শহীদুল ইসলাম, দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: দীর্ঘদিন পতন প্রবণতায় আটকে থাকার পর চলতি জুলাই মাসের প্রথম কর্মদিবস থেকেই ঘুরে দাঁড়িয়েছে পুঁজিবাজার। টানা ৬ কার্যদিবস উত্থানের পর সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে সূচকের বড় দরপতন হয়েছে। মুলত গত ছয় কার্যদিবস ডিএসইর সূচক বেড়েছে ২৬৬ পয়েন্ট। এদিন অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারে ক্রেতা সংকট দেখা যায়।

তবে ছোট মুলধনী ও ভালো মৌল ভিত্তি শেয়ারে দরপতন হলেও ব্যাংক-ফাইন্যান্সের শেয়ারে ভর করে সূচকের বড় দরপতন ঠেকালো। ফলে অধিকাংশ ব্যাংকের শেয়ার দাম বাড়ায় সূচকের বড় পতন দেখতে হয়নি বিনিয়োগকারীদের। এদিন দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) যে কয়টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে, কমেছে প্রায় তার দ্বিগুণের। এরপরও বাজারটির প্রধান মূল্যসূচক কমেছে ২৬ পয়েন্ট। তবে ডিএসইর লেনদেনের গতি কিছুটা কমেছে।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে লেনদেনের ৩৫ মিনিটের মাথায় ডিএসইর সূচক বৃদ্ধি পায় ৩৮ পয়েন্ট। তারপর থেকেই সেল প্রেসারে বাজারে টানা নামতে থাকে। বেলা সোয়া ১১টায় সূচক আগের দিনের অবস্থানে ফিরে আসে। কিন্তু এই সময় বাজারে কিছুটা বাই প্রেসার বাড়তে দেখা যায়। ফরে বাজার আবারও ওপরের দিকে উঠতে থাকে। তবে বেলা ১২টা ১০ মিনিটে ডিএসইর সূচক আবার ২৪ পয়েন্ট বেড়ে লেনদেন হতে থাকে। এই সময়ে আবারও সেল প্রেসারের চাপ দেখা যায়। ফলে আবারও পেছনে যেতে থাকে উভয় পুঁজিবাজারের।

তারপর বেলা ১টা ৫ মিনিট পর্যন্ত বাজার ইতিবাচক অবস্থায় দাঁড়িয়ে থাকে। তারপর আর ছন্দ ধরে রাখতে পারেনি। পেছনের দিকে হাঁটতে থাকে। এরপর বেলা ১টা ২২ মিনিটে ডিএসইর সূচক আগের দিনের চেয়ে ২২ পয়েন্ট কমে যায়। এই সময়ে বাজার ফের ওঠার চেষ্টা করে। যার ফলে বেলা ১টা ৩৩ মিনিটে সূচকের পতন ১১ পয়েন্ট পর্যন্ত পতন হয়। তারপর আবারও সেল প্রেসার দেখা যায়। যা শেষ পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। বেলা ২টা ১৪ মিনিটে ডিএসইর সূচক ৩৪ পয়েন্ট খোয়া যেতে দেখা যায়। শেষবেলায় অ্যাডজাস্টমেন্টের কারণে সূচকের পতন কমে দাঁড়ায় ২৬ পয়েন্টে।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত ৬ দিনে ডিএসইর সূচক বেড়েছে ২৬৬ পয়েন্ট। এই সময়ে নতুন করে যারা শেয়ার কিনেছেন, তারা তাদের শেয়ারে মুনাফায় রয়েছেন। তাদের মুনাফা তোলার চাপে বাজারে কিছুটা ছন্দপতন দেখা যাচ্ছে। বাজার দুই-এক দিন মিশ্র প্রবণতায় থাকার পর আবারও সামনের দিকে অগ্রসর হবে বলে তারা মনে করেন।

জানা গেছে, দিনশেষে ডিএসই ব্রড ইনডেক্স আগের দিনের চেয়ে ৩০ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৫৯৪ পয়েন্টে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৮ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১ হাজার ২২৩ পয়েন্টে এবং ডিএসই–৩০ সূচক ৪ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১ হাজার ৯৬৪ পয়েন্টে।

দিনভর লেনদেন হওয়া ৩৯৪ কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৯৮ টির, দর কমেছে ২৬৬ টির এবং দর অপরিবর্তিত রয়েছে ৩০ টির। ডিএসইতে ৯৬৭ কোটি ২২ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। যা আগের কার্যদিবস থেকে ৫১ কোটি ৮৬ লাখ টাকা কম। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ১৯ কোটি ৮ লাখ টাকার।

অপরদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৩ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ৮৮৫ পয়েন্টে। সিএসইতে ২৮৪ টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১০৪ টির দর বেড়েছে, কমেছে ১৫৩ টির এবং ২৭ টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। সিএসইতে ৪২ কোটি ৭৬ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।