লিওনেল মেসির প্রতি ফিফার শ্রদ্ধা
দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: অনেক আগেই সর্বকালের সেরা ফুটবলারের একজন হয়েছেন লিওনেল মেসি। অর্জনে ভরপুর ফুটবল ক্যারিয়ার। ছিল একটা অপ্রাপ্তি-অপূর্ণতা। কাতার বিশ্বকাপ জিতে সেটা ঘুচালেন আর্জেন্টাইন অধিনায়ক। রোববারের ফাইনালে আগের আসরের শিরোপা জয়ী ফ্রান্সকে টাইব্রেকে হারিয়ে ৩৬ বছর পর বিশ্বকাপ জয় করে আর্জেন্টিনা।
আসরের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৭ গোল আর ৩ অ্যাসিস্টে জিতেছেন বিশ্বকাপের সেরা ফুটবলারের পুরস্কার গোল্ডেন বল। একই সঙ্গে ভেঙেছেন বেশ কিছু রেকর্ড। পরিসংখ্যান, রেকর্ড, সেরা মুহূর্তগুলো তুলে ধরে মেসির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছে বিশ্ব ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা।
দিয়েগো ম্যারাডোনা এবং লিওনেল মেসি উভয়েই জাতীয় দলের জার্সিতে হাঙ্গেরির বিপক্ষে আন্তর্জাতিক ফুটবলের অভিষেক হয়। ১৯৭৭ সালে ৬২ মিনিটে বদলি হিসেবে নেমেছিলেন ১৬ বছর বয়সী ম্যারাডোনা। আর ২০০৫ সালে মেসি বদলি হিসেবে নামেন ৬৩ মিনিটে। কিন্তু দুই মিনিট পরই লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন ১৮ বছর বয়সী মেসি।
৭৬ মিনিটে সার্বিয়া অ্যান্ড মন্টেনেগ্রোরে বিপক্ষে ২০০৬ জার্মানি বিশ্বকাপে অভিষেক হয় মেসি। তিন মিনিটের মধ্য ক্রেসপোকে দিয়ে গোল করার তিনি। আর ১০ মিনিট পর বিশ্বকাপে নিজের প্রথম গোল করেন মেসি। সে ম্যাচে ৬-০ গোলে জেতে আর্জেন্টিনা।
বিশ্বকাপের ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ গোলদাতা: ১৮ বছর ৩৫৮ দিন বয়সে গোল করে বিশ্বকাপে সর্বকনিষ্ঠ গোলদাতার তালিকার ৬ নম্বরে নাম ওঠেন মেসি। তার চেয়ে আগে আছেন ব্রাজিলের পেলে, মেক্সিকোর ম্যানুয়েল রোসাস, ইংল্যান্ডের মাইকেল ওয়েন, রোমানিয়ার নিকোলাই কোভাকস এবং রাশিয়া দিমিত্রি সাইচেভ।
মেসি যখন আর্জেন্টিনার হয়ে প্রথম গোল করেন…
** ২০০৬ সালে ১ মার্চ ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ ম্যাচে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে জাতীয় ** দলের জার্সিতে মেসির প্রথম গোল করেন মেসি।
** তখনও টুইটার এবং আইফোন আসেনি। শুধু উত্তর আমেরিকার ছাত্ররা ফেসবুক ব্যবহার করতে পারত।
** তখনও টিভির পর্দায় আসেনি দ্য বিগ ব্যাঙ থিওরি, আগলি বেটি, ডেক্সটার ও কিপিং আপ উইথ দা কার্দাশিয়ান।
** তখনও নোভাক জোকোভিচ এটিপির শিরোপা জেতেনি এবং এই সার্বিয়ানের র্যা্ঙ্কিং ছিল ৬৩তম।
** টোকিও ২০২০ অলিম্পিকে মেয়েদের স্ট্রিট স্কেটিংয়ে সোনা ও রুপা জিতে নেওয়া মোমিজি নিশিয়া ও রায়সা লিলের জন্মও হয়নি।
সেরা পাঁচটি দুর্দান্ত গোল: মেক্সিকো: ২০০৭ কোপা আমেরিকা, এই গোলে ফাইনালে উঠে আর্জেন্টিনা
ব্রাজিল: ২০১২ আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচ, দুর্দান্ত হ্যাটট্রিকে ৪-৩ গোলের জয় পায় আর্জেন্টিনা। বছরের সেরা গোলের পুরস্কার পুসকাস অ্যাওয়ার্ডের জন মনোনিত হন মেসি।
ইরান: ২০১৪ ব্রাজিল বিশ্বকাপ, ইনজুরি টাইমে বাঁ পায়ের দুর্দান্ত শটে জয় পায় আর্জেন্টিনা
নাইজেরিয়া: ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপ, মেসির অসাধারণ গোলে ২-১ ব্যবধানে জয় পায় আর্জেন্টিনা
দীর্ঘ অপেক্ষার পর: ফিফা অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপ আর অলিম্পিক ফুটবলের স্বর্ণ জেতেন মেসি। তবে জাতীয় দলের জার্সিতে প্রথম আন্তর্জাতিক ট্রফির জন্য মেসিকে অপেক্ষা করতে ১৬ বছর। চারটি ফাইনালে (২০১৪ বিশ্বকাপ, ২০০৭, ২০১৫, ২০১৬ কোপা আমেরিকা) হারের পর ২০২১ সালের জুলাইয়ে কোপা আমেরিকা জয়ের মধ্য দিয়ে ১৬ বছরের প্রতীক্ষার অবসান হয় মেসির।
পরিসংখ্যান: ব্রাজিলের কিংবদন্তি পেলের ৫৯ বছরের পুরনো ৩২ গোলের রেকর্ড ভাঙেন মেসি। আন্তর্জাতিক ফুটবলে দক্ষিণ আমেরিকার ফুটবলারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি গোলের রেকর্ড এখন মেসির।
এক বছরে আর্জেন্টিনার জার্সিতে সবচেয়ে বেশি গোল: লিওনেল মেসি- ১৮ গোল, ১৪ ম্যাচ, ২০২২. লিওনেল মেসি- ১২ গোল, ৯ ম্যাচ, ২০১২ গাব্রিয়েল বাতিস্তুতা- ১২ গোল, ১২ ম্যাচ, ১৯৯৮. আন্তোনিও অ্যাঞ্জেলিশো – ১০ গোল, ৯ ম্যাচ, ১৯৫৭. সার্জিও আগুয়েরো- ১০ গোল, ১০ ম্যাচ, ২০১৫