মনির হোসেন, দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) দীর্ঘদিন পর ব্যাংক খাতের শেয়ারে উত্থানের পরও উল্টোপথে হাটছে পুঁজিবাজার। ফলে ব্যাংক খাতের শেয়ারের দর বাড়ায় পরও সূচকের পতন নিয়ে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। তবে বর্তমান বাজারের পরিস্থিতি নিয়ে চরম অনিশ্চিয়তা বিনিয়োগকারীরা। কারণ দিন যতই যাচ্ছে বিনিয়োগকারীদের লোকসানের পাল্লা ততই ভারী হচ্ছে। এ অবস্থায় বিনিয়োগকারীরা কী করবেন বুঝে উঠতে পারছেন না। তাছাড়া পুঁজিবাজারের ভবিষ্যত নিয়ে শঙ্কায় বিনিয়োগকারীরা।

একাধিক বিনিয়োগকারীর সাথে আলাপকালে বলেন, বর্তমান বাজার আজ ভাল তো কাল খারাপ। এ অবস্থার মধ্যে বছরের পর বছর পার করলেও নিয়ন্ত্রক সংস্থা একটি স্থিতিশীল পুঁজিবাজার তৈরি করতে পারেননি। আর নিয়ন্ত্রক সংস্থা আগে মিড়িয়ার সামনে বাজার নিয়ে ভাল মন্ধা বললেও এখন তো মুখ খুলছেন না।

অভিজ্ঞ বিনিয়োগকারী কাজী হোসাইন আলী বলেন, বাজারের এবস্থা এখন এমন পরিস্থিতি যে কয়েকটি কোম্পানির শেয়ারে ঘিরে লেনদেন হচ্ছে। অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারে ক্রেতা সংকট দেখা যাচ্ছে। এর ফলে বাজারের প্রতি আস্থা বিমুখ হচ্ছে বিনিয়োগকারীদের। এ অবস্থায় বাজারকে স্থিতিশীল পুঁজিবাজার করতে হলে সব মহলে এক্যবদ্ধ ভাবে পুঁজিবাজার নিয়ে কাজ করতে হবে। প্রথমই নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে বাজার ইস্যুতে কাজ করতে হবে। বিনিয়োগকারীদের মাঝে আস্থা ফেরাতে হবে। কারণ বর্তমান বাজার যে অবস্থায় এসেছে তাতে শেয়ার ক্রয়ের উপযুক্ত সময়। তবে বিনিয়োগকারীরা আস্থা না পাওয়ার নতুন করে বিনিয়োগ যেতে সাহস পাচ্ছে না।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) লেনদেন হওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ২৬১টি প্রতিষ্ঠানের দর কমেছে। বিপরীতে মাত্র ৮৮টির দর বেড়েছে। এছাড়া, পতনের তালিকায় আজ বড় মূলধনী কোম্পানির বেশিরভাগই ছিল নেতিবাচক প্রবণতায়। যেগুলোর মধ্যে ছিল লাফার্জ হোলসিম, বেক্সিমকো ফার্মা, বৃটিশ অ্যামেরিকান ট্যোবাকো, বিকন ফার্মা, ব্র্যাক ব্যাংক, স্কয়ার ফার্মা, ইস্টার্ন ব্যাংক, বেস্ট হোল্ডিং, ওরিয়ন ফার্মা ও ন্যাশনাল ব্যাংক।

জানা গেছে, দিনশেষে ডিএসই ব্রড ইনডেক্স আগের দিনের চেয়ে ২৯ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৩৮৩ পয়েন্টে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৫ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১ হাজার ১৭৭ পয়েন্টে এবং ডিএসই–৩০ সূচক ১১ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১ হাজার ৯২১ পয়েন্টে।

দিনভর লেনদেন হওয়া ৩৯২ কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৮৮ টির, দর কমেছে ২৬১ টির এবং দর অপরিবর্তিত রয়েছে ৪৩ টির। ডিএসইতে ৪৮৮ কোটি ৩৮ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। যা আগের কার্যদিবস থেকে ৮ কোটি ৯৬ লাখ টাকা কম। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৪৯৭ কোটি ৩৪ লাখ টাকার ।

অপরদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ২৮ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ৩৮৬ পয়েন্টে। সিএসইতে ২০৭ টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৫৮ টির দর বেড়েছে, কমেছে ১১৭ টির এবং ৩২ টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। সিএসইতে ১৪ কোটি ৮৭ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।