শেখ হাসিনার স্নেহের পরশে অভিভূত বিমানের যাত্রীরা

দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: কোনো দেশের প্রধানমন্ত্রীকে কাছ থেকে দেখতে পাওয়া কিংবা তার সঙ্গে কথা বলতে পারা– নিঃসন্দেহে যে-কারও জন্য এ সুযোগ অনেক সৌভাগ্যের। তেমন সুযোগের ভাগিদার হয়েছেন কয়েকজন প্রবাসী বাংলাদেশি। বাংলাদেশ বিমানের লন্ডনগামী একটি ফ্লাইটের এসব প্রবাসীর মাঝে রবিবার স্নেহের পরশ ছড়িয়েছেন প্রধনামন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশের সরকারপ্রধানকে কাছে পেয়ে অভিভূত হয়েছেন বিমানের সাধারণ যাত্রীরা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনে যোগ দিতে রবিবার নিউইয়র্কের পথে রওনা দেন। এ সময় তিনি বাংলাদেশ বিমানের উড়োজাহাজ ‘সোনার তরীর’ ফ্লাইটের লন্ডনগামী নিয়মিত যাত্রী ও বিমান ক্রুদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। বিমানের যাত্রী ছোট শিশুকে আদর করতে দেখা যায় প্রধানমন্ত্রীকে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রবিবার রাত ৯টা ৫ মিনিটে লন্ডন পৌঁছেছেন। এর আগে তাকে ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী ফ্লাইট একই দিন সকাল ১০টা ১২ মিনিটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছেড়ে যায়।
লন্ডনে হিথ্রো বিমানবন্দরে ৪ ঘণ্টা যাত্রাবিরতির পর ফ্লাইটটির সোমবার (১৭ সেপ্টেম্বর) (নিউইয়র্ক সময়) রাত ১০টা ৫০ মিনিটে নিউইয়র্কের জনএফ কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের কথা। সাধারণ মানুষের সঙ্গে শেখ হাসিনার কাছাকাছি থাকার বিষয়টি নতুন করে অবশ্য সামনে আসেনি। এর আগেও এমন বহু নজির রয়েছে। উল্লেখযোগ্য একটি ঘটনা হলো গত জুনের।
চার দিনের সরকারি সফর শেষে সুইজারল্যান্ড থেকে ১৬ জুন বাংলাদেশ বিমানের একটি নিয়মিত ফ্লাইটে দেশে ফেরেন প্রধানমন্ত্রী। ওই ফ্লাইটের যাত্রীরাও প্রত্যক্ষ করেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার মহান হৃদয় ও মমতার অনন্য বৈশিষ্ট্য।
শেখ হাসিনা যে ফ্লাইটে দেশে ফেরেন, তা ছিল বিমান বাংলাদেশের নিয়মিত বাণিজ্যিক ফ্লাইট। বহু সাধারণ যাত্রী ছিলেন; যারা সুইজারল্যান্ড থেকে বাংলাদেশ গমন করছিলেন। হঠাৎ যাত্রীরা প্রত্যক্ষ করলেন তাদের ফ্লাইটে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তখন তিনি নিজেই হেঁটে হেঁটে যাত্রীদের আসনের দিকে এগোতে থাকেন। একে একে সবার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। হাসিমুখে তাদের সঙ্গে আলাপ করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য লেখক মো. নজরুল ইসলাম বলেছিলেন, ফ্লাইটে তাদের (যাত্রী) আসনের পাশে প্রধানমন্ত্রীকে পেয়ে অনেকেই বিস্মিত ও অবাক হয়েছেন। শেখ হাসিনার মমতা দেখে অভিভূত যাত্রীরা স্মৃতি ধারণ করে রাখতে চেষ্টা করেন। অনেকে অনুরোধ করেন তার সঙ্গে ছবি তোলার জন্য। তাদের সেই অনুরোধে সাড়া দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। অনেক যাত্রী তখন শেখ হাসিনার সঙ্গে ছবি তোলেন।
বড়রা ছাড়াও ফ্লাইটে অনেক শিশু ছিল। তাদের মাঝে স্নেহের পরশ ছড়িয়ে দেন শেখ হাসিনা। বুকে টেনে নিয়ে বাচ্চাদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। তাদের সঙ্গে মজার মজার গল্প করেন। আর এবার প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনে যোগ দিতে যাওয়ার পথে একই রকম ঘটনার সাক্ষী হলেন আরও কয়েকজন প্রবাসী।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৭ থেকে ২২ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে অবস্থানকালে ১৯ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সদর দপ্তরের সাধারণ পরিষদ হলে ৭৮তম সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের প্রথম দিনের উচ্চপর্যায়ের সাধারণ আলোচনায় যোগ দেবেন। তিনি স্থানীয় সময় শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১টা থেকে ২টার মধ্যে সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ভাষণ দেবেন।
বিশ্বনেতারা ৭৮তম অধিবেশনে যোগদানের জন্য নিউইয়র্কে একত্র হবেন। আন্তর্জাতিক এ সম্মেলনে এবারের প্রতিপাদ্য ‘আস্থা পুনর্গঠন ও বিশ্বসংহতির পুনরুদ্ধার : সবার জন্য শান্তি, সমৃদ্ধি, অগ্রগতি ও স্থায়িত্ব ত্বরান্বিত করতে ২০৩০ এজেন্ডা এবং এর টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য বাস্তবায়নে পদক্ষেপ গ্রহণ।’ প্রধানমন্ত্রী ২৩ সেপ্টেম্বর সকাল ৯টায় (নিউইয়র্ক সময়) ওয়াশিংটন ডিসির উদ্দেশে নিউইয়র্ক ত্যাগ করবেন। তিনি ২৩ থেকে ২৯ সেপ্টেম্বর ওয়াশিংটনে অবস্থান করবেন।
প্রধানমন্ত্রী ২৯ সেপ্টেম্বর ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে (বিএ-২৯২) রাত ১০টা ৪৫টায় (ওয়াশিংটন সময়) লন্ডনের উদ্দেশে ওয়াশিংটন ডিসি ত্যাগ করবেন এবং ৩০ সেপ্টেম্বর বেলা ১১টায় লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দরে পৌঁছাবেন। বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানাবেন যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম।
প্রধানমন্ত্রী ৩ অক্টোবর রাত ৮টা ৩৫ মিনিটে (লন্ডন সময়) বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের (বিজি ২০৮) একটি ফ্লাইটে লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হবেন এবং ৪ অক্টোবর দুপুর সাড়ে ১২টায় (বাংলাদেশ সময়) হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছাবেন।