শহীদুল ইসলাম, দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক একচেঞ্জ (ডিএসই) সূচকের কিছুটা উত্থানে লেনদেন শেষ হয়েছে। টানা দরপতনের পর এনিয়ে তিন কার্যদিবস সূচকের উত্থান হয়েছে। তবে সূচকের উত্থান হলেও এখনো আতঙ্ক কাটেনি বিনিয়োগকারীদের। বিনিয়োগকারীদের আতঙ্ক কাটতে হলে স্থিতিশীল পুঁজিবাজার ও সূচকের টানা উত্থানের বিকল্প নেই বলে মনে করছেন বিনিয়োগকারীরা। কারণ গত দুই মাসের লোকসানে অধিকাংশ বিনিয়োগকারীদের পুঁজি ৮০ শতাংশ উধাও হয়ে গেছে। এদিন সূচকের সাথে বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার দর ও টাকার পরিমাণে লেনদেন। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

এদিকে শেখ হাসিনা সরকারের আমলে ২০২১ সালের ১০ অক্টোবর প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ছিল ৭ হাজার ৩৬৮ পয়েন্টে। তারপর থেকে টানা পতন দেখা যায়। শেষ দুই বছরে শিবলী কমিশনের অনিয়ম ও দুর্নীতি ব্যাপক হলে বাজারর পতন আরও গভীর হয়। সর্বশেষ ৪ আগস্ট শেখ হাসিনা পতনের আগের দিন ডিএসইর সূচক কমে দাঁড়ায় ৫ হাজার ২২৯ পয়েন্টে।

এরপর নোবেলজয়ী ড. ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তবর্তী সরকার আগমণের খবরে শেয়ারবাজারে বড় উত্থান দেখা যায়। মাত্র চার কর্মদিবসে ডিএসইর সূচক বেড়ে যায় ৭৮৬ পয়েন্ট। এরপর বিশিষ্ট ব্যাংকার খন্দকার রাশেদ মাকসুদের নেতৃত্বে বর্তমান কমিশন কাজ শুরু করার দিন থেকে অর্থাৎ ১২ আগস্ট থেকে শেয়ারবাজারে দেখা যায় আবাও ধারাবাহিক পতন। পতনের ছোবলে সর্বশেষ গত ২৮ অক্টোবর ডিএসইর সূচক ৪ হাজার ৮৯৮ পয়েন্টে নেমে যায়। এ সময়ে সুচক খোয়া যায় হাজার পয়েন্টের বেশি।

তারপর পুঁজিবাজারে একগুচ্ছ নীতি সহায়তার উদ্যোগ এবং অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদের বিএসইসি পরিদর্শনের খবরে গত তিন দিনে পুঁজিবাজার ভালো উত্থান দেখা যায়। এ তিন দিনে ডিএসইর সূচক ৩০১ পয়েন্ট বেড়ে আজ ৫ হাজার ১৯৯ পয়েন্টে স্থির হয়। তবে শেখ হাসিনা সরকারের পুঁজিবাজার থেকে অন্তবর্তী সরকারের পুঁজিবাজার এখনো পেছিয়ে রয়েছে। শেখ হাসিনার শেষ কর্মদিবসে ডিএসইর প্রধান সূচক ছিল ৫ হাজার ২২৯ পয়েন্ট। আর অন্তবর্তী সরকারের ২ মাস ২৫ দিনের অভিযাত্রায় আজ সূচক দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ১৯৯ পয়েন্টে। এখনো হাসিনা সরকারের থেকে অন্তবর্তী সরকারের পুঁজিবাজার এখনো ৩০ পয়েন্ট পিছিয়ে রয়েছে।

জানা গেছে, দিনশেষে ডিএসই ব্রড ইনডেক্স আগের দিনের চেয়ে ৩৪ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ১৯৯ পয়েন্টে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৮ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১ হাজার ১৪৪ পয়েন্টে এবং ডিএসই ৩০ সূচক ১০ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১ হাজার ৯২৬ পয়েন্টে।

দিনভর লেনদেন হওয়া ৩৯৭ কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ২১২ টির, দর কমেছে ১৫১ টির এবং দর অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৪ টির। ডিএসইতে ৫৫৬ কোটি ৩০ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। যা আগের কার্যদিবস থেকে ৩৬ কোটি ৯৯ লাখ টাকা বেশি। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৫১৯ কোটি ৩১ লাখ টাকার ।

অপরদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৯৪ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪ হাজার ৪৪২ পয়েন্টে। সিএসইতে ২০৮ টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৩৩ টির দর বেড়েছে, কমেছে ৫৯ টির এবং ১৬ টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। সিএসইতে ৪ কোটি ৮৪ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।