ব্যাংক খাতে ভর করে পুঁজিবাজারে সূচক ও লেনদেনের বড় উত্থান
মনির হোসেন, দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূচকের বড় উত্থানে লেনদেন শেষ হয়েছে। তবে ব্যাংক খাতের শেয়ারে ভর করে সূচকেরে বড় উত্থান হয়েছে। এছাড়া শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে পুঁজিবাজারের ধারাবাহিক সূচকের উত্থানে আস্থা ফিরছে বিনিয়োগকারীদের। বিনিয়োগকারীরা তাদের হারানো পুঁজি ফিরে পাওয়ার স্বপ্নে বিভোর। যার প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে গত চার কার্যদিবসে পুঁজিবাজারে লেনদেন ও মূল্য সূচক বাড়ার মাধ্যমেই। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
আজ অন্তবর্তী সরকারের প্রথম কার্যদিবসে ডিএসইর সূচক বেড়েছে ৯১ পয়েন্ট। আর লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ১০ কোটি টাকা। এটি গত দুই বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ লেনদেন। এর আগে ২০২২ সালের ৭ সেপ্টেম্বর ডিএসইতে লেনদেন হয়েছিল ২ হাজার ২৯৬ কোটি টাকা। সেই হিসাবে ডিএসইতে গত দুই বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে।
একাধিক বিনিয়োগকারীর সাথে আলাপকালে বলেন, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে পুঁজিবাজারের ধারাবাহিক সূচকের উত্থানে আস্থা ফিরছে বিনিয়োগকারীদের। কারণ রুগ্ন পুঁজিবাজারে ধারাবাহিক সূচকের উত্থানে প্রাতিষ্ঠানিক ও বড় বিনিয়োগকারীরা সক্রিয় হওয়ার বিনিয়োগকারীরা বাজারমুখী হয়ে লেনদেন বাড়িয়ে দিয়েছেন।
যার প্রমান স্বরুপ লেনদেন ২ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। তবে গত তিন বছর পুঁজিবাজার একটি সিন্ডিকেট চক্রের কাছে জিম্মি ছিল। এই সিন্ডিকেট চক্র সাধারন বিনিয়োগকারীদের হাজার হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। ফলে পুঁজিবাজার টানা দরপতন ছিলো।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পুঁজিবাজারে এতোদিন তারল্য সংকটের দোহাই বাজারকে অস্থিতিশীল করছে একটি চক্র। তখন লেনদেন ৫০০ কোটি ছাড়ানো ছিল রীতিমতো দুস্কর। তবে পুঁজিবাজারের চারপাশে কেবলই ছিল তারল্যের হাহাকার। অথচ দুই-চার দিনের ব্যবধানেই এখন পুঁজিবাজার তারল্য প্রবাহে সয়লাব। ফলে আশা ও প্রত্যাশা নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে পথে পুঁজিবাজার।
অন্তবর্তী সরকারে যিনি পুঁজিবাজার তথা অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নিয়েছেন, তিনি পুঁজিবাজারের একজন বিশ্লেষক-বোদ্ধা। যার উপর নির্ভর করে পুঁজিবাজারের প্রাতষ্ঠানিক ও ছোট-বড় বিনিয়োগকারী ফিরছেন বড় আস্থা ও ভরসা নিয়ে। বাজার সংশ্লিষ্টরা এখন দেশের শেয়ারবাজার নিয়ে বড়ই আশাবাদী।
জানা গেছে, দিনশেষে ডিএসই ব্রড ইনডেক্স আগের দিনের চেয়ে ৯১ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৬ হাজার ১৫ পয়েন্টে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১০ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১ হাজার ২৮৫ পয়েন্টে এবং ডিএসই–৩০ সূচক ৫১ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ২ হাজার ১৮৪ পয়েন্টে। দিনভর লেনদেন হওয়া ৪০০ কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১৭৩ টির, দর কমেছে ২০৭ টির এবং দর অপরিবর্তিত রয়েছে ২০ টির।
ডিএসইতে ২ হাজার ১০ কোটি ৮ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। যা আগের কার্যদিবস থেকে ৪০৩ কোটি ৬১ লাখ টাকা বেশি। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ৬০৬ কোটি ৪৭ লাখ টাকার ।
অপরদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৪৮২ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭ হাজার ২৮২ পয়েন্টে। সিএসইতে ২৯৫ টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৯৪ টির দর বেড়েছে, কমেছে ৮৬ টির এবং ১৫টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। সিএসইতে ৩০ কোটি ৮৯ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।