শহীদুল ইসলাম, দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূচকের উত্থানে লেনদেন শেষ হয়েছে। নতুন অর্থবছরে পুঁজিবাজারে সূচক বৃদ্ধির প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে। তবে কিছুদিন আগেও যেখানে নানা চড়াই-উৎরাইয়ের মধ্যে পড়ে যে বাজার মরার মতো ধুঁকছিল, সে বাজার এখন টানা ঊর্ধ্বমুখী। বাড়ছে বিনিয়োগকারীদের আনাগোনা। প্রায় দেড় বছর মন্দার পর পুঁজিবাজারে প্রাণ ফিরতে শুরু করেছে।

লেনদেনের পালে হাওয়া লেগেছে। প্রায় প্রতিদিনই ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে লেনদেনের গতি। ফলে টানা উত্থানের মধ্যে মুনাফা তুলে নেওয়ার প্রবণতার মধ্যেও সূচক বেড়েছে, যা বিনিয়োগকারীদের আত্মবিশ্বাস আরও বাড়াবে বলে আশা করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। তবে সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে সূচকের সাথে বেড়েছে টাকার পরিমাণে লেনদেন ও বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার দর। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত এক বছরে লাখের বেশি মার্জিনধারী বিনিয়োগকারী নিঃস্ব হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। যারা পুঁজিবাজারে টিকে আছেন, তারাও বড় লোকসানের কবলে পড়েছেন। এখন তারা লোকসান কাটিয়ে মুনাফায় ফেরার প্রহর গুনছেন। কারণ বাজার ইতিবাচক ধারায় ফেরায় সাইড লাইনে থাকা বিনিয়োগকারীরা বাজারে ফিরতে শুরু করেছেন। যার ফলে বাজারে সূচক বৃদ্ধির পাশাপাশি লেনদেনও বাড়ছে।

বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সাবেক সভাপতি ছায়েদুর রহমান বলেন, বাজেট নিয়ে প্রতিবছরই একটা টানাপোড়েন থাকে। এবছর ক্যাপিটাল গেইন ট্যাক্স নিয়ে একটা হুলুস্থুল অবস্থা ছিল। এটার একটা নেগেটিভ ব্যাপার ছিল। কিন্তু পরবর্তীসময়ে বিনিয়োগকারীরা বুঝতে পেরেছেন, এটা সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হ্যাম্পার করবে না। এটা একেবারে বড় বিনিয়োগকারী যারা তাদের জন্য এই ট্যাক্স।

এটা বিনিয়োগকারীরা বুঝতে পারছেন, এটা ইতিবাচক দিক। এছাড়া অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া বাজার এখন অনেক নিচে চলে আসছে, এর নিচে আর কোথায় যাবে। সে হিসেবে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে একটা আস্থার জায়গা তৈরি হয়েছে। বাজার বটম লাইনে রয়েছে। সে কারণেই বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ বেড়েছে বলে আমরা মনে করছি।’

জানা গেছে, দিনশেষে ডিএসই ব্রড ইনডেক্স আগের দিনের চেয়ে ৩০ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৫৯৪ পয়েন্টে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৮ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১ হাজার ২২৩ পয়েন্টে এবং ডিএসই–৩০ সূচক ৪ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১ হাজার ৯৬৪ পয়েন্টে।

দিনভর লেনদেন হওয়া ৩৯৩ কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ২৩৭ টির, দর কমেছে ১১১ টির এবং দর অপরিবর্তিত রয়েছে ৪৫ টির। ডিএসইতে ১ হাজার ১৯ কোটি ৮ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। যা আগের কার্যদিবস থেকে ১৩০ কোটি ৫১ লাখ টাকা বেশি। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৮৮৮ কোটি ৫৭ লাখ টাকার।

অপরদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৯৪ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ৮৮৯ পয়েন্টে। সিএসইতে ২৮১ টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৭৩ টির দর বেড়েছে, কমেছে ৭৭ টির এবং ৩১ টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। সিএসইতে ১১ কোটি ২ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।