আওয়ামীলীগ দেশটাকে একেবারে ধ্বংস করে দিয়েছে: মির্জা ফখরুল
দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সাবেক পুলিশ প্রধান বেনজীর আহমেদ নজিরবিহীন দুর্নীতি করেছেন। অন্যদিকে সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদকেও যুক্তরাষ্ট্র স্যাংশন দিয়েছে। সংসদ সদস্য আনারকে কলকাতায় নিয়ে টুকরো টুকরো করে ফেলা হয়েছে। এরা (আওয়ামী লীগ) দেশটাকে একেবারে ধ্বংস করে দিয়েছে। সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের আব্দুস সালাম হলে জাতীয়তাবাদী মহিলা দল আয়োজিত জিয়াউর রহমানের ৪৩তম শাহাদৎবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
নির্বাচন ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, এই দলীয় সরকারের অধীনে তিনটা নির্বাচন হয়েছে। তিনটা নির্বাচনেই প্রহসন হয়েছে। কাল নির্বাচন কমিশন বলেছে এরকম বৈরী রাজনৈতিক পরিবেশে কখনো সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব না। অর্থাৎ আওয়ামী লীগ যে পরিস্থিতি তৈরি করেছে তাতে কোনো দলই নির্বাচনে আসে না। যে কারণে আজ নির্বাচন ব্যবস্থাটা ভেঙে পড়েছে। আজ এ সরকার শুধু রাজনীতিকেই ধ্বংস করেনি, বরং পুরো দেশটাকেই ধ্বংস করে দিয়েছে।
আওয়ামী লীগ বাংলাদেশকে শোষণ করছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, প্রাইমারি স্কুলের বইয়ের অবস্থা ভয়াবহ। কারণ এই বইয়ের মধ্যে মিথ্যা প্রচার করে চলেছে। ওখানে একজনের নাম ছাড়া আর কারো নাম নাই। এমনকি সেখানে তাদের যে নেতা তাজউদ্দীন আহমেদ, তারও নাম নাই। কর্নেল ওসমানীর নামও নাই। কারও নাম নাই। শুধু একনেতা একদেশ, ওই বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ। এই করে করে তারা দীর্ঘকাল ধরে বাংলাদেশকে শোষণ করছে, লুট করছে। বাংলাদেশের সব লোকের অধিকার হরণ করে নিয়েছে।
সবাইকে বেরিয়ে আসার আহ্ববান জানিয়ে তিনি বলেন, আজ সবজির দাম, চালের দাম অবিশ্বাস্য। খাওয়া-দাওয়া যায় না। আজ বিদ্যুতের দাম বেড়েছে। কেন বেড়েছে? কারণ তারা চুরি করে করে এমন অবস্থা তৈরি করেছে যে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো ছাড়া উপায় নাই। আমাদের এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। সমগ্র মানুষ যখন বেরিয়ে আসবে তখনই না বিপ্লব হবে।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের স্মৃতিচারণ করে তিনি আরও বলেন, মানুষ যে জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক বলে এটা একটা ঐতিহাসিক সত্য কথা। কিন্তু আওয়ামী লীগ সেটা মুছে ফেলতে চায়। জিয়া ক্ষণজন্মা পুরুষ ছিলেন। জিয়ার আহ্বানেই দ্বিধাবিভক্ত জাতি যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। এটা সরকার মুছে ফেলতে চায়। আমরা শেখ মুজিবের অবদানকে কখনও অস্বীকার করি না। ৪৩ বছর পরেও জিয়াকে এদেশের মানুষ ভুলে নাই। যারা তার অবদানকে অস্বীকার করে তারা তো দেশের স্বাধীনতাকেই অস্বীকার করে।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে ফখরুল বলেন, আমাদের এখন সময় এসেছে আমাদের নিজেদের সংগঠিত করার। আমরা চেষ্টা করছি, জেল খাটছি। বারবার জেলে যাচ্ছি কিন্তু আমরা এখনো চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করতে পারিনি। এই চূড়ান্ত বিজয় অর্জনের জন্য আমাদের সংগঠনকে আরও দৃঢ় করতে হবে। সবাই মিলে একসঙ্গে একজোটে নামতে হবে। কারণ এটা বিএনপির সমস্যা না, এটা বাংলাদেশের সমস্যা। এটা জাতির সমস্যা।
সভাপতির বক্তব্যে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস বলেন, শহীদ জিয়াউর রহমান তলাবিহীন ঝুড়ি থেকে বাংলাদেশকে একটা পরিপূর্ণ রাষ্ট্রে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। নারী ও শিশুদের ওপর যে নির্যাতন করা হতো সেটা তিনি বন্ধ করেছেন। তিনি নারীদের শিক্ষা নিশ্চিত করেছিলেন। আমরা আশা করি জাতীয়তাবাদী মহিলা দল তারেক রহমানের সঙ্গেও কাজ করতে পারবে।
জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আফরোজা আব্বাসের সভাপতিত্বে, সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদের সঞ্চালনায় এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শাহিদা রফিকসহ দলটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।