পুঁজিবাজারে আস্থা ফেরাতে সূচকের টানা উত্থানের বিকল্প নেই, কাটছে না আতঙ্ক
শহীদুল ইসলাম, দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূচক উত্থানে লেনদেন শেষ হয়েছে। এদিন সূচকের সাথে বেড়েছে টাকার পরিমাণে লেনদেন ও বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার দর। তবে সূচকের কিছুটা উত্থান হলেও আতঙ্ক কাটছে না বিনিয়োগকারীদের। কারণ গত দুই মাসে টানা দরপতনে বাজার নিয়ে অজানা আতঙ্কে রয়েছেন বিনিয়োগকারীরা।
এ অবস্থায় বিনিয়োগকারীদের মাঝে আস্থা ফেরাতে সূচকের টানা উত্থানের বিকল্প নেই বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। তবে বর্তমান বাজারে দুটো ইতিবাচক খবরে বাজার ঘুরে দাঁড়ানোর পূর্বাভাস রয়েছে। এর ফলে গত সোমবার ও আজ সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবস ইতিবাচক অবস্থায় ফিরছে পুঁজিবাজার।
এর মধ্যে প্রথমত, অতীতের দুরবস্থা ও শেয়ার কেলেঙ্কারির মাধ্যমে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের বিষয়টি বিবেচনা করে সরকার সুবিধা দেবে। তবে কী ধরনের সুবিধা দেওয়া হবে সে বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি।
দ্বিতীয়ত, সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ক্যাপিটাল গেইনের ওপর আরোপিত কর অব্যাহতি সুবিধা পুনরায় ফিরিয়ে আনার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনার মাধ্যমে সুষ্ঠু সমাধানের পদক্ষেপ গ্রহণ করবে ডিএসই। এই দুই ইতিবাচক খবরে বাজারে কিছুটা হলেও আস্থা ফিরবে বলে মনে করছেন অভিজ্ঞ বিনিয়োগকারীরা।
সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের গত ১৫ বছর মেয়াদে অর্থনীতির অন্যান্য খাতের মতো পুঁজিবাজারেও অবাধ লুটতরাজ সংঘটিত হয়েছে। এ সময়ে অসংখ্য দুর্বল ও প্রায় অস্তিত্বহীন কোম্পানি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়েছে। এ কোম্পানিগুলো পুঁজিবাজারের জন্য আজ বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ক্রমেই এসব কোম্পানির আসল চেহারা প্রকাশিত হচ্ছে।
এতে আরও বলা হয়, বাজারে লাগামহীন কারসাজির মাধ্যমে দুর্বল মৌলভিত্তির, জাঙ্ক কোম্পানির শেয়ারের দাম ব্যাপকভাবে বাড়িয়ে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। ফ্লোরপ্রাইস আরোপ, সার্কিট ব্রেকারের ঊর্ধ্বসীমা ও নিম্নসীমায় নানা কৃত্রিম ব্যবস্থায় বাজারের এ অবস্থা ঢেকে রাখার চেষ্টা করা হয়েছে। এর ফলে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
জানা গেছে, দিনশেষে ডিএসই ব্রড ইনডেক্স আগের দিনের চেয়ে ৬৮ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ২৪১ পয়েন্টে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১৭ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১ হাজার ১৭৪ পয়েন্টে এবং ডিএসই ৩০ সূচক ২০ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১ হাজার ৯২৪ পয়েন্টে।
দিনভর লেনদেন হওয়া ৩৯৫ কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৩০৬ টির, দর কমেছে ৫৫ টির এবং দর অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৪ টির। ডিএসইতে ৩৫৮ কোটি ২২ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। যা আগের কার্যদিবস থেকে ১৩ কোটি ৪৫ লাখ টাকা বেশি। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৩৪৪ কোটি ৭৭ লাখ টাকার ।
অপরদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১০৯ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪ হাজার ৬২৩ পয়েন্টে। সিএসইতে ১৯৮ টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১২৭ টির দর বেড়েছে, কমেছে ৪৬ টির এবং ২৫টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। সিএসইতে ১৩ কোটি ৬৭ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।