দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূচকের বড় উত্থানের মধ্যে দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। তবে টানা পাঁচ কার্যদিবস দরপতনের পর ব্যাংক খাতের শেয়ারে ভর করে সূচকের উত্থান হয়েছে। মুলত ব্যাংক খাতে এস আলম গ্রুপের প্রভাব মুক্তির খবরে ৫ ব্যাংকের শেয়ারে চমক দেখিয়েছে। এসব ব্যাংকের শেয়ারে বিনিয়োগকারীদের নতুন করে আগ্রহ দেখা গেছে। আগেরদিন বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছিল পাঁচ ব্যাংককে এস আলমের প্রভাব মুক্ত করা হবে। ওই পাঁচ ব্যাংকই শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত। প্রভাবমুক্তির খবরে আজ বৃহস্পতিবার ব্যাংকগুলো শেয়ার দর বেড়েছে উল্লেখযোগহারে। প্রভাব মুক্ত হওয়ার খবরে ব্যাংকগুলোর শেয়ারে আজ বিনিয়োগকারীদের এমন আগ্রহ তৈরি হয়েছে, লেনদেনের এক পর্যায়ে ব্যাংকগুলোর শেয়ার বিক্রেতাসংটে পড়ে হল্টেড হয়ে গেছে।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের এক ঘোষণার প্রেক্ষিতে ব্যাংকগুলোতে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বৃদ্ধি পেয়েছে। মুলত শীঘ্রই ব্যাংকগুলোকে এস আলমের প্রভাব মুক্ত করা হবে। ইতোমধ্যে ইসলামী ব্যাংকে নতুন পাঁচ স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এর আগে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন এই ব্যাংকগুলো থেকে শেয়ার হস্তান্তর বা বিক্রিতে এস আলম এবং তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এস আলমের হাত থাকা পাঁচ ব্যাংকের শেয়ারে আজ বিক্রেতা উধাও হয়ে যায়। ব্যাংকগুলো হলো: সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক এবং গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক।

ডিএসইর তথ্য অনুসারে, আজ সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের শেয়ারের দাম ১০ শতাংশ বেড়ে ১১ টাকায় পৌঁছেছে। ইসলামী ব্যাংকের শেয়ারের দাম ৯.৯৭ শতাংশ বেড়ে ৪৩ টাকায় হয়েছে। ইউনিয়ন ব্যাংকের শেয়ার ৯.৩৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৭ টাকায়, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের শেয়ার ৯.২৩ শতাংশ বেড়ে ৭.১ টাকায় এবং ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের শেয়ার ৮.৬৯ শতাংশ বেড়ে ৭.৫ টাকায় হয়েছে।
ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৯২ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ৬৯৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৪২ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ৪৭ পয়েন্টে উঠে এসেছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১৭ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ২১৯ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

মূল্যসূচকের বড় উত্থানের পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও বেড়েছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৭৭৮ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৫৩৬ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন বেড়েছে ২৪১ কোটি ৭২ লাখ টাকা। এই লেনদেনে সব থেকে বেশি অবদান রেখেছে গ্রামীণফোনের শেয়ার। কোম্পানিটির ৮৪ কোটি ৬৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ব্র্যাংক ব্যাংকের ৩৬ কোটি ৯১ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ২৮ কোটি ৫৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ।

অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ১৭৫ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৯৫টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৭০টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১১৩টির এবং ১২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১৩ কোটি ২২ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১৩ কোটি ১৬ লাখ টাকা।