শহীদুল ইসলাম, দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূচকের বড় উত্থান হলেও অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারের দরপতনে লেনদেন শেষ হয়েছে। মুলত ব্যাংক ও আর্থিক খাতের শেয়ারে ভর করে সূচক বাড়লেও অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারের সব্বোর্চ দরপতন হয়েছে। ফলে বাজারের উত্তাল পাতাল অবস্থা নিয়ে কিছুটা শঙ্কিত বিনিয়োগকারীরা। গত এক সপ্তাহে সূচক বাড়লেও অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারের দর নতুন করে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত দরপতন হয়েছে।

ফলে নতুন করে পুঁজি হারানোর আতঙ্কে ভুগছেন বিনিয়োগকারীরা। এ অবস্থায় বিনিয়োগকারীরা কি ভাবে পুঁজি নিরাপদ রাখবেন তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়ছেন। ফলে পুঁজিবাজারের এ উত্থাল পাতাল অবস্থাতে আতঙ্ক কাঠছে না বিনিয়োগকারীদের। তারা দীর্ঘদিন ধরে একটি স্থিতিশীল বাজারের দাবি জানিয়ে আসছেন। এদিন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) প্রধান সূচক বেড়েছে প্রায় ৮৫ পয়েন্ট। তবে ডিএসইতে আগের কার্যদিবসের ব্যবধানে লেনদেন বেড়েছে। ডিএসই সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

একাধিক বিনিয়োগকারীর সাথে আলাপকালে বলেন, পুঁজিবাজার নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মাঝে এখনো আতঙ্ক কাটছে না। কারণ শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর চার কার্যদিবসে ব্যাংক-ফাইন্যান্স খাতের শেয়ারে ভর করে ডিএসইতে সূচকের বড় উত্থান হলেও অন্যান্য খাতের শেয়ারের দরপতন হয়েছে। তাই বিনিয়োগকারীরা স্থিতিশীল বাজারের দাবী জানিয়েছে। যেখানে তারা নিরাপদে বিনিয়োগ করতে পারবেন।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর চার কার্যদিবসে ডিএসইর সূচক বেড়েছে ৭৮৬ পয়েন্ট। এরপর কারেকশনের নামে দুই কার্যদিবসে সূচক কমেছে ১৪৭ পয়েন্ট। বিপরীতে আজ সূচক বেড়েছে ৮৬ পয়েন্ট। আগের দুইদিন পুঁজিবাজারে বড় পতন হলেও আজ লেনদেন শুরু হয়েছে ইতিবাচক প্রবণতায়।

তবে সেল প্রেসারে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বেশিক্ষণ টিকেনি। লেনদেনের ২২ মিনিটের মাথায় ডিএসইর সূচক ২২ পয়েন্ট বেড়ে নিচে টানা নামতে থাকে। সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে সূচক আগের দিনের চেয়ে ১৪ পয়েন্ট কমে যায়। তারপর দুপুর সোয়া ১২টায় ডিএসইর সূচক ৫৮ পয়েন্ট বেশি উঠে লেনদেন হয়। তারপর আবারও পতন। ১২টা ৫০ মিনিটে সূচক আগের দিনের চেয়ে ১০ পয়েন্ট বেশি বেড়ে লেনদেন হয়। তবে বেলা ১টার পর সূচক আবারও ঊর্ধ্বমুখী হতে থাকে। যা শেষ পর্যন্ত বজায় থাকে। দিনশেষে সূচকের বৃদ্ধি স্থির হয় প্রায় ৮৫ পয়েন্টে।

জানা গেছে, দিনশেষে ডিএসই ব্রড ইনডেক্স আগের দিনের চেয়ে ৮৪ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৯৫২ পয়েন্টে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১৪ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১ হাজার ২৭০ পয়েন্টে এবং ডিএসই ৩০ সূচক ৬৩ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ২ হাজার ১৯৭ পয়েন্টে। দিনভর লেনদেন হওয়া ৩৯৭ কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১১৬ টির, দর কমেছে ২৩৯ টির এবং দর অপরিবর্তিত রয়েছে ৪২ টির।

ডিএসইতে ১ হাজার ২৪৩ কোটি ৯৮ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। যা আগের কার্যদিবস থেকে ২২৮ কোটি ৯৭ লাখ টাকা বেশি। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ১৫ কোটি ১ লাখ টাকার। অপরদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১৩২ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭ হাজার ১৪২ পয়েন্টে। সিএসইতে ২৪০ টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৭১ টির দর বেড়েছে, কমেছে ১৪৮ টির এবং ২১টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। সিএসইতে ১৮ কোটি ১৩ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।