মুশফিক রায়হান : সম্প্রতি দেশে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে খেলাঘর ক্লাব ও হাজি মার্কেট যুব সমাজের উদ্যোগে বন্যার্তদের মাঝে উপহার সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। ক্লাবের সদস্যরা সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে এই মানবিক কার্যক্রম সফলভাবে সম্পন্ন করেছেন। তাদের এই উদ্যোগ বন্যার্তদের মাঝে নতুন আশার সঞ্চার করেছে এবং ক্লাবের সামাজিক দায়িত্ববোধের একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেছে।

খেলাঘর ক্লাব ও হাজি মার্কেট যুব সমাজের পক্ষ থেকে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার মানুষের মাঝে উপহার সামগ্রী বিতরণ করা হয়। উপহার হিসেবে বিতরণ করা হয় চাল, ডাল, তেল, শুকনো খাবার, বিশুদ্ধ পানি, ওষুধ, এবং অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী। ক্লাবের সদস্যরা স্বেচ্ছাসেবকের ভূমিকায় উপহার বিতরণে অংশ নেন এবং নিজেরাই বন্যাকবলিত এলাকাগুলোতে পৌঁছে এসব সামগ্রী বিতরণ করেন।

ক্লাবের এই উপহার বিতরণ কার্যক্রমে স্থানীয় মানুষজনের মাঝে ব্যাপক সাড়া পড়ে। বিশেষ করে যেসব অঞ্চলে সরকারি সহায়তা তেমনভাবে পৌঁছাতে পারেনি, সেসব অঞ্চলের মানুষজন খেলাঘর ক্লাব ও হাজি মার্কেট যুব সমাজের এই উদ্যোগকে অত্যন্ত কৃতজ্ঞতার সঙ্গে গ্রহণ করেছেন। বন্যায় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যখন মানুষের চোখে মুখে হতাশা, তখন এই উপহার তাদের মাঝে নতুন করে আশা জাগিয়েছে।

হাজি মার্কেট খেলাঘর ক্লাবের সভাপতি আব্দুল হক খান বলেন, ‘আমাদের ক্লাব সবসময় সমাজের কল্যাণে কাজ করে আসছে। আমরা বিশ্বাস করি, মানবতার সেবা করা আমাদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের কষ্ট লাঘব করার জন্যই আমরা এই উদ্যোগ নিয়েছি। আমরা চাই, সবার সহযোগিতায় এই ধরনের কার্যক্রমকে আরও বিস্তৃত করতে।”

তিনি আরও বলেন, “দেশে-বিদেশে থাকা রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের আর্থিক অনুদানে আমাদের সদস্যরা একত্রে কাজ করে এই উপহার বিতরণ কার্যক্রম সফল করেছেন। তাদের এই প্রচেষ্টা সমাজে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে এবং আমরা আশা করি, ভবিষ্যতেও এ ধরনের উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে।”

সর্বাত্মক সহযোগী আবুল কালাম মামুন বলেন, বন্যা দুর্গতদের সহায়তার লক্ষ্যে আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। তাদের জরুরী ও প্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রী ক্রয় এবং যাতায়াতের জন্য আমরা নৌকার ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। এই উদ্যোগের মাধ্যমে আমরা তাদের কাছে সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করছি। আপনারা সবাই এই কাজে সহযোগিতা করবেন বলে আশা করছি।

উপহার সামগ্রী হাতে পেয়ে বন্যাকবলিত এলাকাগুলোর মানুষজন ক্লাব ও যুব সমাজের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। একজন উপহারগ্রহীতা বলেন, “বন্যায় আমরা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। খেলাঘর ক্লাব ও হাজি মার্কেট যুব সমাজের দেওয়া এই উপহার আমাদের নতুন করে বেঁচে থাকার সাহস জুগিয়েছে। আমরা তাদের প্রতি চিরকৃতজ্ঞ।”

অনেকেই ক্লাব ও যুব সমাজের এই উদ্যোগকে অনুসরণ করে বন্যার্তদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য অন্যান্য সংগঠন ও ব্যক্তিবর্গকে উৎসাহিত করেছেন। তারা মনে করেন, এ ধরনের উদ্যোগ মানুষকে একে অপরের প্রতি সহানুভূতিশীল হতে সাহায্য করে এবং সমাজে একতা সৃষ্টি করে।

খেলাঘর ক্লাব ও হাজি মার্কেট যুব সমাজের উপহার বিতরণ কার্যক্রম সফলভাবে সম্পন্ন হলেও এখানেই থেমে থাকতে চায় না তারা। ক্লাব ও যুব সমাজের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ভবিষ্যতে এ ধরনের মানবিক কার্যক্রমকে আরও বিস্তৃত ও কার্যকর করতে পরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে।

এই উদ্যোগটি কেবলমাত্র উপহার বিতরণের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না; এটি সমাজের প্রতি মানুষের দায়িত্ববোধের একটি শক্তিশালী উদাহরণ হয়ে উঠেছে। খেলাঘর ক্লাব ও হাজি মার্কেট যুব সমাজের এই উদ্যোগ প্রমাণ করেছে যে, সংকটের সময় মানুষ মানুষের পাশে দাঁড়ালে তা সত্যিই সমাজের পরিবর্তন ঘটাতে পারে।