দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ এবং ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবু আহমেদের পদত্যাগ দাবিতে বাংলাদেশ ক্যাপিটাল মার্কেট ইনভেস্টর অ্যাসোসিয়েশনের নেতৃত্বে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা।

মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) দুপুর ২টার দিকে রাজধানীর মতিঝিলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। পরে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পুরাতন ভবনের সামনে মানবন্ধন করা হয়। বাংলাদেশ ক্যাপিটাল মার্কেট ইনভেস্টর অ্যাসোসিয়েশনের সমন্বয়ক নুরুল ইসলাম মানিক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

মানববন্ধনে বিনিয়োগকারীরা বলেছেন, বিএসইসির নতুন চেয়ারম্যান অযোগ্য। তাকে দিয়ে এই পুঁজিবাজারে ভালো কিছু আশা করা যায় না। তার প্রতি বিনিয়োগকারীদের কোনো আস্থা নেই। আমাদের টাকা ও মান-সম্মান গেছে। পুঁজিবাজারে ধারাবাহিক দরপতনের ফলে প্রতিদিন বিনিয়োগকারীদের শেয়ার ফোর্সড সেল করা হচ্ছে। এতে প্রতিদিনই কোনো না কোনো বিনিয়োগকারী নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছেন।

গত দুই মাসে টানা দরপতনের ফলে আমাদের বিনিয়োগকৃত অর্থের ৭০ শতাংশ কমে গেছে। পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীদেরকে বাঁচান। কারণ, এই বিনিয়োগকারীর সঙ্গে প্রায় ১ কোটি মানুষ সম্পর্কিত। বিনিয়োগকারীরা অনেক কষ্টে আছেন। পুঁজি হারিয়ে আমরা এখন নিঃস্ব। এ বিষয়ে রাষ্ট্রের কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই। বর্তমান সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ওপর আমাদের আস্থা আছে। কিন্তু, বর্তমান বিএসইসির কমিশনের প্রতি বিনিয়োগকারীদের কোনেো আস্থা নেই। পুঁজিবাজার ও বিনিয়োগকারীদের রক্ষায় প্রধান উপদেষ্টা ও অর্থ উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

এদিকে, মঙ্গলবার দুপুরে পূর্বঘোষণা অনুযায়ী মানবন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালনকালে পুঁজিবাজারের পতন রোধে তাৎক্ষণিক করণীয় প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ক্যাপিটাল মার্কেট ইনভেস্টর অ্যাসোসিয়েশনের সমন্বয়ক নূরুল ইসলাম মানিক বলেন, পুঁজিবাজারে ধারাবাহিক পতন রোধে আমাদের ১০টা প্রস্তাব দ্রুত বাস্তবায়ন করা জরুরি। এ দাবিগুলো বাস্তবায়ন করা হলে আশা করা যায়, পুঁজিবাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়বে।

তিনি আরো বলেন, বর্তমান মার্কেট পরিস্থিতির কারণে গেইন-ট্যাক্স দ্রুত প্রত্যাহার করতে হবে। অযাচিত হস্তক্ষেপ বন্ধ করতে হবে (তদন্ত ও অসময়ে জেড গ্রুপে প্রেরণ ইত্যাদি)। কোম্পানিগুলোর শেয়ারে কোনো ক্যাটাগরি থাকবে না (যেমন: ‘এ’ ‘বি’ ‘জেড’ ইত্যাদি)। কোম্পানিগুলোকে আয়ের ন্যূনতম ৮০% লভ্যাংশ দিতে হবে।

ব্যাংক, ফাইন্যান্স, ইন্স্যুরেন্স, মিউচ্যুয়াল ফান্ড ও আইসিবিসহ পুঁজিবাজারে তাদের যতটুকু বিনিয়োগ করার কথা, তা শতভাগ কার্যকর করতে হবে। এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ড মার্কেটে (ইটিএফ) দ্রুত বিনিয়োগ করতে হবে। কোম্পানিগুলোকে ন্যূনতম শেয়ার ধারণ ৩০ শতাংশ অবিলম্বে কার্যকর করতে হবে। বিএসইসির দায়িত্ব অন্তত ১০টি মিউচ্যুয়াল ফান্ড দ্রুত সময়ের মধ্যে বাজার বিনিয়োগ নিয়ে আসা। পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত কোনো কোম্পানি পর পর দুই বছর লভ্যাংশ প্রদানে ব্যর্থ হলে তার বোর্ড পুনর্গঠন করতে হবে। ফোর্সড সেল বন্ধ করতে হবে।