দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: অবশেষে পুঁজিবাজারের সংবেদনশীল প্রতিষ্ঠান সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিডিবিএল) পদত্যাগ করেছেন আওয়ামীলীগ নেতা ও প্রতিষ্ঠানটি চুষে খাওয়া একেএম নুরুল ফজল বুলবুল। এর মাধ্যমে পতন হলো ১ যুগের বেশি সময় ধরে পরিচালকের পদ কাঁমড়ে রাখা এক লুটেরার। গত বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্যগত কারন দেখিয়ে সিডিবিএল এর পর্ষদের কাছে পদত্যাগ পত্র জমা দিয়েছেন তিনি। এর আগে গত ১৯ আগস্ট বুলবুলকে নিয়ে ‘সিডিবিএলের নুরুল ফজল বুলবুল পুঁজিবাজারের এক আতঙ্কের নাম’ শীর্ষক সংবাদ প্রকাশ করে দৈনিক দেশ প্রতিক্ষণ।

সংবাদ প্রকাশের পর হইচই পড়ে যায় পুঁজিবাজারে। এ নিয়ে বিভিন্ন জন নানা প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। নুরুল ফজল বুলবুল সিডিবিএলের পর্ষদে ১৩ বছর ধরে ছিলেন। এছাড়া ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড (সিএমএসএফ) ও সেন্ট্রাল কাউন্টারপার্টি বাংলাদেশ লিমিটেডে (সিসিবিএল) ঢুকে পড়েন। বুলবুল শুরুতে এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম মজুমদারের সঙ্গে সখ্যতা, আওয়ামীলীগ নেতা ও লবিং করে জায়গা করে নেন সিডিবিএলে। বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসের (বিএবি) প্রতিনিধি পরিচালক হিসেবে সিডিবিএলে ঢুকেন। এরপরে সিডিবিএলের প্রতিনিধি হিসেবে সিএমএসএফ ও সিসিবিএলে ঢুকেছেন।

ডিএসইর এক সিনিয়র ট্রেকহোল্ডার বলেন, বুলবুল পুঁজিবাজারে ধীরে ধীরে আতঙ্কের নাম হয়ে উঠছিলেন। এরইমধ্যে তার নামে অনেক অনিয়ম ও আধিপত্য বিস্তারের কথা বেরিয়েছে। যেটা সম্ভব হয়েছে স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগ করার কারনে। কেউই তার শেয়ারবাজারে আধিপত্য বিস্তারকে প্রতিরোধ করতে পারছিল না। তবে এখন সময় এসেছে। গত ১ দশকে সিডিবিএলে কি অনিয়ম করেছে, তা খুঁজে শাস্তির আওতায় আনা হবে। একইসঙ্গে সিসিবিএল ও সিএমএসএফে কোন অনিয়ম করেছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হবে।

বুলবুল ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে শেয়ার সংরক্ষণকারী সিডিবিএলে দীর্ঘদিন ধরে একটি চক্র গড়ে তুলেছেন। যারা সার্ভার থেকে তথ্য পাচারসহ বিভিন্ন অনিয়মে জড়িত বলে অভিযোগ আছে। এই বুলবুল ফজল ২০০১ সালে আওয়ামীলীগের জাতীয় নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণার কমিটির দায়িত্বে ছিলেন। ওই নির্বাচনে আওয়ামীলীগের বড় পরাজয় হয়। পরবর্তীতে আওয়ামীলীগের তদন্তে বুলবুলের বিরুদ্ধে প্রচার-প্রচারনার নামে তহবিল তসরুপের প্রমাণ মেলে। যে কারনে ওইসময় তাকে আওয়ামীলীগ থেকে বহিস্কার করা হয়।

ডিএসইর আরেক সিনিয়র ট্রেকহোল্ডার বলেন, বুলবুলের পুঁজিবাজারে কোন অবদান নাই। অথচ সে এই বাজারের ৩টি প্রতিষ্ঠানের পর্ষদে। যে প্রতিষ্ঠানগুলো শত শত কোটি টাকার মালিক। ওইসব অর্থ লোপাটের জন্যই তারমতো একজন লোককে পর্ষদে বসানো হয়েছে। যিনি কোন কারন ছাড়াই ওইসব প্রতিষ্ঠানের অর্থে নিয়মিত বিদেশ ভ্রমন করেন।