দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: পুঁজিবাজারকে গতিশীল করার জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইস), ডিএসই, সিএসই, বিএমবিএ, ডিবিএসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো অনেক প্রস্তাব দিয়েছিলো জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর)। প্রস্তাবের কোন প্রতি ফলন হয়নি প্রস্তাবিত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে। তবে নতুন কোন খারাপ খবরও নেই। ফলে পুঁজিবাজার সূসংবাদ ও দুংসবাদ কিছু নেই।

আজ বৃহস্পতিবার ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। সেখানে কোম্পানিগুলোর করপোরেট করসহ অন্যান্য নীতিমালা অপরিবর্তিত রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। পুঁজিবাজারের চলমান সুবিধা বহাল রেখেই আসন্ন বাজেট ঘোষনা করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

সেই প্রস্তাবিত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে পুঁজিবাজার বান্ধব হবে, এমনটাই মনে করেছিলেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। তাদের সেই প্রত্যাশা মরিচিকায় রুপান্তর নিলো। মানে চলমান সুযোগ সুবিধা বহাল রেখেই অর্থমন্ত্রী ঘোষনা দিয়েছে প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেট। ফলে আসন্ন বাজেটে শেয়ারবাজারের জন্য কোন সুসংবাদ নেই। তবে কোন দু:সংবাদও নেই। অনেকটা চলতি অর্থবছরের (২০২২-২০২৩) কপি বললে, ভূল হবে না।

আসন্ন বাজেটকে (২০২৩-২৪ অর্থবছর) কেন্দ্র করে ইতিমধ্যে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) কর্তৃপক্ষ ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করেছিল। তারা বলে আসছিল এবারের বাজেটে পুঁজিবাজার উন্নয়নে বেশকিছু সুবিধা থাকবে। ফলে পুঁজিবাজর প্রাণবন্ত ও বিনিয়োগবান্ধব হবে। একই সঙ্গে এসব সুবিধায় পুরোপুরি ঘুরে দাঁড়াবে পুঁজিবাজার। কিন্তু প্রস্তাবিত বাজেটে সেই ধরনের তেমন কিছু নেই বললেই চলে।

এদিকে পুঁজিবাজারের উন্নয়ন আশায় ডিএসই চলতি বছরের ফেব্রুয়ারীতে প্রাক-বাজেটে বেশিকিছু দাবিদাবা পেশ করেছিল। সেই দাবিগুলো হলো: বন্ড থেকে সুদের আয়ের উপর কর অব্যাহতি, লভ্যাংশ আয়ের উপর উৎসে কর সম্পূর্ণ এবং চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হিসাবে বিবেচনাকরণ, তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর কর্পোরেট করের হার হ্রাস, তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর কর্পোরেট করের হার হ্রাস, স্টক এক্সচেঞ্জের ট্রেকহোল্ডারদের উৎসে কর হ্রাস, স্টক ডিলারগণের শেয়ার লেনদেন থেকে কর অব্যাহতি।

ডিএসইর কর্তৃপক্ষ প্রাক-বাজেটে এনবিআরকে জানায়, বর্তমানে কর্পোরেট বন্ডের বাজারের আকার খুবই ছোট, এটি পুঁজিবাজারের পাশাপাশি অর্থ বাজারেরও বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা তৈরি করে। একটি কার্যকরী বন্ডের বাজার, অর্থনীতিকে বিভিন্নভাবে সহায়তা করতে পারে। যদি সব ধরনের বন্ডের সুদ অব্যাহতির আওতায় আনা হয়, তবে তা একটি শক্তিশালী বন্ড বাজার সৃষ্টিতে উৎসাহিত করবে।

তাই জিরো কুপন বন্ডের অনুরূপ স্টক এক্সচেঞ্জের যেকোন বোর্ডে তালিকাভুক্ত কোন কর্পোরেট বন্ড থেকে উদ্ভুত সুদ থেকে আয়ের উপর সকল শ্রেণীর ইস্যুকারী এবং বিনিয়োগকারীদের ৬ষ্ঠ তফসিল, পার্ট-এ এর অধীনে কর অব্যাহতি চেয়েছিল ডিএসই।

ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন (ডিবিএ) সিকিউরিটিজ লেনদেনের ওপর বিদ্যমান অগ্রিম আয়করের হার কময়ে ০.০১৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছিল। এতে তাৎক্ষণিকভাবে ব্রোকার ও বিনিয়োগকারী লাভবান হবে। বাজারে লেনদেন বাড়বে। আর দীর্ঘ মেয়াদে তাতে সরকারের রাজস্ব আয় বাড়বে। বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী আহম মুস্তফা কামাল এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।

বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ) মার্চেন্ট করপোরেট করের হার কমানোর প্রস্তাব করেছছিল। বর্তমানে মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোকে ববাণিজ্যিক ব্যাংকের সমান হারে অর্থাৎ ৩৭ দশমিক ৫০ শতাংশ হারে কর দিতে হয়। বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী করমুক্ত লভ্যাংশ আয়ের সীমা বাড়ানোর বিষয়ে কিছু বলেননি।