দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: টানা তিনদিন বন্ধ থাকার পর সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূচকের বড় দরপতনে লেনদেন শেষ হয়েছে। এদিন ডিএসইতে দেড় বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন লেনদেন হয়েছে। পাশাপাশি কমেছে ৩৫৫ কোম্পানির শেয়ারদর। ফলে ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ১৫৯ কোটি টাকার। মুলত লেনদেনের শুরুতে শেয়ার বিক্রির চাপে সূচকের বড় দরপতন হয়েছে। ফলে ক্রেতা সংকট হাহাকার থাকায় লেনদেনে ভাটা পড়েছে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

এদিকে সরকারি চাকরিতে কোটা নিয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে তৈরি হওয়া পরিস্থিতির কারণে গত তিন কার্যদিবস বন্ধ থাকার পর সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে লেনদেন শুরু হয়েছে। অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জও (সিএসই) বড় ধরনের ক্রেতা সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে এ বাজারটিতেও মূল্য সূচকের বড় পতন হয়েছে। পাশাপাশি লেনদেনেও বেশি ধীরগতি দেখা যাচ্ছে।

একাধিক বিনিয়োগকারীর সাথে আলাপকালে বলেন, মরা পুঁজিবাজার কী ঘুড়াতে পারে। একদিকে পুঁজিবাজারে আস্থা ও তারল্য সংকট অন্যদিকে নতুন করে দেশের পরিস্থিতি নিয়ে বিনিয়োগকারীরা দু:চিন্তায় রয়েছেন। এ অবস্থায় বিনিয়োগকারীরা নতুন করে বিনিয়োগের ভরসা পাচ্ছেন না। তাছাড়া দীর্ঘদিন পুঁজিবাজার অস্থিতিশীল থাকায় বাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা সংকট চরমে। এ অবস্থায় বাজারকে স্থিতিশীল করতে হলে আগে বিনিয়োগকারীদের মাঝে আস্থা ফেরাতে হবে বলে তারা মনে করেন।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে নির্ধারিতে সময় সকাল ১১টাতেই লেনদেন শুরু হয়েছে। তবে লেনদেনের শুরুতেই বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দাম কমার তালিকায় চলে যায়। এতে লেনদেন শুরু হতেই ডিএসইর প্রধান সূচক ঋণাত্মক হয়ে পড়ে। লেনদেনের সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বাজারে ক্রেতা সংকট বাড়তে থাকে। বিপরীতে বাড়তে থাকে বিক্রির চাপ।

ফলে একের পর এক কোম্পানির শেয়ারে ক্রয় আদেশের ঘর শূন্য হয়ে পড়ে। এতে লেনদেনের সময় গাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে সূচকের পতনের মাত্রা। ফলে দিন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ৯৫.৬৬ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৩৫০ পয়েন্টে অবস্থান করছে। ডিএসই শরিয়া সূচক ২১৮৭ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ১৬৯ পয়েন্টে এবং ডিএস ৩০ সূচক ৩৭.২৮ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৯০৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

ডিএসইতে মোট ৩৮০টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে ২০টি কোম্পানির, কমেছে ৩৫৫টির এবং অপরিবর্তিত আছে ১৫টির। ডিএসইতে এদিন মোট ১৫৯ কোটি ৩৭ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৩৭১ কোটি ৫২ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট।

অন্যদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সিএসসিএক্স সূচক ১০৮.৪০ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৯ হাজার ২৬২ পয়েন্টে। সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১৭৭.৯২ পয়েন্ট কমে ১৫ হাজার ৩৮৮ পয়েন্টে, শরিয়া সূচক ১৩.৪৭ পয়েন্ট কমে ৯৯৯ পয়েন্টে এবং সিএসই৩০ সূচক ১৯৪.৩৭ পয়েন্ট কমে ১১ হাজার ৯৯৮ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

সিএসইতে ১৪২টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে ৬টি কোম্পানির, কমেছে ১২৬টির এবং অপরিবর্তিত আছে ১০টির। দিন শেষে সিএসইতে ২ কোটি ৫১ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ১০ কোটি ৮৫ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট।