দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: টানা দরপতন চলছে দেশের পুঁজিবাজারে। দিন যতই যাচ্ছে লোকসানের পাল্লা ততই ভারী হচ্ছে। অন্যদিকে দাম পড়তির মুখেও বাজারে শেয়ার বিক্রির চাপ অস্বাভাবিক বেড়ে গেছে। কেউ আরও দর হারানোর আশঙ্কায় দ্রুত প্যানিক সেল করছেন। কারও কারও শেয়ার আবার মার্জিন ঋণের বাধ্যবাধকতায় ফোর্সড সেলের মুখেও পড়ছে। এর পরও অনেক ক্ষেত্রেই কেনার মতো ক্রেতা মিলছে না।

ক্রেতাশূন্য বাজারে এখন বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দামও হু-হু করে কমছে। পতনের ধাক্কায় সিংহভাগ পুঁজি হারিয়ে বিনিয়োগকারীদের নাভিশ্বাস তৈরি হয়েছে। ফলে বাড়ছে বিনিয়োগকারীদের আর্তনাদ ।

নগদ অর্থ বিনিয়োগ করে কেউ পথে বসছেন, বিশেষ করে মার্জিন ঋণ নিয়ে বিনিয়োগ করা বিনিয়োগকারীরা আম-ছালা উভয়ই হারাচ্ছেন। কেউ আবার দাম বাড়বে আশায় দীর্ঘকাল অনিশ্চয়তায় ভুগছেন। বর্তমান পুঁজিবাজারের অবস্থা ২০১০ সালের ভয়াবহ অবস্থা বিরাজ করছে।

মুলত দুই ইস্যুতে নতুন করে টালমাতাল শুরু করছে পুঁজিবাজার। বিষয়টি এমন যে পুঁজিবাজারে বছরের ১২ মাসই কোন না কোন ইস্যুতে দরপতন চলছে। মুলত চলতি সপ্তাহের শুরুতে ডিএসইর কিছুটা সূচকের উত্থান হলেও দ্বিতীয় কার্যদিবস থেকে শুরু হয় দরপতন।

এদিন বিকালে খবর আসে দেশের রিজার্ভ ১০ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে গেছে। এই খবরে শুরু হয় পুঁজিবাজারে নতুন করে ধারাবাহিক পতন। তারপর বুধবার যোগ হয় কেপিট্যাল গেইন ট্যাক্স আরোপের খবর।

নতুন এই দুই ইস্যুতে টালমাতাল হয়ে পড়ছেন পুঁজিবাজার। তবে টানা দরপতন হলেও নিয়ন্ত্রক সংস্থা মুখ খুলছে না। যার ফলে চার কার্যদিবসে ডিএসইর সূচক ১৭৯ পয়েন্ট উধাও হয়ে যায়। আর বিনিয়োগকারীরা হারায় প্রায় ৯ হাজার ৮০০ কোটি টাকার মূলধন।

এদিকে সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচকের বড় পতনে লেনদেন শেষ হয়েছে। এদিন ডিএসইর সূচকের সাথে কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার দর। তবে বেড়েছে টাকার পরিমাণে লেনদেন। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

জানা গেছে, দিনশেষে ডিএসই ব্রড ইনডেক্স আগের দিনের চেয়ে ৯ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৫১৭ পয়েন্টে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক .৮১ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১ হাজার ২১২ পয়েন্টে এবং ডিএসই–৩০ সূচক ৩ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১ হাজার ৯৭৩ পয়েন্টে। দিনভর লেনদেন হওয়া ৩৯৪ কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১২২ টির, দর কমেছে ২১৫ টির এবং দর অপরিবর্তিত রয়েছে ৫৭ টির।

ডিএসইতে ৬৭৬ কোটি ৭৯ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। যা আগের কার্যদিবস থেকে ১৫০ কোটি ৪৬ লাখ টাকা বেশি। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৫২৬ কোটি ৩৩ লাখ টাকার । অপরদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৫৩ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৬ হাজার ৬ পয়েন্টে।

সিএসইতে ২৫১ টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৬৩ টির দর বেড়েছে, কমেছে ১৬৩ টির এবং ২৫ টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। সিএসইতে ৫৯ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।