দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর জানিয়েছেন, ইসলামী ব্যাংকের পর্ষদ ভেঙে দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। দুই-একদিনের মধ্যে তা ভেঙে দেয়া হবে। আজ বুধবার সংবাদ সম্মেলন এ কথা বলেন তিনি। আহসান এইচ মনসুর বলেন, বর্তমান পর্ষদ ভেঙে দিয়ে সরকারের সহযোগিতায় ছোট আকারে বোর্ড গঠন করে দেয়া হবে।

গভর্নর বলেন, সেখানে স্বতন্ত্র পরিচালক দেয়া হবে। পরবর্তীতে পুরোনো পরিচালকরা দুই শতাংশ শেয়ার নিয়ে আসতে পারলে তাদের বোর্ডে জায়গা দেয়া হবে। গত পাঁচ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশের অন্যতম আলোচিত বিষয় ইসলামী ব্যাংকের মালিকানা। বিতর্কিত এস আলম গ্রুপের হাত থেকে ইসলামী ব্যাংককে রক্ষা করতে নানামুখী উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দিতে বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে চিঠি দেয় ব্যাংকটির সর্বস্তরের কর্মকর্তা- কর্মচারীরা।

গভর্নরকে উল্লেখ করে চিঠিতে বলা হয়: ‘ইসলামী ব্যাংকের হারানো গৌরব পুনরুদ্ধার, ব্যাংকের সব স্টেকহোল্ডারের স্বার্থ রক্ষা, তাদের আস্থা ফিরিয়ে আনা এবং ব্যাংকের স্বাভাবিক কার্যক্রম পুনরায় চালু করার জন্য ব্যাংক কোম্পানি আইন ৪৭ ধারা মোতাবেক ব্যাংকের বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দিয়ে সৎ ও দুর্নীতিমুক্ত, ইসলামী ব্যাংকের প্রতি সহানুভূতিশীল বিজ্ঞ ব্যক্তিবর্গ অথবা প্রয়োজনে সাবেক পরিচালকদের মধ্য হতে কিছু সংখ্যক ব্যক্তির সমন্বয়ে বোর্ড পুনর্গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে আপনার আশু পদক্ষেপ কামনা করছি।’ ২০১৭ সালে ইসলামী ব্যাংক দখলে নেয় এস আলম গ্রুপ। ব্যাংকটির মালিকানা নেওয়ার পর থেকে নামে বেনামে আলোচিত গ্রুপটি ৭৫ হাজার কোটি টাকা বের করে নিয়েছে বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে গভর্নর বলেন, ব্যাংক থেকে এস আলমের নেওয়া সব ঋণ পরিশোধ না হওয়া পর্যন্ত তাদের শেয়ার সরকারের জিম্মায় থাকবে। কী পরিমাণ শেয়ার আছে তা খতিয়ে দেখতে বাংলাদেশ ব্যাংক কাজ করছে বলেও জানান গভর্নর। তিনি বলেন, তাদের নামে থাকা শেয়ার বের করার সহজ হবে। তবে বেনামে থাকা শেয়ার বের করতে কিছুটা সময় লাগবে। এস আলমের লুট করা টাকা উদ্ধারে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বিএফআইইউ ও সিআইডি একসঙ্গে কাজ করবে বলেও জানান গভর্নর।