৪০ শতাংশ। সেবা ও আবাসন খাতের রিটার্ন কমেছে ২.৬০ শতাংশ। জীবন বিমা খাতের রিটার্ন কমেছে ৬.২০ শতাংশ এবং সাধারণ বিমা খাতের রিটার্ন কমেছে ৭.৭০ শতাংশ।
সাপ্তাহিক খাতের লেনদেন: বিদায়ী সপ্তাহে সবচেযে বেশি লেনদেন হয়েছে বস্ত্র খাতে। সপ্তাহটিতে এই খাতে লেনদেন হয়েছে মোট লেনদেনের ২০.৬০ শতাংশ। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে সাধারণ বিমা খাত। এই খাতটি লেনদেন করেছে মোট লেনদেনের ১৪.১০ শতাংশ। বিবিধ খাত তৃতীয় স্থান দখল করে আছে। এই খাতটিতে লেনদেন হয়েছে মোট লেনদেনের ১২ শতাংশ।
এছাড়াও, প্রকৌশল খাতে লেনদেন হয়েছে ১০.১০ শতাংশ, ব্যাংক খাতে লেনদেন হয়েছে ৮.৮০ শতাংশ, ঔষধ এবং রসায়ন খাতে লেনদেন হয়েছে ৮.৬০ শতাংশ, বিদ্যুৎ এবং জ্বালানি খাতে লেনদেন হয়েছে ৫.১০ শতাংশ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতে লেনদেন হয়েছে চার শতাংশ, খাদ্য এবং আনুষাঙ্গিক খাতে লেনদেন হয়েছে ২.৪০ শতাংশ, জীবন বিমা খাতে লেনদেন হয়েছে ২.৩০ শতাংশ, মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাতে লেনদেন হয়েছে ২.৩০ শতাংশ, সিমেন্ট খাতে লেনদেন হয়েছে ১.৮০ শতাংশ, চামড়া খাতে লেনদেন হয়েছে ১.৭০ শতাংশ, টেলিকমিনিউকেশন খাতে লেনদেন হয়েছে ১.৫০ শতাংশ, আইটি খাতে লেনদেন হয়েছে ১.৩০ শতাংশ, সেবা ও আবাসন খাতে লেনদেন হয়েছে ১.৩০ শতাংশ, সিরামিক খাতে খাতে লেনদেন হয়েছে ১.১০ শতাংশ, ভ্যমণ খাতে লেনদেন হয়েছে ০.৭০ শতাংশ, পেপার অ্যান্ড প্রিন্টিং খাতে লেনদেন হয়েছে ০.৪০ শতাংশ এবং পাট খাতে লেনদেন হয়েছে ০.১০ শতাংশ।
এদিকে সপ্তাহের ব্যবধানে দেশের দুই পুঁজিবাজারে লেনদেনের সঙ্গে সবগুলো সূচকের পাশাপাশি বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দর। আলোচ্য সময়ে দেশের উভয় পুঁজিবাজারে কমেছে লেনদেনের পরিমান। সপ্তাহটিতে দেশের দুই পুঁজিবাজারে বেড়েছে বাজার মূলধন। সপ্তাহটিতে ডিএসইতে লেনদেন কমেছে ২.৮০ শতাংশ।
সপ্তাহিক পুঁজিবাজারে লেনদেন: বিদায়ী সপ্তাহে পাঁচ কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মোট লেনদেন হয়েছে নয় হাজার ৫২৪ কোটি ২৯ লাখ ১৮ হাজার ৮১৭ টাকার লেনদেন হয়েছে। যা আগের সপ্তাহ থেকে ২৭৪ কোটি ৩৮ লাখ ৭৯ হাজার ৪৩৮ টাকা বা ২.৮০ শতাংশ কম হয়েছে। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল নয় হাজার ৭৯৮ কোটি ৬৭ লাখ ৯৮ হাজার ২৫৫ টাকার।
ডিএসইতে বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে গড় লেনদেন হয়েছে এক হাজার ৯০৪ কোটি ৮৫ লাখ ৮৩ হাজার ৭৬৩ টাকার। আগের সপ্তাহে গড় লেনদেন হয়েছিল এক হাজার ৯৫৯ কোটি ৭৩ লাখ ৫৯ হাজার ৬৫১ টাকার। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে গড় লেনদেন কমেছে ৫৪ কোটি ৮৭ লাখ ৭৫ হাজার ৮৮৮ টাকা বা ২.৮০ শতাংশ।
সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৪০ পয়েন্ট বা ০.৬৬ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৯২ পয়েন্টে। অপর সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ সূচক ১০ পয়েন্ট বা ০.৮৫ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়ে এক হাজার ৩০১ পয়েন্টে এবং ডিএসই-৩০ সূচক দুই পয়েন্ট বা ০.১১ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে দুই হাজার ১৯৯ পয়েন্টে।
বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে মোট ৩৭৯টি প্রতিষ্ঠান শেয়ার ও ইউনিট লেনদেনে অংশ নিয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ২২৪টির, কমেছে ১৪০টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১১টির কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দর।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বিদায়ী সপ্তাহে টাকার পরিমাণে লেনদেন হয়েছে ৫৬০ কোটি ৮৭ লাখ ৬২ হাজার ৮৮৯ টাকার। আর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ৪৪৪ কোটি ৮৪ লাখ ০৮ হাজার ২৩২ টাকার।। সপ্তাহের ব্যবধানে সিএসইতে লেনদেন বেড়েছে ১১৬ কোটি টাকার বেশি।
সপ্তাহটিতে সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৮৭ পয়েন্ট বা ০.৪৯ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭ হাজার ৬৫৭ পয়েন্টে। সিএসইর অপর সূচকগুলোর মধ্যে সিএসসিএক্স ৪৬ পয়েন্ট বা ০.৪৩ শতাংশ বেড়ে অবস্থান করছে ১০ হাজার ৬২২ পয়েন্টে। সিএসই-৩০ সূচক দুই পয়েন্ট বা ০.০১ শতাংশ বেড়ে অবস্থান করছে ১৩ হাজার ১০৬ পয়েন্টে। সিএসই-৫০ সূচক চার পয়েন্ট বা ০.৩৪ শতাংশ বেড়ে অবস্থান করছে এক হাজার ২৮১ পয়েন্টে এবং সিএসআই আট পয়েন্ট বা ০.৭৬ শতাংশ বেড়ে অবস্থান করছে এক হাজার ৮৩ পয়েন্টে।
সপ্তাহজুড়ে সিএসইতে ৩৩৭টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেনে অংশ নিয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ১৯২টির দর বেড়েছে, ১৩৫টির কমেছে এবং ১০টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
এছাড়াও, সপ্তাহ জুড়ে দশের দুই পুঁজিবাজারের মূলধন বেড়েছে তিন হাজার কোটি টাকার বেশি। এর মধ্যে ডিএসইর মূলধন বড়েছে দুই হাজার ৫০৩ কোটি ৯৩ লাখ ৭১ হাজার ২৮৪ টাকা। সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে লেনদেন শুরুর আগে ডিএসইতে বাজার মূলধন ছিল ৫ লাখ আট হাজার ১৩৪ কোটি ৮২ লাখ ৪৭ হাজার ১০১ টাকা। আর সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস লেনদেন শেষে বাজার মূলধন দাঁড়ায় ৫ লাখ ১০ হাজার ৬৩৮ কোটি ৭৬ লাখ ১৮ হাজার ৩৮৫ টাকায়। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে বাজার মূলধন কমেছে দুই হাজার ৫০৩ কোটি ৯৩ লাখ ৭১ হাজার ২৮৪ টাকা।
জানা গেছে, সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে লেনদেন শুরুর আগে সিএসইতে বাজার মূলধন ছিল চার লাখ ৩৫ হাজার ৭৯ কোটি ৮৪ লাখ ২০ হাজার টাকা। আর সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস লেনদেন শেষে বাজার মূলধন দাঁড়ায় চার লাখ ৩৫ হাজার ৬৬৯ কোটি ৮৮ লাখ ৫০ হাজার টাকায়। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে সিএসইতে বাজার মূলধন বেড়েছে ৫৯০ কোটি চার লাখ ৩০ হাজার টাকা।
সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে পিই রেশিও: বিদায়ী সপ্তাহে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সার্বিক মূল্য আয় (পিই রেশিও) কিছুটা বেড়েছে। ইবিএল সিকিউরিটিজ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
জানা গেছে, গত সপ্তাহের শুরুতে ডিএসইর পিই ছিল ১৮.২৪ পয়েন্টে। যা সপ্তাহ শেষেও ১৮.৩৫ পয়েন্টে অবস্থান করছে। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে পিই রেশিও বেড়েছে ০.১১ পয়েন্ট বা ০.৬০ শতাংশ। সপ্তাহ শেষে ব্যাংক খাতের পিই রেশিও অবস্থান করছে ৮.১০ পয়েন্টে।
তথ্যপ্রযুক্তি খাতের ২৫.৩০ পয়েন্টে, বস্ত্র খাতের ২৩.৭০ পয়েন্টে, ওষুধ ও রসায়ন খাতের ১৮ পয়েন্টে, প্রকৌশল খাতের ২১.২০ পয়েন্টে, সাধারণ বিমা খাতের ২৩.৬০ পয়েন্টে, বিবিধ খাতের ২২.৩০ পয়েন্টে, খাদ্য খাতের ২১ পয়েন্টে, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের ১১.৬০ শতাংশ, চামড়া খাতের ৭৬ পয়েন্টে, সিমেন্ট খাতের ১৩ পয়েন্টে।
এছাড়াও, আর্থিক খাতের ২৪.১০ পয়েন্টে, ভ্রমণ ও অবকাশ খাতের ৭৮.৯০ পয়েন্টে, পেপার খাতের ৪৪.৩০ পয়েন্টে, টেলিযোগাযোগ খাতের ১৮.৭০ পয়েন্টে, সেবা ও আবাসন খাতের ২১.৯০ পয়েন্টে, সিরামিক খাতের ২৬.৯০ পয়েন্টে এবং পাট খাতের পিই ৭১৯.৮০ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
সপ্তাহের ব্যবধানে পুঁজি ফিরল আড়াই হাজার কোটি টাকা: তিন দিন সূচকের উত্থান আর দুদিন দরপতনের মধ্য দিয়ে জুনের আরও একটি সপ্তাহ পার করল দেশের পুঁজিবাজার। আলোচিত সপ্তাহে সূচকের পাশাপাশি বেড়েছে বেশির ভাগ কোম্পানির দাম। এ কারণে বিদায়ী সপ্তাহে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বিনিয়োগকারীদের বাজার মূলধন বেড়েছে আড়াই হাজার কোটি টাকা।
করোনার প্রকোপ বৃদ্ধি ও কালো টাকা সাদা করার সুবিধা নিয়ে চলা নানা গুজবে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এ অতঙ্কে অনেক বিনিয়োগকারী শেয়ার বিক্রি শুরু করেন গত বুধবার। তবে বাজার সংশ্লিষ্টদের মতে, সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার (২৪ জুন) সেই আতঙ্ক ও হতাশা অনেকটাই কেটে গেছে বিনিয়োগকারীদের।
ডিএসইর তথ্য মতে, বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে মোট পাঁচ কার্যদিবসে ৯ হাজার ৫২৪ কোটি ২৯ লাখ ১৮ হাজার ৮১৭ টাকা লেনদেন হয়েছে ; যা আগের সপ্তাহের চেয়ে পৌনে ৩০০ কোটি টাকা কম, শতাংশের হিসেবে ২ দশমিক ৮০ শতাংশ কম। আগের সপ্তাহের পাঁচ কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৯ হাজার ৭৯৮ কোটি ৬৭ লাখ ৯৮ হাজার ২৫৫ টাকা।
বিদায়ী সপ্তাহে লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছে ২২৪টির, কমেছে ১৪০টির আর অপরিবর্তিত রয়েছে ১১টি কোম্পানির শেয়ার দাম। এর আগের সপ্তাহে লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছিল ১৪৮টির, কমেছিল ২১০টির, অপরিবর্তিত ছিল ১৭ কোম্পানির শেয়ার দাম। এতে ডিএসইর প্রধান সূচক আগের সপ্তাহের চেয়ে ৪০ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ৯২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসইএস শরীয়াহ সূচক আগের সপ্তাহের চেয়ে ১০ দশমিক ৯৩ পয়েন্ট এবং ডিএস-৩০ সূচক ২ পয়েন্ট বেড়েছে।
বেশিরভাগ শেয়ারের দাম ও প্রধান সূচক বাড়ায় ডিএসইতে বিদায়ী সপ্তাহে বিনিয়োগকারীদের পুঁজি বা বাজার মূলধন ২ হাজার ৫০৩ কোটি ৯৩ লাখ ৭১ হাজার ৮৪ টাকা বেড়ে ৫ লাখ ১০ হাজার ৬৩৮ কোটির ৭৬ লাখ ১৮ হাজার ৩৮৫ টাকায় দাঁড়িয়েছে। এর আগের সপ্তাহে যা ছিল ৫ লাখ ৮ হাজার ১৩৪ কোটির ৮২ লাখ ৪৭ হাজার ১০১ টাকা।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দাম বাড়ার শীর্ষে ছিল : মালেক স্পিনিং, খান ব্রাদার্স,কাট্টালী টেক্সটাইল, সালভো কেমিক্যালে ইন্ডান্ট্রিজ, অলিম্পিক এক্সেসোরিজ, দেশবন্ধু পলিমার, ইউনিক হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টস, প্রাইম টেক্সটাইল স্পিনিং মিলস এবং এনভয় টেক্সটাইল লিমিটেড।
লেনদেনের শীর্ষে থাকা কোম্পানিগুলো হচ্ছে : বেক্সিমকো লিমিটেড, পাইওনিয়ার ইনস্যুরেন্স, ন্যাশনাল ফিড মিলস, ম্যাক্সনস স্পিনিং মিলস, মালেক স্পিনিং মিলস, অরিয়ন ফার্মা লিমিটেড,কাট্টালী টেক্সটাইল, ফরচুন সুজ, ড্রাগন সোয়েটার অ্যান্ড স্পিনিং মিলস এবং কুইন সাউথ টেক্সটাইল মিলস লিমিটেড।
দেশের অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বিদায়ী সপ্তাহে লেনদেন হয়েছে ৫৬০ কোটি ৮৭ লাখ ৬২ হাজার ৮৮৯ টাকা। এর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ৪৪৪ কোটি ৮৪ লাখ ৮২ হাজার ২৩২ টাকা। অর্থাৎ আগের সপ্তাহের চেয়ে লেনদেন কমেছে।
লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছে ১৯২টির, কমেছে ১৩৫টির আর অপরিবর্তিত রয়েছে ১০টি কোম্পানির শেয়ারের দাম। এতে সিএসইর প্রধান সূচক ৮৭ পয়েন্ট বেড়ে ১৭ হাজার ৬৫৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে রূপালী ব্যাংকের চেয়ারম্যানের শ্রদ্ধা: পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত রূপালী ব্যাংকে সদ্য যোগদানকৃত চেয়ারম্যান কাজী ছানাউল হক সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন। আজ বৃহস্পতিবার ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে এই শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বঙ্গবন্ধুর বিদেহী আত্মার প্রতি মাগফিরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এন্ড সিইও মো. ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ, উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক খন্দকার আতাউর রহমান ও মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর, মহাব্যবস্থাপক মো. শওকত আলী খান, রূপালী ব্যাংক এক্সিকিউটিভ ফোরাম, রূপালী ব্যাংক কর্মচারী ইউনিয়ন (সিবিএ), স্বাধীনতা ব্যাংকার্স পরিষদ ও বঙ্গবন্ধু পরিষদের নেতৃবৃন্দসহ ব্যাংকের উর্ধতন কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
বিশ্ব রেফ্রিজারেশন দিবসের স্পন্সর ওয়ালটন: বিশ্বব্যাপী অনুষ্ঠিতব্য ‘বিশ্ব রেফ্রিজারেশন দিবসের’ ইভেন্টে স্পন্সর হিসেবে থাকছে বাংলাদেশের ইলেকট্রিক্যাল এবং ইলেকট্রনিক্স পণ্য উৎপাদন ও বিপণন প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘কুলিং চ্যাম্পিয়ন্স: কুল ক্যারিয়ার ফর অ্যা বেটার ওয়ার্ল্ড’। দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশি সুপারব্র্যান্ড ওয়ালটন ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। শনিবার (২৬ জুন) পালিত হবে দিবসটি।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের এপ্রিলে সারা বিশ্বের ব্যবসায়িক সংগঠন এবং উদ্যেক্তারা ২৬ জুন বিশ্ব রেফ্রিজারেশন দিবস হিসেবে পালনের বিষয়ে একমত হয়। ইনস্টিটিউট অব রেফ্রিজারেশন এর প্রেসিডেন্ট স্টিফেন গিল এই ধারণার প্রবর্তন করেন। এক দশক ধরে তিনি রেফ্রিজারেশন দিবস পালনের উদ্যেগ নিয়ে কাজ করছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় প্রতি বছর ২৬ জুন দিবসটি পালনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। জাতিসংঘের পরিবেশ বিষয়ক সংস্থা (ইউএনইপি)’র ওজোন অ্যাকশন বিভাগ দিবসটি পালনে সমর্থন দিয়েছে।
ওয়ালটন কম্প্রেসরের সিইও রবিউল আলম বলেন, রেফ্রিজারেশন দিবসের এই ইভেন্টে আগামি এক বছরের জন্য স্পন্সর হয়েছে ওয়ালটন। এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত আনন্দের। বিশ্ব রেফ্রিজারেশন দিবসটি পালনে সপ্তাহব্যাপী নানা কর্মসূচির উদ্যোগ নিয়েছে ওয়ালটন। কর্মসূচির অংশ হিসেবে ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডে র্যালি আয়োজন করা হবে। সন্ধ্যা ৭টায় থাকবে লাইভ ওয়েবিনার পর্ব। এতে বক্তারা আধুনিক বিশ্বের জন্য রেফ্রিজারেশন-এর ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করবেন। থাকছে পরিবেশবান্ধব রেফ্রিজারেন্ট ব্যবহার এবং বিদুৎ সাশ্রয়ী বিশ্ব সেরা রেফ্রিজারেশন পণ্য তৈরির দৃঢ় প্রত্যয়।
ওয়ালটন ফ্রিজের সিইও আনিসুর রহমান মল্লিক বলেন, রেফ্রিজারেশন দিবস উদযাপনের এই বিশ্ব ইভেন্টের স্পন্সর হতে পেরে গর্বিত ওয়ালটন পরিবার। ইভেন্ট আয়োজকদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি। এরকম বিশ্ব ইভেন্টের সঙ্গে ওয়ালটন থাকবে সবসময়। ওয়ালটন রেফ্রিজারেশন পণ্য উৎপাদন ও বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠান। এসব পণ্যে পরিবেশের ক্ষতিকর দিক নিয়ে গবেষণা করছে ওয়ালটন। সবুজায়নের পৃথিবী গড়তে ওয়ালটন সহযোগি ভূমিকা পালন করছে। এজন্য পরিবেশবান্ধব আর-৬০০এ রেফ্রিজারেন্ট ব্যবহৃত হচ্ছে পণ্য উৎপাদনে। যা ওজোন স্তরের ক্ষতি করে না।
জানা গেছে, ওয়ালটনের ভেরিফায়েড ফেসবুকে পেজের মাধ্যমে অনুষ্ঠিতব্য লাইভ ওয়েবিনারে প্যানেল আলোচক হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) এর মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার বিভাগের অধ্যাপক ড. জহুরুল হক, জিয়াক্সিপেরা কম্প্রেসর কোম্পানি লিমিটেডের টেকনিক্যাল সাপোর্ট ম্যানেজার লি চেনচাও, ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি) এর ফেলো প্রকৌশলী হাসমতুজ্জামান, ইন্টারন্যাশনাল বেভারেজ প্রাইভেট লিমিটেডের সিনিয়র ম্যানেজার আবু হান্নান, ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড-এর চিফ টেকনিক্যাল অফিসার আন মগ ইয়াং, ওয়ালটন ফ্রিজের আরএন্ডডি বিভাগের প্রধান তাপস কুমার মজুমদার।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করবেন ওয়ালটন রেফ্রিজারেটর বিভাগের এক্সপোর্ট কো-অরডিনেটর আব্দুর রউফ। বাংলাদেশে একমাত্র ওয়ালটন ফ্রিজই পেয়েছে বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস এন্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউট (বিএসটিআই)’র সর্বোচ্চ রেটিং ‘ফাইভ স্টার এনার্জি রেটিং’। বিএসটিআই কর্তৃক নির্ধারিত মানদ- ‘বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস ১৮৫০:২০১২’ অনুসরণ করে উচ্চ গুণগতমানের বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী ফ্রিজ তৈরি করায় মিলেছে এই সনদ। উৎপাদন ব্যবস্থায় পরিবেশ সুরক্ষার বিষয়টিতে ব্যাপক জোর দেওয়া হচ্ছে। পরিবেশ সুরক্ষায় অবদান রাখায় ২০১৮ সালে ওয়ালটন অর্জন করে জাতীয় পরিবেশ পদক।