দেশ প্রতিক্ষণ, আমতলী : দুর্যোগপ্রবণ উপকূলীয় জেলা হিসেবে পরিচিত বরগুনা। এ জেলার আমতলী উপজেলা পরিষদের সামনে ঘূর্ণিঝড়ের মহাবিপৎসংকেত প্রচারে জাইকার অর্থায়নে স্থাপন করা হয়েছিল পলিফোনিক সাইরেন। স্থাপনের সময় সাইরেনটি বাজলেও বর্তমানে শুধু সাইরেনটিই আছে, কিন্তু নেই তার কোনো শব্দ। ফলে ঘূর্ণিঝড়ের মহাবিপৎসংকেতের সময় স্থানীয়রা বিষয়টি বুঝতেই পারেন না।

২০০৭ সালে সুপার সাইক্লোন সিডরে হাজার হাজার মানুষের প্রাণহানি ঘটে। এরপর ঘূর্ণিঝড় থেকে মানুষকে বাঁচাতে মহাবিপৎসংকেত প্রচারের জন্য আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার (জাইকা) অর্থায়নে আমতলী উপজেলা পরিষদের ভবনের সামনে স্টিলের পাইপে উঁচু করে স্থাপন করা হয় পলিফোনিক সাইরেন।

ছয়টি ছোট মাইকসংবলিত উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন এই সাইরেনটির আওয়াজ তিন বর্গকিলোমিটার এলাকা পর্যন্ত পৌঁছাতে সক্ষম। কেবল ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখানোর প্রয়োজন হলে এ ধরনের সাইরেন বাজিয়ে মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার জন্য সতর্ক করা হয়। কিন্তু দুর্যোগের সময় এই সাইরেনটি এখন কোনো কাজেই আসছে না। দীর্ঘ ৯ বছর ধরে এটি বিকল রয়েছে।

এদিকে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় রিমাল বাংলাদেশের উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর ১০ নম্বর মহাবিপৎসংকেত জারি করেছে। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া আরও অবনতি হলেও পরিফোনিক সাইরেনটি অকেজো থাকার কারণে সেটি বাজানো সম্ভব হচ্ছে না।

আমতলী উপজেলা সিপিপি টিম লিডার আ. ওহাব আকন বলেন, মহাবিপৎসংকেত প্রচারের জন্য ৩ বর্গকিলোমিটার উচ্চক্ষমতার এই সাইরেনটি বসানো হলেও বর্তমানে এটি অকেজো। ফলে আসন্ন ঝড়ে মানুষ সাইরেন শুনতে না পেয়ে বিপদে পড়তে পারেন। এটি মেরামতের চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু চালু করা সম্ভব হয়নি।

আমতলী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জামাল হোসেন বলেন, সাইরেনটি দীর্ঘদিন ধরে অকেজো রয়েছে। তবে এটির সুইচে কারিগরি ত্রুটি রয়েছে। স্থানীয় টেকনিশিয়ান দ্বারা সারানোর চেষ্টা করেছি কিন্তু সম্ভব হয়নি। ঢাকা থেকে ভালো টেকনিশিয়ান দ্বারা মেরামতের কাজ চলমান রয়েছে।

আমতলী পৌরসভা মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. মতিয়ার রহমান বলেন, ১০ নম্বর মহাবিপৎসংকেত প্রচারে এবং মানুষের কাছে সাইরেনের শব্দ পৌঁছাতে এই সাইরেনটি অতি প্রয়োজন ছিল।

আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, সাইরেনটির সুইচে সমস্যা রয়েছে। এটি মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। স্থানীয় টেকনিশিয়ান মাধ্যমে মেরামতের চেষ্টাও করেছি। ঢাকা থেকে টেকনিশিয়ান এনে মেরামতের কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।