পুঁজি হারিয়ে দিশেহারা লাখ লাখ বিনিয়োগকারীরা, রাশেদ কমিশনে অনাস্থা
শহীদুল ইসলাম, দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: ক্রমেই নাজুক হচ্ছে পুঁজিবাজার পরিস্থিতি। দিন যতই যাচ্ছে পতনের আকারও তত বড় হচ্ছে। ফলে ভয়াবহ দরপতনের মধ্যে পড়েছে দেশের পুঁজিবাজার। ক্রেতা সংকটে প্রতিদিনই পুঁজিবাজারে দরপতন হচ্ছে। ফলে পুঁজি নিয়ে অজানা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা। এদিকে পুঁজিবাজারে টানা দরপতন হলেও নিয়ন্ত্রক সংস্থার ভুমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন বিনিয়োগকারীরা। তাছাড়া পুঁজিবাজারে এই দরপতনের শেষ কোথায় এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বেড়াচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা।
তবে একের পর এক মিটিং করেও বাজারের জন্য কোন ইতিবাচক ফলাফল আনতে পারেনি রাশেদ মাকসুদ কমিশন। ফলে রাশেদ মাকসুদ কমিশনের প্রতি দিন দিন বিনিয়োগকারীদের অনাস্থা তৈরি হয়েছে। এরই মধ্যে বিনিয়োগকারীরা টানা দিশেহারা হয়ে মাকসুদ কমিশনের পদত্যাগের দাবীতে বিক্ষোভও করেছেন।
পাশাপাশি সংস্থাটির মূল ফটকে তালা লাগিয়ে দেয় ক্ষুব্ধ বিনিয়োগকারীরা। এরপরে বিনিয়োগকারীদের ভয়ে বিএসইসিতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। অনেক পুলিশ সদস্যকে বিএসইসি ভবনের নিচে অবস্থান করতে দেখা যায়। এছাড়া বিএসইসির নিচ তলার ভিতরে কোস্ট গার্ড ও সেনা সদস্যদের দেখা যায়। তারপরেও থেমে নেই পুঁজিবাজারে দরপতন। কোনভাবেই মাকসুদের নেতৃত্বাধীন কমিশনের উপরে আস্থা পাচ্ছে না বিনিয়োগকারীরা।
এদিকে টানা দরপতন অব্যাহত থাকায় পুঁজিবাজার নিয়ে উদ্বিগ্ন রয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। ফলে প্রতিদিনই পোর্টফোলিও থেকে পুঁজি উধাও হয়ে যাচ্ছে। লাভের হিসাব বাদ দিয়ে প্রতিদিন কত লোকসান হচ্ছে, সেই হিসাব কষতে হচ্ছে ছোট-বড় সব ধরনের বিনিয়োগকারীর। ভালো শেয়ারে বিনিয়োগ করেও আসছে না কাঙ্খিত ফল। ফলে বাড়ছে বিনিয়োগকারীদের আহাজারী ও ক্ষোভ।
ফলে সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচকের বড় দরপতনে লেনদেন শেষ হয়েছে। এদিন কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার দর। তবে টাকার পরিমাণে লেনদেন কিছুটা বেড়েছে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
জানা গেছে, দিনশেষে ডিএসই ব্রড ইনডেক্স আগের দিনের চেয়ে ৫৮ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৫ হাজার ২৫৭ পয়েন্টে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৮ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১ হাজার ১৭৪ পয়েন্টে এবং ডিএসই–৩০ সূচক ১৭ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১ হাজার ৯৩০ পয়েন্টে।
দিনভর লেনদেন হওয়া ৩৯৫ কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৫৩ টির, দর কমেছে ২৯৩ টির এবং দর অপরিবর্তিত রয়েছে ৪৯ টির। ডিএসইতে ৩০৬ কোটি ৮৯ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। যা আগের কার্যদিবস থেকে ১০ কোটি ৫৫ লাখ টাকা বেশি। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ২৯৬ কোটি ৩৪ লাখ টাকার ।
অপরদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১৫০ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৪ হাজার ৮২১ পয়েন্টে। সিএসইতে ২১৮ টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৪১ টির দর বেড়েছে, কমেছে ১৫৬ টির এবং ২১ টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। সিএসইতে ৪ কোটি ৬৪লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।