দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের কোম্পানি ন্যাশনাল টি কোম্পানি লিমিটেডের প্রস্তাবিত মূলধন বাড়াতে শেয়ার ইস্যুর সাবস্ক্রিপশন ১৯ আগস্টের পরিবর্তে আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর শেষ হবে। গত ১৯ জুন এ সাবস্ক্রিপশন শুরু হয়। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

জানা গেছে, বাংলাদেশ সরকার, ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি) ও সাধারণ বীমা করপোরেশনের অনুকূলে ১ কোটি ২৪ লাখ ৮০ হাজার ১২০টি শেয়ার ইস্যু করা হবে। এক্ষেত্রে বিদ্যমান প্রতিটি শেয়ারের বিপরীতে নতুন করে ৪ দশমিক ৪৩টি শেয়ার ইস্যু করা হবে। অন্যান্য পরিচালকের অনুকূলে ১৩ লাখ ৮০ হাজার ৮২৬টি শেয়ার ইস্যু করা হবে।

এক্ষেত্রে বিদ্যমান প্রতিটি শেয়ারের বিপরীতে নতুন ৩ দশমিক ২১টি শেয়ার ইস্যু করা হবে। উদ্যোক্তা পরিচালক বাদে অন্যান্য শেয়ারহোল্ডারের জন্য ৯৫ লাখ ৩৯ হাজার ৫৪টি শেয়ার ইস্যু করা হবে। এক্ষেত্রে বিদ্যমান প্রতিটি শেয়ারের বিপরীতে নতুন ২ দশমিক ৮৫টি শেয়ার ইস্যু করা হবে। সব মিলিয়ে কোম্পানিটি মোট ২ কোটি ৩৪ লাখ শেয়ার ইস্যু করবে।

এক্ষেত্রে বিদ্যমান প্রতিটি শেয়ারের বিপরীতে নতুন ৩ দশমিক ৫৫টি শেয়ার ইস্যু করা হবে। ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের ২ কোটি ৩৪ লাখ শেয়ার ১১৯ টাকা ৫৩ পয়সায় ইস্যু করা হবে। এক্ষেত্রে শেয়ারপ্রতি প্রিমিয়াম নির্ধারণ করা হয়েছে ১০৯ টাকা ৫৩ পয়সা। শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে কোম্পানিটির মূলধন ২৭৯ কোটি ৭০ লাখ ২ হাজার টাকা বাড়ানো হবে। কারখানার উন্নয়ন, চলতি মূলধন খাতে অর্থায়ন ও ব্যাংক ঋণ পরিশোধের জন্য এ প্লেসমেন্ট শেয়ার ইস্যু করা হবে।

ন্যাশনাল টির সর্বশেষ ঋণমান স্বল্পমেয়াদে ‘এ মাইনাস’ ও দীর্ঘমেয়াদে ‘এসটি-থ্রি’। ৩০ জুন সমাপ্ত ২০২৩ হিসাব বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ পর্যন্ত অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন এবং রেটিং ঘোষণার দিন পর্যন্ত প্রাসঙ্গিক অন্যান্য পরিমাণগত ও গুণগত তথ্যের ওপর ভিত্তি করে এ প্রত্যয়ন করেছে ক্রেডিট রেটিং ইনফরমেশন অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেড (সিআরআইএসএল)।

১৯৭৯ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ন্যাশনাল টির অনুমোদিত মূলধন ২৫ কোটি ও পরিশোধিত মূলধন রয়েছে ৬ কোটি ৬০ লাখ টাকা। পুঞ্জীভূত লোকসান ৩৮ কোটি ৪১ লাখ টাকা। কোম্পানিটির মোট শেয়ার সংখ্যা ৬৬ লাখ।

এর মধ্যে উদ্যোক্তা পরিচালকদের হাতে রয়েছে ৪৫ দশমিক ২৬ শতাংশ শেয়ার। এছাড়া সরকরের কাছে ৪ দশমিক ৩৩, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ১৪ দশমিক ৭৫ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে বাকি ৩৫ দশমিক ৬৬ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। সর্বশেষ গতকাল কোম্পানিটির সর্বশেষ শেয়ারদর ছিল ২৯৩ টাকা ৯০ পয়সা।

চলতি ২০২৩-২৪ হিসাব বছরের তিন প্রান্তিকে (জুলাই-মার্চ) কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ১০৪ টাকা ১০ পয়সা, আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ৪৬ টাকা ২ পয়সা। গত ৩১ মার্চ শেষে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট দায় দাঁড়িয়েছে ১৫২ টাকা ২৯ পয়সায়।

সর্বশেষ ৩০ জুন সমাপ্ত ২০২৩ হিসাব বছরে বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ না দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কোম্পানিটি। আলোচ্য হিসাব বছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ৯৬ টাকা ২৪ পয়সা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ৩৪ টাকা ৪৭ পয়সা। গত ৩০ জুন শেষে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট দায় দাঁড়িয়েছে ৪৮ টাকা ১৯ পয়সায়।

সমাপ্ত ২০২১-২২ হিসাব বছরে বিনিয়োগকারীদের জন্য সাড়ে ৭ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে ন্যাশনাল টির পর্ষদ। আলোচ্য হিসাব বছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ৩৪ টাকা ৪৭ পয়সা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ৩১ টাকা ৬৮ পয়সা। ৩০ জুন সমাপ্ত ২০২০-২১ হিসাব বছরে কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। আলোচ্য হিসাব বছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ৩১ টাকা ৬৮ পয়সা, আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ৫৫ টাকা ৭১ পয়সা।

এদিকে ন্যাশনার টি কোম্পানি লিমিটেডের চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন শেখ কবির হোসেন। বুধবার (১৪ আগস্ট) প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পর্ষদ বরাবর তিনি পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন। পদত্যাগপত্রে তিনি উল্লেখ করেন, আমার স্বাস্থ্যগত এবং ব্যক্তিগত কারণে আমার পক্ষে ন্যাশনার টি কোম্পানি লিমিটেডের চেয়ারম্যানের পদে দায়িত্ব পালন করা সম্ভব হচ্ছে না বিধায় আমি ন্যাশনাল টি কোম্পানির চেয়ারম্যানের পদ হতে ২০২৪ সালের আগস্ট মাসের ১৪ তারিখ থেকে পদত্যাগ করিলাম।