শহীদুল ইসলাম, দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: দেশের পুঁজিবাজার ফের টানা দরপতনের বৃত্তে আটকা পড়েছে। ফলে বাজার আজ ভাল তো কাল খারাপ। এ অবস্থার মধ্যে দিয়ে চলছে পুঁজিবাজার। এদিকে গত তিন কার্যদিবস টানা দরপতনে নতুন করে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে বিনিয়োগকারীদের মাঝে। ফলে বাজার নিয়ে দু:চিন্তা কাটছে না বিনিয়োগকারীদের। এছাড়া সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূচকের দরপতনে লেনদেন শেষ হয়েছে। এদিন ডিএসইর সূচকের সাথে কমেছে লেনদেন। মুলত নতুন করে তিন ইস্যুতে দরপতনের বৃত্তে আটকে পড়েছে পুঁজিবাজার।

প্রথমত, পুঁজিবাজারে গত ১৫ বছরে যত অনিয়ম-দুর্নীতি হয়েছে, সেগুলোর বিচার করতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। প্রথম পর্যায়ে তদন্ত কমিটিকে ১২টি কোম্পানির অনিয়ম ও দুর্নীতি তদন্ত করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তদন্ত কমিটি গঠন গঠনের বিষয়টি ভালভাবে নেয়নি কারসাজি চক্ররা। তবে তদন্ত কমিটি গঠন গঠনের বিষয়টি ইতিবাচক এমন উদ্যোগকে নস্যাৎ করার জন্য পুঁজিবাজারের অনিয়ম ও দুর্নীতির চিহ্নিত হোতারা বিপরীতমুখী অবস্থানে রয়েছেন। ফলে কিছুদিন যাবতই পুঁজিবাজার পতনের ধারায় রাখার অপচেষ্টা চালাচ্ছেন। তদন্ত কমিটি গঠনের পর তাদের অসৎ তৎপরতা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।

দ্বিতীয়ত, দেশের বিভিন্ন শিল্প-কারখানায় নানা রকম গুজব ছড়িয়ে অস্থিরতা তৈরি করছে একটি গ্রুপ। যার ফলশ্রুতিতে গত দুই দিনে গাজীপুর ও ময়মনসিংহ এলাকার ১৯টি ওষুধ কারখানাসহ শতাধিক গার্মেন্টস ফ্যাক্টরী বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। ওইসব এলাকায় শ্রমিকদের মধ্যে বড় অসন্তোষ বিরাজ করছে। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে আজ দেশের পুঁজিবাজারে।

তৃতীয়ত, পুঁজিবাজারে টানা দরপতনে বিনিয়োগকারীদের আস্থা সংকট প্রকট আকার ধারন করছে। এ অবস্থায় আগে বাজার স্থিতিশীল করে পড়ে সংস্কার করা দরকার ছিলো বলে মনে করছেন বিনিয়োগকারীরা। আর আগে বাজার ঠিক না করে কি ভাবে সংস্কার শুরু করছেন এ নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। ফলে বাজার নেতিবাচক অবস্থায় থাকায় ছোট বড় বিনিয়োগকারীরা সাইডলাইনে রয়েছেন। যার কারণে সূচক পতনের পাশাপাশি লেনদেনও কমে গেছে বড় আকারে।

জানা গেছে, দিনশেষে ডিএসই ব্রড ইনডেক্স আগের দিনের চেয়ে ৪৭ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৭৩৯ পয়েন্টে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৯ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১ হাজার ২২৭ পয়েন্টে এবং ডিএসই–৩০ সূচক ১৯ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ২ হাজার ১১৩ পয়েন্টে।

দিনভর লেনদেন হওয়া ৩৯৭ কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৮১ টির, দর কমেছে ২৬৪ টির এবং দর অপরিবর্তিত রয়েছে ৫২ টির। ডিএসইতে ৫৯৩ কোটি ৪৭ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। যা আগের কার্যদিবস থেকে ১৩৩ কোটি ৩ লাখ টাকা কম। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৭২৬ কোটি ৫০ লাখ টাকার ।

অপরদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৬৩ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৬ হাজার ৪৩৮ পয়েন্টে।
সিএসইতে ২৫৯ টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৬৯ টির দর বেড়েছে, কমেছে ১১৫ টির এবং ২০ টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। সিএসইতে ৭ কোটি ৬৫ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।