শহীদুল ইসলাম, দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: সপ্তাহজুড়ে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সুচক কিছুটা বাড়লেও অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারের দরপতনের মধ্যে দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। তবে গত সপ্তাহে চার কার্যদিবসেই দাম বাড়ার থেকে দাম কমার তালিকায় ছিল অধিকাংশ কোম্পানি। এতে সপ্তাহজুড়ে দরপতনের পাল্লাই ভারী হয়েছে। এরপরও সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে বাজার মূলধন।

সেই সঙ্গে বেড়েছে মূল্য সূচক। তবে ভালো কোম্পানি বা মৌলভিত্তির বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ায় পুঁজিবাজারে সূচকের ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মিলেছে। সেই সঙ্গে কিছুটা হলেও পতন আড়াল হয়েছে। তবে অনেকেই বর্তমান বাজার পরিস্থিতিকে কৃত্রিম সার্পেট বাজার বলে মনে করছেন। বাজারকে ঘুরে দাঁড়াতে হলে ভালো মৌল শেয়ারের বড় উত্থানের বিকল্প নেই। এছাড়া সূচকের টানা উত্থানের বিকল্প নেই বলে মনে করছেন তারা। তবে বাজার স্বাভাবিক গতিতে থাকলে খুব দ্রুত সময়ে ঘুরে দাঁড়াবো বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাজার ধীরে ধীরে সামনের দিকে অগ্রসর হতে শুরু করেছে। এতো দিন যেসব বড় বিনিয়োগকারী ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী সাইডলাইনে ছিল, তারা বাজারে সক্রিয় হতে শুরু করেছে। ফলে সূচকের উত্থান হলেও বাজারে বিক্রেতার চাপ বেড়ে যাওয়ায় ক্রেতার সংখ্যা কমে যাচ্ছে। কারণ লোকসানে বিনিয়োগকারীরা শেয়ার ছাড়তে চাইছে না।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত সপ্তাহজুড়ে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) বাজার মূলধন দুই হাজার কোটি টাকার ওপরে বেড়েছে। প্রধান মূল্য সূচক বেড়েছে ৮ পয়েন্টের বেশি। অথচ বাজারটিতে যে কয়টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে, তার থেকে প্রায় এক’শ বেশি কোম্পানির দাম কমেছে। সেই সঙ্গে কমেছে গড় লেনদেনের পরিমাণ।

জানা গেছে, সপ্তাহজুড়ে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) প্রথম কার্যদিবস লেনদেন শুরুর আগে ডিএসইতে বাজার মূলধন ছিল ৬ লাখ ৯৩ হাজার ৩২৯ কোটি টাকা। যা সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস লেনদেন শেষে দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৯৫ হাজার ৫৭১ কোটি টাকায়। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন ২ হাজার ২৪২ কোটি টাকা বেড়েছে। সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে ২ হাজার ৪৫২ কোটি ৩৪ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। আগের সপ্তাহে হয়েছিল ৩ হাজার ২২১ কোটি ৪৫ লাখ টাকার। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে লেনদেন ৭৬৯ কোটি ১১ লাখ টাকা কমেছে।

সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৮ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৭৩৫ পয়েন্টে। অপর সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১২ পয়েন্ট এবং ডিএসই-৩০ সূচক ৫ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১ হাজার ২৫৭ পয়েন্টে এবং ২ হাজার ১০৬ পয়েন্টে।

সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট ৩৯৭ টি প্রতিষ্ঠান শেয়ার ও ইউনিট লেনদেনে অংশ নিয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ১৪২ টির, কমেছে ২১৩ টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৪২ টির শতাংশের শেয়ার ও ইউনিট দর।