দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: টানা দরপতন থেকে বেরিয়ে আসার আভাস দিয়ে পুঁজিবাজারে ফের দরপতন শুরু হয়েছে। এক দিন সামান্য এগোচ্ছে তো, পরের কয়েক দিন টানা দরপতন হচ্ছে। ফলে সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূচকের বড় দরপতনে লেনদেন শেষ হয়েছে।এদিন রিজার্ভের নেতিবাচক খবরে পুঁজিবাজারে সূচকের বড় দরপতন হয়েছে।

তবে একের পর এক ইস্যুতে অস্থির হয়ে পড়ছেন পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীরা। এদিন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) আজ সূচক কমেছে ৮১ পয়েন্টের বেশি।  ফলে টানা কয়েক কার্যদিবস নতুন করে দরপতনে পুঁজি নিয়ে শঙ্কায় বিনিয়োগকারীরা। এদিন সূচকের সাথে কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার দর ও টাকার পরিমাণে লেনদেন কমেছে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশের রিজার্ভ গত ১০ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থানে নেমে গেছে এমন একটি খবর আজ গণমাধ্যমে ফলাও করে প্রকাশিত হয়েছে। এই খবরের কারণেই মূলত পুঁজিবাজারে সূচকের বড় দরপতন হয়েছে।

তাঁদের মতে, বাজার যেখানে সামনের দিকে যাওয়ার কথা, সেখানে রিজার্ভের নেতিবাচক খবরে বাজার আবারও বড় আকারে ধাক্কা খেল। তাঁরা আক্ষেপ করে বলছেন, দেশে-বিদেশে খারাপ কিছু হলেই পুঁজিবাজারে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। বাজার অনর্থক চাপে তৈরি হয়। অথচ দেশে-বিদেশে ভালো কিছু হলে এর ইতিবাচক প্রভাব পুঁজিবাজারে কখনোই যায় না।

তাঁরা বলছেন, বর্তমানে গোটা বিশ্ব আর্থিক চাপে রয়েছে। তারপরও বিশ্বের প্রায় পুঁজিবাজারে রেকর্ড উত্থানের খবর আসছে। কিন্তু বাংলাদেশের পুঁজিবাজার এর ব্যতিক্রম। এখানে খারাপ খবরের চাপ দেখা যায়। কিন্তু ভালো খবরের কোনো প্রভাব দেখা যায় না।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশের রিজার্ভের সঙ্গে পুঁজিবাজারের সরাসরি কোন সম্পর্ক নেই। অথচ রিজার্ভের নেতিবাচক খবরের বড় টার্গেট হয়েছে পুঁজিবাজার। গত কয়েক দিন পুঁজিবাজারে ভালো ভালো খবর বেরিয়েছে। যার মধ্যে নিয়ন্ত্রক সংস্থার নতুন চেয়ারম্যান, নতুন কমিশন, সরকারি প্রতিষ্ঠানের পুঁজিবাজারে অফলোড করার প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা, সরকারের কাছ থেকে আইসিবির বড় অর্থ প্রাপ্তির সম্ভাবনা ইত্যাদি। তারপরও পুঁজিবাজারে এভাবে সূচকের বড় পতন কোনোভাবে কাঙ্খিত নয়।

এদিকে সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে দিনশেষে ডিএসই ব্রড ইনডেক্স আগের দিনের চেয়ে ৮১ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৫৮৫ পয়েন্টে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১৫ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১ হাজার ২২৫ পয়েন্টে এবং ডিএসই–৩০ সূচক ২৬ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১ হাজার ৯৯১ পয়েন্টে।

দিনভর লেনদেন হওয়া ৩৯৯ কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৩১ টির, দর কমেছে ৩৪৩ টির এবং দর অপরিবর্তিত রয়েছে ২৫ টির। ডিএসইতে ৬৬৪ কোটি ৩৬ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। যা আগের কার্যদিবস থেকে ৩০৩ কোটি ৬৬ লাখ টাকা কম। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৯৬৮ কোটি ২ লাখ টাকার ।

অপরদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১৭০ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৬ হাজার ১৬৪ পয়েন্টে। সিএসইতে ২৫৯ টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২৭ টির দর বেড়েছে, কমেছে ১৯৮ টির এবং ৩৪ টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। সিএসইতে ১৪ কোটি ৭১ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।