সুলতান মনসুর কী আওয়ামী লীগে ফিরছেন, চলছে গুঞ্জন!

দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: আওয়ামী লীগে ফিরছেন একাদশ সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে মৌলভীবাজার-২ আসন থেকে জয়ী ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী সুলতান মো. মনসুর আহমেদ। যেকোন দিন তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে ‘ঘরে ফেরা’র ঘোষণা দিতে পারেন। এ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে নানা গুঞ্জন। রাজনৈতিক বোদ্ধারা বলেছেন, ঘরের ছেলে ঘরে ফিরে আসবেন এটাই স্বাভাবিক।
উল্লেখ্য যে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গণফোরাম থেকে ধানের শীষ প্রতীকে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। কিন্তু নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট সংসদে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেও ঐক্যফ্রন্ট ফ্রন্টের সাবেক এই সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নিয়েছেন এবং এখনও তিনি সংসদ সদস্য হিসেবে বহাল রয়েছেন।
দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে একাদশ সংসদের সদস্য হিসেবে শপথ নেওয়ায় সুলতান মোহাম্মদ মনসুরকে বহিষ্কার করে গণফোরাম। গত সোমবার সংসদে তিনি বিএনপির কঠোর সমালোচনা করে বক্তব্য রাখেন। তার ওই বক্তব্যের পর রাজনৈতিক অঙ্গনে গুঞ্জন উঠেছে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে শিগগিরই তিনি আওয়ামী লীগে ফিরবেন।
সোমবার সংসদে বিএনপি নেতৃত্বের সমালোচনা করে সুলতান মনসুর বলেন, মেরামত শব্দটি সাধারণত পরিবারের সঙ্গে ঘর মেতামত বোঝায়। তারা কী সেই মেরামত করতে চায়? ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের মতো ঘটনা ঘটিয়ে। তারা কি সেই মেরামত করতে চান খুনি জিয়া যেমনিভাবে পাকিস্তানের দালাল জাতিসংঘে মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে সেরকম পরিবর্তন ব্যবস্থা করতে চান? জিয়ার দুঃশাসনে যে কারফিউর গণতন্ত্র, তারা কি সেই স্বৈরতন্ত্র করতে চান? তাদের কথা শুনলে মনে হয় ওই দিকেই যাচ্ছেন।
তিনি আরও বলেন, এক দল, দুই দল, ৫৪ দল বিভিন্ন দল করছে, আজকের সংসদে দাঁড়িয়ে এ কথা বলতে পারি পাকিস্তানের আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী দাউদ ইব্রাহীমের সঙ্গে বৈঠক করে যারা বাংলাদেশের রাজনীতির পরিবর্তন চান, সেই পাকিস্তানি ধারার রাজনীতি আর এ দেশে আসার সুযোগ নাই।
যারা এই ধারার রাজনীতি করেন তাদের শুধু বলব জীবনে কোনোদিন বিএনপির নেতৃত্বে বাংলাদেশ কোনো আন্দোলনে কোনো বিজয় তারা ছিনিয়ে আনতে পারে নাই।
ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে তারা খুনি জিয়ার মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করেছিল। কিন্তু আন্দোলন সংগ্রাম করে মানুষের মন নিয়ে মানুষের মাধ্যমে এদেশে আন্দোলনের সফলতা তারা কোনোদিন আনতে পারে নাই আগামীতেও আনার কোনো সুযোগ থাকবে না।
অর্থাৎ তার বক্তব্যে এটি সুষ্পষ্ট যে, তিনি এখন বিএনপির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। আর যেহেতু গণফোরাম থেকে তিনি বহিস্কৃত এবং গণফোরাম বিএনপির সাথে যুগপৎ আন্দোলন করছে সেজন্য সেখানেও ফেরার কোনো সম্ভবনা নেই। এখন দেখা বিষয় তিনি আওয়ামী লীগে ফিরছেন কিনা।
উল্লেখ্য যে, সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ একসময় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পাওয়ার পরপরই তিনি আওয়ামী লীগের ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন এবং আওয়ামী বিরোধী হিসেবে কাজ শুরু করেন।