দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: দেশের পুঁজিবাজার কিছুতেই দরপতনের বৃত্ত থেকে বের হতে পারছে না। বরং দিন যতই যাচ্ছে বিনিয়োগকারীদের রক্তক্ষরণ ততই বাড়ছে। মুলত ক্ষমতার পালাবদল হলেও বিনিয়োগকারীদের ভাগ্যের চাকা ঘোরেনি। বরং প্রতিনিয়ত বিনিয়োগকারীদের লোকসানের পরিমাণ বাড়ছে। সেই সঙ্গে হতাশা বাড়ছে বিনিয়োগকারীদের। ফলে বিনিয়োগকারীদের প্রশ্ন কী হচ্ছে পুঁজিবাজারে। এ ভাবে আর কত দিন চলবে। এ অবস্থায় বিনিয়োগকারীদের লোকসানের পাল্লা আরও ভারী হচ্ছে।

মুলত নিয়ন্ত্রক সংস্থার অযোচিত হস্তক্ষেপে বাজার পরিস্থিতি আরো অস্থিতিশীল হচ্ছে। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) নবগঠিত কমিশন পুঁজিবাজারকে নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হচ্ছে। এতে কমিশন গঠনের শুরুটা ভালো হলেও দিন দিন তার গ্রহণযোগ্যতা হারাচ্ছে। এছাড়া বর্তমান বাজারে আস্থা ও তারল্য সংকটে হাহাকার চলছে। এদিকে সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূচকের বড় দরপতনে লেনদেন শেষ হয়েছে।

এদিন শেয়ার বিক্রির চাপে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ার ক্রেতা সংকট দেখা দিয়েছে। এদিন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে তিন শতাধিক কোম্পানির শেয়ার দর কমেছে। কোম্পানিগুলোর মধ্যে ৮টি কোম্পানির শেয়ার ক্রেতা সংকট উধাও ছিলো। কোম্পানিগুলো হলো: ফু-ওয়াং ফুড, প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্স, নাভানা ফার্মা, সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইল, নিউ লাইন ক্লোথিংস, মেট্রো স্পিনিং, ইয়াকিন পলিমার এবং অলিম্পিক এক্সেসরিজ।

ফু-ওয়াং ফুড: আজ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন শুরু হয় ১৭ টাকা ১০ পয়সা। আর লেনদেন শেষে ক্লোজিং দর হয় ১৫ টাকা ৪০ পয়সায়। আগের দিন শেয়ারটির ক্লোজিং দর ছিল ১৭ টাকা ১০ পয়সা। অর্থাৎ আজ কোম্পানিটির শেয়ার দর ১ টাকা ৭০ পয়সা বা ৯.৯৪ শতাংশ কমেছে। কোম্পানিটির লেনদেন শুরু কিছুক্ষণ পর ক্রেতা সংকটে পরে কোম্পানি। লেনদেনের বাকি সময় আর ক্রেতা খুলে পাওয়া যায়নি।

প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্স: আগের দিন কোম্পানিটির শেয়ারের ক্লোজিং দর ছিল ৪৩ টাকা ৬০ পয়সায়। আজ শেয়ারটির লেনদেন শুরু হয় ৪২ টাকা ৭০ পয়সায়। আর লেনদেন শেষে শেয়ারটির ক্লোজিং দর হয় ৩৯ টাকা ৩০ পয়সা। অর্থাৎ শেয়ারটির দর ৪ টাকা ৩০ পয়সা বা ৯.৮৬ শতাংশ কমেছে। এই শেয়ারেও লেনদেন শুরু কিছু সময় পর ক্রেতা সটকে পরে। লেনদেনের বাকি সময় আর ফিরে আসেনি। যার কারণে ক্রেতা সংকটে ছিল কোম্পানিটি।

নাভানা ফার্মা: নাভানা ফার্মার শেয়ার দর আজ ৫ টাকা ৯০ পয়সা বা ৯.৮৫ শতাংশ কমে। আগের দিন শেয়ারটির ক্লোজিং দর ছিল ৫৯ টাকা ৯০ পয়সা। আজ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন ৬০ টাকায় শুরু হয়। আর দিন শেষে ক্লোজিং দর হয় ৫৪ টাকা। এই কোম্পানির শেয়ার লেনদেন শুরু হলে কিছুক্ষণের মধ্যেই এর দর ৫৪ টাকায় নেমে আসে। এরপর লেনদেনের বাকি সময় কোনো বিনিয়োগকারী শেয়ারটি কেনার আগ্রহ দেখায়নি। যার কারণে ক্রেতা সংকটে ভুগতে হয় কোম্পানিটিকে।

আজ অন্য যেসব কোম্পানির শেয়ারে ক্রেতা সংকট ছিল সেগুলোর মধ্যে: সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইলের ৯.৮৪ শতাংশ, নিউ লাইন ক্লোথিংসের ৯.৭৮ শতাংশ, মেট্রো স্পিনিংয়ের ৯.৭৪ শতাংশ, ইয়াকিন পলিমারের ৯.৬০ শতাংশ এবং অলিম্পিক এক্সেসরিজের শেয়ার দর ৯.৪৮ শতাংশ কমেছে।