শহীদুল ইসলাম, দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: ফের খাদের কিনারে দেশের পুঁজিবাজার। টানা চার কার্যদিবস নতুন করে দরপতনে পুঁজি নিয়ে দু:চিন্তায় পড়েছেন বিনিয়োগকারীরা। ফলে সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূচকের দরপতনে নতুন করে আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন বিনিয়োগকারীরা। যার ফলে বিনিয়োগকারীরা প্রতিনিয়ত বিনিয়োগ করা পুঁজি হারিয়ে নি:স্ব হওয়ার পথে। শেয়ারের দাম কমতে কমতে একেবারে তলানিতে নেমেছে।

সাধারণ বিনিয়োগকারীদের পুঁজি হারিয়ে দিশাহারা পরিস্থিতির মুখে পড়েছে ব্রোকারেজ হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংক। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরাও একইভাবে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের ইক্যুইটি এখন নেতিবাচক। দিন যত যাচ্ছে বিনিয়োগকারীদের লোকসানের মাত্রা ততই বাড়ছে। তাই বিএসইসির নতুন চেয়ারম্যানের কাছে বিনিয়োগকারীদের একটি স্থিতিশীল পুঁজিবাজারের দাবী। কারণ গত ১৬ বছর বিনিয়োগকারীরা একটি স্থিতিশীল ও নিরাপদমুক্ত পুঁজিবাজার পায়নি।

বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বলছেন, বেশ কিছু দিন ধরে বাজারে মন্দাভাব চলছে। এরই মধ্যে নিয়ন্ত্রক সংস্থা নতুন করে ১২ কোম্পানির তদন্তের খবরে নতুন করে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে বিনিয়োগকারীরা। এ অবস্থায় নিয়ন্ত্রক সংস্থার বাজার স্থিতিশীল রাখা জরুরী। পাশাপাশি প্রাতিষ্ঠানিক ও ব্যক্তি পর্যায়ের বিনিয়োগকারীদের বাজারমুখী করতে হবে।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, আজ লেনদেন শুরু হয়েছিল ইতিবাচক প্রবণতায়। শুরুতে ডিএসইর সূচক ১৭ পয়েন্ট বেড়ে লেনদেন হয়। এরপর ৩৪ মিনিটের মাথায় সূচক ২৭ পয়েন্ট হারিয়ে লেনদেন হয়। তারপর বেলা ১১টা ১২ মিনিটে এবং ১১টা ৫৩ মিনিটে সূচক ১৫ পয়েন্টের বেশি বেড়ে লেনদেন হয়।
কিন্তু তা বেশিক্ষণ টিকতে পারেনি। দুপুর ১টা ২৯ মিনিটে ডিএসইর সূচক ৩৫ পয়েন্ট নেমে যায়। এরপর ওঠা-নামার মধ্যে চলতে থাকে লেনদেন। শেষভাগে ২টার পর সূচকের পতন কিছুটা কমতে থাকে। যা শেষ বেলায় প্রায় সাড়ে ১০ পয়েন্টে স্থির হয়।

জানা গেছে, দিনশেষে ডিএসই ব্রড ইনডেক্স আগের দিনের চেয়ে ১০ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৭২৮ পয়েন্টে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক .৯৫ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১ হাজার ২২৮ পয়েন্টে এবং ডিএসই ৩০ সূচক ১ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ২ হাজার ১১৪ পয়েন্টে। দিনভর লেনদেন হওয়া ৩৯৫ কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৯৮ টির, দর কমেছে ২৫০ টির এবং দর অপরিবর্তিত রয়েছে ৪৭ টির। ডিএসইতে ৬৭৪ কোটি ৯০ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। যা আগের কার্যদিবস থেকে ৮১ কোটি ৪৩ লাখ টাকা বেশি। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৫৯৩ কোটি ৪৭ লাখ টাকার।

অপরদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৫৯ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৬ হাজার ৩৭৮ পয়েন্টে। সিএসইতে ২০৫ টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৫৪ টির দর বেড়েছে, কমেছে ১২৬ টির এবং ২৫ টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। সিএসইতে ৭ কোটি ৮৫ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।