আলমগীর হোসেন ও মিজানুর রহমান, দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: পিএসসির প্রশ্ন ফাঁস ইস্যুতে সারা দেশে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়েছে। সাংবিধানিক একটি প্রতিষ্ঠানের এমন সংবেদনশীল পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস নিয়ে খোদ প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের দায়-দায়িত্ব পালন নিয়ে উঠেছে নানা প্রশ্ন। বিসিএসসহ বিভিন্ন সরকারি চাকরিতে নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা নিয়ে ‘বড় প্রশ্নের’ মুখে পড়েছে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)।

গত ১২ বছরে অন্তত ৩০টি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের খবর গণমাধ্যমে প্রকাশের পর চরম আস্থার সংকটে পড়েছে সাংবিধানিক এ প্রতিষ্ঠানটি। জনমনে যে বিরূপ প্রভাব পড়েছে, তা কাটিয়ে আস্থা ফেরাতে এখন মরিয়া পিএসসি। এজন্য প্রশ্নফাঁসে জড়িতদের ধরতে করা হয়েছে তদন্ত কমিটি। পুরোদমে কাজও শুরু করেছেন কমিটির সদস্যরা।

তবে সরকারি কর্ম কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে জড়িত একটি সিন্ডিকেট গত ১২ বছরে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস পরীক্ষাসহ সরকারি নিয়োগ পরীক্ষার অন্তত ৩০টি প্রশ্নপত্র ফাঁস করেছে। তদন্ত কর্মকর্তাদের ধারণা, প্রায় দুই দশক ধরে এই সিন্ডিকেট সক্রিয়। এমন তথ্য জানা গেছে সিআইডি কর্মকর্তা এবং প্রশ্নফাঁসের বিষয়ে পল্টন থানায় দায়ের করা প্রথম তথ্য প্রতিবেদন (এফআইআর) থেকে।

এ পর্যন্ত পিএসসির ছয় কর্মকর্তাসহ ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে রয়েছে পিএসসি চেয়ারম্যানের সাবেক গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলী যিনি প্রশ্নফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ২০১৪ সালে চাকরি হারান। পিএসসি থেকে চাকরি চলে গেলেও আবেদ আলীর প্রশ্নফাঁসের কার্যক্রম থেমে থাকেনি। তিনি এই সিন্ডিকেটের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন এবং তার ছেলেকেও এই সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত করেছিলেন।

গত সোমবার রাতে ৩১ জনের নামে এবং অজ্ঞাত ৫০ থেকে ৬০ জনকে আসামি করে এ বিষয়ে মামলাটি করে সিআইডি। এফআইআরে বলা হয়েছে, অন্তত ১৪ জন অভিযুক্ত পলাতক রয়েছেন। তদন্ত কর্মকর্তারা জানতে পেরেছেন, পিএসসির অন্তত দুইজন উপ-পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম ও আবু জাফর এবং সহকারী পরিচালক এস এম আলমগীর কবির ও সাবেক সহকারী পরিচালক নিখিল চন্দ্র রায় এর সঙ্গে জড়িত। জাহাঙ্গীর, জাফর ও আলমগীরকে গ্রেপ্তার করা হলেও নিখিল এখনো পলাতক।

এই কর্মকর্তারা প্রশ্নপত্র ফাঁস করে পিএসসির ডিসপ্যাচ রাইডার খলিলুর রহমান ও অফিস সহকারী সাজেদুল ইসলামের মাধ্যমে আবেদ আলীর হাতে তুলে দিতেন। পিএসসির এসব সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অনেক বিত্তশালী হয়ে উঠেছেন বলে জানা গেছে। তাদের মধ্যে অনেকে চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী হলেও রাজধানীর অভিজাত এলাকায় একাধিক ফ্ল্যাট, বাণিজ্যিক এলাকায় জায়গা এবং দামি গাড়ির মালিক। গত তিন মাসে এই সিন্ডিকেট সদস্যদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অন্তত ২৫ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের সহায়তায় সিআইডি ১৭ আসামির ব্যাংক অ্যাকাউন্টের নথি জব্দ করেছে। এসব নথি পর্যালোচনা করে একাধিক অর্থপাচার মামলা হতে পারে বলে সূত্র জানায়।

সিআইডির সাইবার তদন্ত ও অপারেশনের বিশেষ সুপার তৌহিদুল ইসলাম বলেন, আমরা প্রমাণ পেয়েছি যে পিএসসি কর্মকর্তাসহ ১৭ জন গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তি ৫ জুলাই অনুষ্ঠিত রেলওয়ে নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। আরও কয়েকটি পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের সঙ্গেও এই সিন্ডিকেট জড়িত ছিল বলে জানান তিনি।

এই সিন্ডিকেট কবে থেকে প্রশ্নফাঁস শুরু করেছে, জানতে চাইলে তৌহিদুল বলেন, গ্রেপ্তারকৃত পিএসসি কর্মচারীদের একজন ১৯৯৭ সালে কমিশনে যোগ দেন এবং এর পাঁচ বছরের মধ্যে প্রশ্নফাঁস শুরু করেন। আমরা তদন্ত করছি এবং অভিযুক্ত বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালাচ্ছি। তবে সিআইডি যে ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে, তার মধ্যে সৈয়দ আবেদ আলীকে নিয়ে বেশি আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে। আবেদ আলী ও তার পরিবারের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণাধীন বিএফআইইউ। আগামী ৩০ দিন তাদের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট সব অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা উত্তোলন বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।

এদিকে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগে করা মামলায় সংস্থাটির চেয়ারম্যানের সাবেক গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলীসহ ছয়জন দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। অন্যদিকে পিএসসির পক্ষ থেকে ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি করা হয়েছে। কমিটির সদস্যরা জানান, স্বাধীনভাবে কাজ করার এখতিয়ার দেওয়ায় সব পক্ষকে জিজ্ঞাসাবাদ করবেন তারা। পিএসসির কর্মকর্তা-কর্মচারী থেকে শুরু করে প্রশ্ন প্রণয়নকারী এবং বিশেষজ্ঞ; কাউকেই সন্দেহের বাইরে না রেখে চলছে তদন্তকাজ।

এ বিষয় জানতে চাইলে তদন্ত কমিটির প্রধান পিএসসির যুগ্মসচিব ড. আব্দুল আলীম খান বলেন, আমাদের তদন্তকাজ সম্পন্ন করার জন্য ১৫ দিন সময় দেওয়া হয়েছে। যেসব ইস্যু নিয়ে কাজ করতে বলা হয়েছে, সেগুলো নিয়ে আমরা স্বাধীনভাবে কাজ করছি। গত সোমবার রাতে তদন্ত কমিটি গঠনের পরই অন্য দুজনের সঙ্গে আমার আলাপ হয়েছিল। গত মঙ্গলবার আমরা বসেছিলাম। এটা নিয়েই এখনো কাজ করছি। আশা করি, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত শেষে প্রতিবেদন দিতে পারবো। পিএসসির অধীনে অনুষ্ঠিত পরীক্ষার প্রশ্নপত্র যেভাবে প্রণয়ন, ছাপা এবং কোন সেটে পরীক্ষা হবে তা নির্ধারণ করা হয়; তাতে প্রশ্নফাঁস খুবই কঠিন বলে মনে করেন পিএসসির কর্মকর্তারা।

তদন্ত কমিটিতে দায়িত্বপ্রাপ্ত দুজন নাম প্রকাশ না করে জানান, তারা চ্যানেল টোয়েন্টিফোর টেলিভিশনে প্রচারিত প্রতিবেদন দেখে, বিবেচনাযোগ্য সব বিষয়ে নোট নিয়েছেন। প্রশ্নপত্র প্রণয়নকারী থেকে কেন্দ্রে পৌঁছানো পর্যন্ত কোন কোন অংশীজন এসব কাজে জড়িত থাকেন, তাদের সবার আলাদা আলাদা অবস্থান নির্ণয় করা হচ্ছে।

কমিটির ওই দুজনের মধ্যে একজনের ভাষ্য, টিভিতে প্রচারিত প্রতিবেদনে যে ছেলেটিকে চাকরিপ্রার্থী করে চক্রের কাছে পাঠানো হয়েছিল, তিনি ফিরে এসে বলেছেন ৮৫টা প্রশ্ন কমন পড়েছে। অর্থাৎ, তাকে যে প্রশ্ন বা সাজেশন পড়ানো হয়েছিল, তার মধ্যে এগুলো কমন পড়েছে। সেক্ষেত্রে প্রকৃত প্রশ্ন তাকে হুবহু দেওয়া হয়েছিল কি না, সেটা তদন্তের বিষয়।

তিনি আরও বলেন, প্রশ্ন প্রণয়নকারীরা নিজেরা জানেন না যে তার তৈরি করা প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা হচ্ছে কি না। তারপরও অনেক সময় নিজেদের আত্মীয়-স্বজনদের সেটা সাজেশন আকারে দিয়ে দেন। সেখান থেকে অনেক সময় কমন পড়ে যেতে পারে। এজন্য প্রশ্ন প্রণয়নকারীদেরও সন্দেহের তালিকায় রেখেছি আমরা। বেসরকারি টিভি চ্যানেলের প্রচারিত প্রতিবেদনটিতে ১২ বছর ধরে বিসিএসসহ বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁসের ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি করা হয়েছে। গঠিত তদন্ত কমিটিকেও সব বিষয় নিয়েই তদন্ত করতেও এখতিয়ার দিয়েছে পিএসসি।

তবে পিএসসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানান, যে বিসিএসের চূড়ান্ত সুপারিশ এবং গেজেট হয়ে গেছে, সেটা নিয়ে তদন্ত এবং তা বাতিলের এখতিয়ার পিএসসির নেই। ফলে সেটা নিয়ে কাজ করা সম্ভবও না।

তদন্ত কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্তরা জানান, তাদের প্রথম নজর গত ৫ জুলাইয়ে রেলওয়ের উপ-সহকারী প্রকৌশলী পদের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের ঘটনাটি। সেদিন আদৌও প্রশ্নফাঁস হযেছিল কি না, সেটা সবার আগে বের করাটা জরুরি। সঙ্গে এ ঘটনায় কারা কারা জড়িত, সেটাও তুলে আনা হবে। ১২ বছর আগের প্রশ্নফাঁস বিষয়ে তদন্ত হবে কি না, হলে কীভাবে এমন প্রশ্নের জবাবে কমিটির একজন বলেন, এটা এখাতিয়ারে আছে কি না, তা দেখতে হবে। সুযোগ থাকলে সবকিছু নিয়েই কাজ করা হবে।

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে পিএসসির চেয়ারম্যান মো. সোহরাব হোসাইন বলেন, তদন্ত কমিটি কাজ করছে। সব বিষয়ে তাদের কাজের স্বাধীনতা রয়েছে। যাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন, সেটা করবেন। প্রতিবেদন হাতে পেলে কমিশন সভায় আনুষ্ঠানিকভাবে সিদ্ধান্ত হবে।
গত ৭ জুলাই রাতে প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ তুলে প্রতিবেদন প্রচার করে বেসরকারি টেলিভশন চ্যানেল টোয়েন্টিফোর। এর পরদিন ৮ জুলাই নিজেদের অবস্থান তুলে ধরে ব্যাখ্যা দেয় পিএসসি। সেখানে প্রশ্নফাঁস অসম্ভব বলে দাবি করে সংস্থাটি। যদিও ওই ব্যাখ্যার শেষদিকে উল্লেখ করা হয়, ‘তারপরও বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রমাণ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে’।

একইদিন রাতে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে পিএসসি। কমিটিতে প্রধান করা হয় পিএসসির যুগ্মসচিব ড. আব্দুল আলীম খানকে। কমিটির সদস্যসচিব করা হয় পরিচালক মোহাম্মদ আজিজুল হককে এবং একমাত্র সদস্য হিসেবে রাখা হয় আরেক পরিচালক দিলাওয়েজ দুরদানাকে। পরদিন ৯ জুলাই পিএসসি প্রশ্নফাঁসে জড়িত থাকার মামলায় সিআইডির হাতে গ্রেফতার পাঁচ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করে পিএসসি। তারা হলেন—পিএসসির উপ-পরিচালক আবু জাফর, উপ-পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম, সহকারী পরিচালক আলমগীর কবির, ডেসপাস রাইডার খলিলুর রহমান ও অফিস সহায়ক সাজেদুল ইসলাম।

তবে পিএসসির চেয়ারম্যান গত মঙ্গলবার বলেছেন, তদন্তে যদি প্রশ্ন ফাঁসের প্রমাণ পাওয়া যায়, তবে ৫ জুলাইয়ের রেল বিভাগের পরীক্ষা বাতিল করা হবে। সূত্র মতে, আবেদ একসময় পিএসসির চেয়ারম্যানের গাড়িচালক ছিলেন। তাকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কেউ কেউ ট্রলও করেছেন। আবেদের বিভিন্ন সময়ের কথা ও কর্মকাণ্ডগুলো ভাইরাল হয়ে যায়। শুধু প্রশ্ন ফাঁস করে একজন গাড়িচালক হয়ে কোটি কোটি টাকা আয় করেছেন, যেটি আবেদ নিজেই সিআইডির কাছে স্বীকার করেছেন।

প্রশ্ন ফাঁসের বিষয়টি চাউর হওয়ার পর মাঠে নামে সিআইডির সাইবার টিম। তারা রাতভর অভিযানে নামে। অভিযানে ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রথমে প্রশ্ন ফাঁস চক্রের অন্যতম হোতা নোমান সিদ্দিকীকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর তার কাছে বিভিন্ন তথ্যের ভিত্তিতে বাকিদের গ্রেপ্তার করে সিআইডি। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তাররা সিআইডির কাছে স্বীকার করেছেন যে তারা একটি প্রশ্ন ফাঁস চক্রের সংঘবদ্ধ চক্র। তারা বিভিন্ন গ্রেডের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করেছেন। যাদের কাছে প্রশ্ন সরবরাহ করা হয়, তাদের কাছ থেকে ৫ থেকে ১০ লাখ টাকা করেও তারা নিয়েছেন। চক্রটি শুধু প্রশ্নই ফাঁস করেনি, বিভিন্ন সময় এই প্রশ্নগুলো বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করেছে। এতে তারা মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।

তথ্য মতে, সম্প্রতি বিসিএসে প্রশ্ন ফাঁসকাণ্ডে দেশজুড়ে তোলপাড় চলছে। আর এবার এই প্রশ্ন ফাঁস কাণ্ডে জড়িয়ে পরেছে জনপ্রিয় অভিনেতা ও সংগীতশিল্পী তাহসান খানের মায়ের নাম। এই প্রশ্ন ফাঁস কাণ্ডে সবচেয়ে আলোচিত ব্যক্তি সৈয়দ আবেদ আলী। এ আবেদ আলী ছিলেন সংগীতশিল্পী তাহসান খানের মা ড. জিনাতুন নেসা তাহমিদা বেগমের গাড়ির চালক।

তাহমিদা বেগম যখন পিএসসির চেয়ারম্যান ছিলেন, তখন তার ব্যক্তিগত গাড়ির চালক ছিলেন সৈয়দ আবেদ আলী। ড. জিনাতুন নেসা তাহমিদা বেগম ছিলেন সরকারি কর্ম কমিশনের অষ্টম চেয়ারম্যান। তার দায়িত্বকালেই ২০০২ সালের ৯ মে তিনি পিএসসি চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব লাভ করেন এবং ২০০৭ সালের ৭ মে পর্যন্ত এ পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন।

প্রফেসর ড. জিনাতুন নেসা তাহমিদা বেগম যখন পিএসসির চেয়ারম্যান ছিলেন তখন সৈয়দ আবেদ আলী পিএসসির চেয়ারম্যানের ব্যক্তিগত গাড়িচালক হন। সে সময় থেকেই মূলত সৈয়দ আবেদ আলী প্রশ্নফাঁস চক্রে জড়িয়ে পড়েন। এরপর দীর্ঘসময় ধরে তিনি একটি চক্রের সঙ্গে প্রশ্ন ফাঁস করে আসছিলেন। তবে, ওই সময় তিনি ছিলেন ধরাছোঁয়ার বাইরে।

তবে, ২০১৪ সালে আবেদ আলীর বিরুদ্ধে নন-ক্যাডারের প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ ওঠে এবং তা প্রমাণিত হওয়ায় পিএসসির চাকরি থেকে তাকে বরখাস্ত করা হয়। উল্লেখ্য, সংগীতশিল্পী তাহসান খানের মা ড. জিনাতুন নেসা তাহমিদা বেগম দায়িত্ব নেয়ার পরই ২৪তম (২০০২-২০০৩) বিসিএস পরীক্ষার সবচেয়ে বড় প্রশ্নফাঁস কেলেঙ্কারির অভিযোগ ওঠে। এমনকি সেই পরীক্ষাও বাতিল করা হয়। সে বছর ২৪তম বিসিএসে পররাষ্ট্র ক্যাডারে প্রথম হয়েছিলেন জনপ্রিয় অভিনেতা ও সঙ্গীতশিল্পী তাহসান খান। পরে দুর্নীতির জন্য আবারও বিসিএসের ভাইভা অনুষ্ঠিত হলে বাদ পড়েন তাহসান খান।