দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: নানা জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটে অবশেষে পুঁজিবাজারে ব্যাংকগুলোর বন্ড বিনিয়োগের ১৮ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ আসছে। পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগ সীমায় বন্ডে বিনিয়োগকে অন্তর্ভূক্ত করা হবে না বলে ব্যাংক কোম্পানি (সংশোধন) আইন ২০২৩ এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এতে করে ব্যাংকগুলোর পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের সক্ষমতা বাড়ার সুযোগ তৈরী হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) মন্ত্রিসভা কমিটির এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সূত্রমতে, এই এক্সপোজারের হিসাব গণনার নীতি পরিবর্তনের ফলে ব্যাংকগুলোর বন্ডে বিনিয়োগের ১৮ হাজার কোটি টাকা সরাসরি পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ আসবে। একই সঙ্গে বর্তমানে ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগসীমা গণনা করা হয় ক্রয়মূল্য অথবা বাজারমূল্যের মধ্যে যেটি বেশি, সেটি ধরে। এই পদ্ধতিতে গণনা করা ব্যাংকের দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বাধা হিসেবে দেখা হয়। ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগসীমা বাজারমূল্যের বদলে ক্রয়মূল্যের ভিত্তিতে নির্ধারণের ফলে পুঁজিবাজারে ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগ আরও বাড়বে।

মন্ত্রীসভায় অনুমোদিত খসড়া বিলে, বিনিয়োগ সীমায় প্রত্যেক ব্যাংক-কোম্পানি এমনভাবে বিনিয়োগ পোর্টফোলিও সাজানোর কথা বলা হয়েছে, যেখানে কর্পোরেট বন্ড ও ডিবেঞ্চারকে বাদ দেওয়া হয়েছে। ওই বিনিয়োগ সীমার মধ্যে সব ধরনের শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ড থাকবে। এছাড়া ব্যাংকের বিনিয়োগকে বাজারমূল্যের পরিবর্তে ক্রয়মূল্যে বিবেচনায় নিতে খসড়া বিল অনুমোদন করা হয়েছে।

যা বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিশেষ নির্দেশনায় পরিপালন করা হচ্ছে। বন্ডকে এই বিনিয়োগ সীমার বাহিরে রাখার মাধ্যমে ব্যাংকগুলোর পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করার সক্ষমতা বাড়বে। যা পুঁজিবাজারে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।

জানা যায়, ব্যক্তি বিনিয়োগকারীর বাইরে সরকারের বিল ও বন্ডে সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ করেছে প্রাইমারি ডিলার ব্যাংকগুলো, যা প্রায় দেড় লাখ কোটি টাকা। এরপরই সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ করেছে প্রাইমারি ডিলার নয় এমন বেসরকারি ব্যাংকগুলো। ট্রেজারি বন্ডে এসব ব্যাংকের বিনিয়োগ রয়েছে এক লাখ তিন হাজার ৭৭৮ কোটি টাকা। এছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংক বিনিয়োগ করেছে ২৫ হাজার ৯৬ কোটি টাকা।

এছাড়া আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো বিনিয়োগ করেছে এক হাজার ১৮১ কোটি টাকা, আমানত বিমা ট্রাস্টের রয়েছে ১০ হাজার ৬৪২ কোটি টাকা, সাধারণ বিমা কোম্পানিগুলোর ৩০২ কোটি টাকা, জীবনবিমা কোম্পানিগুলোর ১৮ হাজার ৬৬৬ কোটি টাকা এবং বিভিন্ন করপোরেট প্রতিষ্ঠানের এক হাজার ৮৫ কোটি টাকা। প্রভিডেন্ট, পেনশন ও গ্র্যাচুইটি ফান্ডের আট হাজার ৭২৬ কোটি টাকা, মিউচুয়াল ফান্ডের ২৫১ কোটি টাকা এবং বিভিন্ন বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠানের ২৭ কোটি টাকার বিনিয়োগ রয়েছে।

বিএসইসি সূত্রে জানা যায়, যেহেতু পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগ সীমায় বন্ডে বিনিয়োগকে অন্তর্ভূক্ত করা হবে না বলে ব্যাংক কোম্পানি (সংশোধন) আইন ২০২৩ এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এতে করে ব্যাংকগুলোর পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের সক্ষমতা বাড়ার সুযোগ তৈরী হয়েছে। আর যেহেতু মন্ত্রীসভায় সংশোধনী বিলে অনুমোদন দিয়েছে এখন জাতীয় সংসদেও পাশ হবে বলে আশা করা যায়।