দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: দীর্ঘদিন ধরে পতনের বৃত্তে আটকে ছিল দেশের পুঁজিবাজার। এমন পতনের কারণে বিনিয়োগকারীদের মাঝে বিরাজ করছে নানা রকম অস্থিরতা। তবে সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে দিনভর সূচকের উঠানামা করলেও দিনশেষে সামান্য সূচকের উত্থানে লেনদেন শেষ হয়েছে। এদিন সূচকের উত্থানের সাথে সাথে লেনদেনও কিছুটা বাড়ছে। তবে সূচকের কিছুটা উত্থান হলেও আতঙ্ক কাটছে না বিনিয়োগকারীদের।

কারণ বর্তমান বাজার পরিস্থিতিতে সূচকের টানা উত্থান না হলে বিনিয়োগকারীদের মাঝে আস্থা ফিরবে না। কারণ এর আগেও টানা দরপতনের পর সূচকের মাঝে মধ্যে দুই একদিন বাড়লেও তা স্থায়ী হয়নি। যার ফলে বিনিয়োগকারীদের মাঝে আস্থা ফেরাতে সূচকের টানা উত্থানের বিকল্প নেই বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ক্যাপিটাল গেইনের ওপর ট্যাক্স না হওয়ার বিষয়ে এখনো সব শ্রেণির বিনিয়োগকারীরা আশ্বস্ত নন। যে কারণে বাজারে কাঙ্খিত চাঙাভাব ফিরতে দেরি হচ্ছে। তবে বাজার পরিস্থিতি দেখে সহজেই অনুমেয় যে, বাজার নিয়ে ছোট ও বড় বিনিয়োগকারীদের যে শঙ্কা ছিল তা কিছুটা হলেও কাটতে শুরু করেছে। ব্যক্তিশ্রেণির সব বিনিয়োগকারীরা বাজারমুখী হলে বাজারের চেহারা দ্রুত পাল্টে যাবে।

পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আল-আমিন বলেন, বাজার খুব দ্রুত স্বাভাবিক হয়ে যাবে। এখান থেকে বাজার পরার খুব একটা জায়গা নেই। নানা ইস্যুতে দীর্ঘদিন পুঁজিবাজার টালমাতাল ছিলো। এ অবস্থায় বিনিয়োগকারীরা ধৈর্য্য ধারন করলে সামনে ভাল কিছু প্রত্যাশা করতে পারেন।

এদিকে সম্প্রতি সালমান এফ রহমান বলেছেন, অর্থনীতির তুলনায় আমাদের পুঁজিবাজার আরো শক্তিশালী থাকা দরকার। প্রধানমন্ত্রীও চাচ্ছেন পুঁজিবাজার আরও শক্তিশালী হোক। পুঁজিবাজার আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পুঁজিবাজার সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। পুঁজিবাজারকে শক্তিশালী করতে যা প্রয়োজন তা করতে হবে।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, দিনশেষে ডিএসই ব্রড ইনডেক্স আগের দিনের চেয়ে ১ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ২৩৫ পয়েন্টে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১ হাজার ১৩৮ পয়েন্টে এবং ডিএসই–৩০ সূচক ১০ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১ হাজার ৮৫৬ পয়েন্টে।

দিনভর লেনদেন হওয়া ৩৯১ কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১৮১ টির, দর কমেছে ১৫৭ টির এবং দর অপরিবর্তিত রয়েছে ৫৪ টির। ডিএসইতে ৩৯১ কোটি ৫৪ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। যা আগের কার্যদিবস থেকে ৪২ কোটি ৫ লাখ টাকা কম। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৩৪৯ কোটি ৪৯ লাখ টাকার।

অপরদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১৯ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার পয়েন্টে। সিএসইতে ২২৩ টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৭১ টির দর বেড়েছে, কমেছে ১২৩ টির এবং ২৯ টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। সিএসইতে ৭৮ কোটি ১৩ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।