দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: বর্তমানে দেশজুড়ে আলোচনা তুঙ্গে ছাগলকাণ্ডে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক সদস্য ড. মতিউর রহমান। এবার নুতন করে আলোচনায় এসেছে মতিউরের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের বেনামে পুঁজিবাজারে ২৭ কোটি টাকার বিনিয়োগ। যদিও এই বিষয়ে কোনো তথ্য-উপাত্ত এখনো পাওয়া যায়নি।

সম্প্রতি কয়েকটি গণমাধ্যমের পক্ষ থেকে পুঁজিবাজারে বেনামে আব্দুর রউফ তালুকদারের বিনিয়োগ নিয়ে লিখিতভাবে গভর্নরের কাছে কিছু প্রশ্ন করা হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মেজবাউল হকের মাধ্যমে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে তিনি তা গভর্নরের কাছে উপস্থাপন করেন।
সাংবাদিকরা গভর্নরের কাছে জানতে চেয়েছেন, তিনি অর্থসচিব থাকা অবস্থায় মতিউর রহমানকে সোনালী ব্যাংকের পরিচালক বানাতে জোর হস্তক্ষেপ করেছেন এবং মতিউরের মাধ্যমে বেনামে শেয়ারবাজারে ২৭ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছেন এমন অভিযোগ কতটা সত্যি।

এই বিষয়ে গত বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, গভর্নরের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ উঠেছে তা সর্বেব মিথ্যা বলে জানিয়েছেন গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। এদিকে, মতিউরের সঙ্গে আব্দুর রউফ তালুকদারের হজের একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভেসে বেড়াচ্ছে। যার ফলে মতিউরের মাধ্যমে পুঁজিবাজারে আব্দুর রউফ তালুকদারের বিনিয়োগের বিষয়টি চাউর হয়েছে।

ছাগলকাণ্ডে মতিউর রহমান কিছুদিন ধরে আলোচনায় আসেন তাঁর ছেলের কারণে। কোরবানির ঈদে সাদিক অ্যাগ্রো নামের একটি খামার থেকে মতিউর রহমানের ছেলে মুশফিকুর রহমান ১৫ লাখ টাকায় একটি ছাগল কেনা ছাড়াও ৭০ লাখ টাকার গরু কিনেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও গণমাধ্যমে এসব খবর প্রচারিত হওয়ার পর মতিউর রহমানের মসনদ কেঁপে উঠেছে।

এরপর থেকে মতিউর রহমানে বিশাল সম্পত্তি একে একে ফাঁস হতে থাকে এবং তথ্য প্রকাশ হতে থাকে শেয়ারবাজারে মতিউর ও তার পরিবারের সদস্যদের বিনিয়োগ নিয়েও। মতিউর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে রিসোর্ট, শুটিং স্পট, বাংলো বাড়ি, জমিসহ নামে-বেনামে সম্পত্তি থাকার বিষয়ে একের পর এক খবর প্রকাশিত হতে থাকে। পাশাপাশি প্রকাশিত হয় শেয়ারবাজারে প্লেসমেন্ট শেয়ারসহ শতকোটি টাকার বিনিয়োগ তথ্য।

গত ২০ জুন বেসরকারি এক টেলিভিশনে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের কথা প্রকাশ করেন মতিউর রহমান নিজেই। তিনি বলেন, পুঁজিবাজারে শুধু মেয়ের নামে বিনিয়োগ করে ১ কোটি টাকায় ১৪ কোটি টাকা মুনাফা করেছি। এই বাজার থেকে তিনি বিপুল পরিমাণ অর্থ বানিয়েছেন বলে নিজেই দাবি করেছেন। বুদ্ধি ও পরিশ্রমের মাধ্যমে পুঁজিবাজারকে কাজে লাগিয়ে বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন বলেও মতিউর রহমান দাবি করেছেন।

এরপর ছাগল কাণ্ডের জের ধরে গত মঙ্গলবার মতিউর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের বিও (বেনিফিশিয়ারি) হিসাব স্থগিত করার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। একইদিনে তাদের সব ব্যাংক হিসাব স্থগিত করার নির্দেশ দেয় বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।