দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: বৈষ্যম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে গত ৫ আগস্ট। জুলাইয়ের শুরু থেকে চলা এই আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। ওই মাসের ৮ আগস্ট দায়িত্ব নেওয়া অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের এক মাস পূর্তিতে আন্দোলনের সংগঠক শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এ সময় হতাহতদের বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে আবেগআপ্লুত হয়ে পড়েন তিনি, কাঁদতেও দেখা যায় তাকে।

রোববার তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার সরকারি কার্যালয় শাপলায় বেলা ১১টা থেকে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। যা চলে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত। সভায় বৈষ্যম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সংগঠনক ও উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম এবং আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়াসহ কয়েকজন উপদেষ্টাও উপস্থিত ছিলেন।

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, দেখছি আর ভাবছি— কী একটা স্বপ্ন আমাদের সবার সামনে, তোমাদের সামনে, জাতির সামনে তোমরা নিয়ে এসেছো। প্রথমেই যারা শহীদ হয়েছে, তাদের স্মরণ করি। যারা শহীদ হয়েছে, তারা চলে গেছে।

তোমাদের দিকে তাকাচ্ছিলাম আর ভাবছিলাম— তোমরাও শহীদ হয়ে যেতে পারতে। আজ যারা আমাদের সঙ্গে বসতে পারতো, সেই সুযোগ তাদের দেওয়া হয়নি। আমরা এপাড়ের আর ওপাড়ের মানুষ হয়ে গেছি। দুর্ঘটনাচক্রে, নিশ্চিতভাবে বলার উপায় ছিল না— তুমি এখানে থাকবে, তুমি ওখানে থাকবে। কেউ হয়তো এক ঘণ্টা আগে রওনা হয়েছে, কেউ হয়তো এক ঘণ্টা পরে রওনা হওয়ায়…।

আহতদের দেখতে হাসপাতালে যাওয়ার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে তিনি বলেন, যখন হাসপাতালে তাদের দেখার জন্য যাই, তাকাতে কষ্ট হয়। একটা ছেলে, একটা মেয়ে এইরকমভাবে কীভাবে ছিন্নবিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এই দিকে পা চলে গেছে, ওইদিকে…’ এ কথা বলতে বলতে কেঁদে ফেলেন ড. ইউনূস।

সভায় উপস্থিত ছিলেন: আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, বন, পরিবেশ ও জলবায়ু উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার, তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম এবং যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া।