মনির হোসেন ও ওয়াহিদুর রহমান, দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: টানা দরপতন থেকে বেরিয়ে ঊর্ধ্বমুখী ধারায় ফিরতে শুরু করেছে পুঁজিবাজার। ফলে বাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের ফের আস্থা বাড়তে শুরু করছে। ফলে পুঁজিবাজার উঠানামার মধ্যে দিয়ে স্থিতিশীলতার আভাস দিচ্ছে। পুঁজিবাজারে বড় বিনিয়োগকারীরা সক্রিয় হতে শুরু করেছেন। যে কারণে ধীরে ধীরে গতি ফিরছে সূচক ও লেনদেনে।

তাই স্থিতিশীল পুঁজিবাজারের দাবী জানিয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। কারণ এর আগেও কয়েকবার বাজার বড় উত্থানের আভাস দিলেও টেকসই হয়নি। এবার যেন পুঁজিবাজার স্থিতিশীল থাকে সেই প্রত্যাশা বিনিয়োগকারীদের। এছাড়া দরপতন কাটিয়ে চাঙা পুঁজিবাজারে ভালো মৌল ভিত্তি শেয়ারের প্রতি ঝোঁক বাড়ছে বিনিয়োগকারীদের।

এদিকে সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূচকের উত্থানের মধ্যে দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। এর মাধ্যমে শেষ ছয় কার্যদিবসের মধ্যে পাঁচ কার্যদিবস ছিলো বাজার। সেইসঙ্গে প্রায় ৩ মাস পর ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) হাজার কোটি টাকার ওপরে লেনদেন হয়েছে। তাছাড়া দীর্ঘ সময় পর বাজার পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক আচরন করায় বিনিয়োগকারীরা বুঝে-শুনে এখন ভালো মৌলভিত্তির শেয়ার বিনিয়োগ করছেন।

ভালো ও মৌলভিত্তির কোম্পানিগুলো নিয়ে গড়া ‘এ’ ক্যাটাগরির কোম্পানিগুলোর শেয়ারদর বৃদ্ধিকে স্বাভাবিক হিসেবে দেখছেন বাজারসংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, অতীতে দুর্বল কোম্পানিতে বিনিয়োগ করে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন বিনিয়োগকারীরা। এছাড়া ব্যক্তিশ্রেণীর বিনিয়োগকারীরাও এখন ঝুঁকিপূর্ণ শেয়ার সম্পর্কে সচেতন হয়েছেন। তাই তারা বুঝে-শুনে ভালো ও মৌলভিত্তির কোম্পানিতে বিনিয়োগের দিকে বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছেন।

কারণ, পুঁজিবাজারে স্মরনকালের ভয়াবহ ধসের আগে দুর্বল মৌলভিত্তির শেয়ার কিনেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন বিনিয়োগকারীরা। ধসের পর দীর্ঘ মন্দা কাটিয়ে উঠতে শুরু করেছে বাজার। বিশেষ করে সরকার পুঁজিবাজারের প্রতি মনোযোগী হওয়ায় পরিস্থিতি পাল্টাতে শুরু করেছে। ধীরে ধীরে সব শ্রেনীর বিনিয়োগকারী বাজারমুখী হতে শুরু করেছেন।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বড় বিনিয়োগকারীরা বাজারে সক্রিয় হচ্ছেন। এই কারণে সূচকও বাড়ছে, লেনদেনও বাড়ছে। তাছাড়া বিনিয়োগকারীরা বুঝে-শুনে এখন ভালো মৌলভিত্তির শেয়ার বিনিয়োগ করছে। এটা বাজারের জন্য ভাল দিক বলে তিনি করেন।

জানা গেছে, দিনশেষে ডিএসই ব্রড ইনডেক্স আগের দিনের চেয়ে ৩৪ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৭২৭ পয়েন্টে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১০ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১ হাজার ২৬১ পয়েন্টে এবং ডিএসই ৩০ সূচক ১৩ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ২ হাজার ৪৬ পয়েন্টে। দিনভর লেনদেন হওয়া ৩৯৬ কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ২৫২ টির, দর কমেছে ৮৬ টির এবং দর অপরিবর্তিত রয়েছে ৫৮ টির।
ডিএসইতে ১ হাজার ৯৫ কোটি ৬৪ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। যা আগের কার্যদিবস থেকে ২৭৭ কোটি ৮৮ লাখ টাকা বেশি। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৮১৭ কোটি ৭৬ লাখ টাকার।

অপরদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১২৯ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬ হাজার ৩৬১ পয়েন্টে। সিএসইতে ২২৭ টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৫৬ টির দর বেড়েছে, কমেছে ৫৮ টির এবং ১৩টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। সিএসইতে ১২ কোটি ৮৫ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।