দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত বীমা খাতের কোম্পানি জনতা ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের শেয়ার নিয়ে কারসাজি ও মিথুন নিটিংয়ের অনিয়ম এবং ২ ব্রোকারেজ হাউজের সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘনের দায়ে ৮ জন ব্যক্তি ও ২টি প্রতিষ্ঠানকে ৮৩ লাখ টাকা জরিমানা করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। সম্প্রতি দায়ীদেরকে শাস্তির বিষয়ে চিঠি দিয়ে জানিয়েছে বিএসইসি। বিএসইসি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র মতে, জনতা ইন্স্যুরেন্সের ২০২১ সালের ১৭ আগস্ট থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত লেনদেনের বিষয়ে তদন্ত পরিচালনা করেছে। এতে সিরিজ লেনদেনের মাধ্যমে কোম্পানিটির শেয়ারদর প্রভাবিত করে মুনাফা তুলে নেওয়ার মতো অনিয়ম পরিলক্ষিত হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে সিরিজ লেনদেন করে কোম্পানির শেয়ারদর ৩৯ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৬২ টাকা ৯০ পয়সায় উন্নিত করা হয়। বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় শাস্থি দিয়েছে বিএসইসি।

জরিমানার কবলে পড়া ব্যক্তিরা হলেন: সিটি ব্যাংক ক্যাপিটাল রিসোর্সেস লিমিটেডের হিসাবধারী মো. এজি মাহমুদ ও এসএম মোতাহারুল জাহান, মো. সাইফ উল্লাহ এবং হাসিনা আক্তার। এদের মধ্যে মো. এজি মাহমুদ ও এসএম মোতাহারুল জাহান যৌথ হিসাব ব্যবহার করেন। তাদেরকে ২০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়া মো. সাইফ উল্লাহকে ৪০ লাখ টাকা এবং হাসিনা আক্তারকে ৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

মিথুন নিটিং : আর্থিক হিসাব জমা না দেওয়া, এজিএম না করা, বেপজার সঙ্গে চুক্তি জমি চুক্তির মেয়াদ শেষ হলেও তা প্রকাশ না করা, উৎপাদন বন্ধ নিয়ে তথ্য প্রকাশ না করাসহ আরও কিছু অনিয়ম করেছে। এজন্য মিথুন নিটিংয়ের চেয়ারম্যান রাবেয়া খাতুনকে ৩ লাখ টাকা এবং পরিচালক মো. আতিকুল হক, মো. মাহবুব-উল হক ও মো. রফিকুল হককে ৩ লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। এক্ষেত্রে ৪ জনকে ১২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

গেটওয়ে ইক্যুইটি রিসোর্সেস : সমন্বিত গ্রাহক হিসাবে (সিসিএ) টাকা ঘাটতি সত্ত্বেও মিথ্যা ব্যাংক তথ্য দিয়ে সিকিউরিটিজ ও এক্সচেঞ্জ কমিশন (স্টক ডিলার, স্টক ব্রোকার, ও অনুমোদিত প্রতিনিধি) বিধিমালা লঙ্ঘন করেছে। এ কারনে প্রতিষ্ঠানটিকে ৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
হিলসিটি সিকিউরিটিজ : ব্যাংকিং চ্যানেলের বাহিরে গ্রাহককে ১৯ লাখ টাকা প্রদানের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ রুলস ২০২০ এর ৬(১) লঙ্ঘন করেছে। এ কারনে প্রতিষ্ঠানটিকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

বিএসইসির এনফোর্সমেন্ট বিভাগ থেকে জারি হওয়া আদেশে বলা হয়, আলোচিত ব্যক্তিরা তাদের কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিন্যান্স, ১৯৬৯ এর সেকশন ১৭ (ই) (ভি) এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন বিধিমালা ২০১৮ এর বিধি ৪(১) লঙ্ঘন করেছেন। তাদের এরূপ কর্মকাণ্ড সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিন্যান্স, ১৯৬৯ এর সেকশন ২২ এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন আইন, ১৯৯৩ এর ধারা ১৮ অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ। তাই অর্ডিন্যান্স ও কমিশন আইনের ক্ষমতাবলে তাদেরকে এ জরিমানা করা হলো।

বিএসইসি কমিশনার ড. রুমানা ইসলাম স্বাক্ষরিত আদেশে আরও বলা হয়, জরিমানার অর্থ দন্ডিত ব্যক্তিরা ৩০ দিনের মধ্যে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের অনুকূলে ইস্যুকৃত ব্যাংক ড্রাফট/পে-অর্ডারের মাধ্যমে জমা দিবে। যদি নির্ধরিত সময়ের মধ্যে এ অর্থ জমা দিতে তারা ব্যর্থ হয় তাহলে আইন অনুযায়ি পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।