শফিকুল ইসলাম, দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বীমা খাতের কোম্পানি ফনিক্স ইন্স্যুরেন্সের লিমিটডের নিয়ম বহির্ভূতভাবে গ্রাহকদের কষ্টে উপার্জিত ও শেয়ারহোল্ডারদের প্রাপ্ত ৮০ লাখ টাকা অবৈধ ব্যয় দেখিয়েছে কোম্পানিটি। বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) কঠোর নির্দেশনার পরও ২০২৩ সালে কোম্পানির এমডি-চেয়ারম্যান এবং পরিচালনা পরিষদের সমন্বয়ে এই টাকার খরচ দেখিয়েছে কোম্পানিটি।

শুধু তাই নয়, এই অবৈধ ব্যয়কে বিমা কোম্পানিগুলো বলছে অতিরিক্ত ব্যয়। বিমা কোম্পানিগুলো থেকে আইডিআরএ-তে পাঠানো তথ্য বিশ্লেষণে এ চিত্র উঠে আসে। তবে বাস্তবে এই চিত্র আরও ভয়াবহ বলে মনে করেন বীমা খাত সংশ্লিষ্টরা। বিমা বিধিমালা ১৯৫৮ এর ৩৯ বিধি মতে, বিমা কোম্পানিগুলো প্রথম বর্ষে ব্যবসার জন্য ব্যস্থাপনা ব্যয়ের সর্বোচ্চ ৯০ শতাংশ ব্যয় করতে পারবে। কিন্তু বিমা কোম্পানিগুলো এই আইন লঙ্ঘন করে অতিরিক্ত বেশি খরচ দেখিয়েছে।

নিরীক্ষক জানিয়েছেন, ফনিক্স ইন্স্যুরেন্স কর্তৃপক্ষ আইডিআরএর এসআরও নং ২৮০-ল/২০১৮তে বর্ণিত সীমা অনুযায়ি, ম্যানেজমেন্ট ব্যয় ২২ কোটি ৩৩ লাখ টাকা করতে পারত। কিন্তু তারা করেছে ২৩ কোটি ১৩ লাখ টাকা। যা বেধেঁ দেওয়া সীমার থেকে ৮০ লাখ টাকা অতিরিক্ত। এদিকে কোম্পানিটিতে ৫ কোটি ৯১ লাখ টাকার গ্র্যাচ্যুইটি সঞ্চিতি কম গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নিরীক্ষক।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছিুক শীর্ষ এক বীমা কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, আইডিআরএ’র আইনের দুর্বলতার কারণে কোম্পানিগুলোতে অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা ব্যয় হচ্ছে। আইডিআরএ গঠন হয়েছে ২০১০ সালে কিন্তু বিমা কোম্পানিকে চলতে হচ্ছে ১৯৫৮ সালের আইন অনুসারে। ফলে বিমা কোম্পানিগুলো আগের নিয়ম কাভার করতে পারছে না। তাই আইডিআরএ’র উচিৎ যুগোপযোগী আইন প্রনয়ণ করা। যাতে এজেন্ট কমিশনের মতো খাতওয়ারি কষ্টগুলো নির্ধারণ করা হবে। একটি সুন্দর কাঠামো গঠন করলেই বিমা কোম্পানিগুলোর সমস্যা সমাধান হবে।

উল্লেখ্য, ফিনিক্স ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত ২০২৩ হিসাব বছরে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ১২ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। কোম্পানিটি ১৯৯৪ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। কোম্পানিটির অনুমোদিত মূলধন ১০০ কোটি টাকা। পরিশোধিত মূলধন ৪০ কোটি ৩৪ লাখ ২০ হাজার টাকা। রিজার্ভে রয়েছে ১০৯ কোটি ২৪ লাখ টাকা। কোম্পানির মোট শেয়ারের ৩৮ দশমিক ১৭ শতাংশ এর উদ্যোক্তা পরিচালকদের কাছে, ১২ দশমিক ৩৫ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী ও বাকি ৪৯ দশমিক ৪৮ শতাংশ সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে।