পুঁজিবাজারে শেয়ার বিক্রির চাপে সূচক ও লেনদেনে মন্ধাভাব, কাটছে না আতঙ্ক
শহীদুল ইসলাম, দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূচকের দরপতনে লেনদেন শেষ হয়েছে। এনিয়ে গত দুই কার্যদিবস ফের দরপতনের খপ্পরে পুঁজিবাজার। তবে নতুন করে দরপতনে বিনিয়োগকারীদের মাঝে কিছুটা আতঙ্ক বিরাজ করছে। এদিন ডিএসইতে সূচকের সাথে কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার দর ও টাকার পরিমাণে লেনদেন। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এদিকে দীর্ঘদিন ধরে চলমান মন্দা পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের লক্ষ্যে পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত সোমবার তালিকাভুক্ত কম্পানির শেয়ার বিক্রির মূলধনী মুনাফার ওপর কর কমিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। তবে এমন ইতিবাচক খবরে পরও সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বাজারে স্থায়ী না হওয়ায় বিনিয়োগকারীদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
একাধিক বিনিয়োগকারীর সাথে আলাপকালে বলেন, বাজার আজ ভাল তো কাল খারাপ। এ অবস্থা বছরের পর বছর চলছে। নতুন কমিশন দায়িত্ব গ্রহনের পর শুধু সংস্কার আর সংস্কার করছে। তবে বাজারের কী সমস্যা, কেন বাজার স্থিতিশীল হচ্ছে না এ বিষয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা কোন কার্যকরী পদক্ষোপ নিচ্ছে না। যার ফলে বাজার দুই একদিন সূচকের উর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা দিলেও ফের দরপতনের ফলে বিনিয়োগকারীরা আস্থা সংকটে ভুগছে। ফলে বর্তমান বাজার পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারীদের মাঝে আস্থা ফিরিয়ে আনতে না পারলে বিনিয়োগকারীরা বাজারবিমুখ হয়ে পড়বেন বলে মনে করেন তারা।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পুঁজিবাজারে সূচক ও লেনদেন কমলেও ভয়ের কিছু নেই। বাজার দুই বাড়লে একদিন কারেকশন ভাল বাজারের লক্ষন। এছাড়া বাজারের সাপোর্ট লেভেল এখন খুব ভালো। বাজার এখন ধীরে ধীরে স্বাভাবিক আচরণে ফিরছে। ফলে বাজারে ধীরে ধীরে নতুন বিনিয়োগকারীও আসতে শুরু করেছে।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত অক্টোবর মাসে ডিএসইর লেনদেন কেবল ৩১ তারিখে লেনদেন ৫০০ কোটি ছাড়িয়েছি। বাকি দিনগুলোতে লেনদেন ৫০০ কোটির নিচে ছিল এবং বেশির ভাগ কর্মদিবসে লেনদেন হয়েছে ৪০০ কোটির নিচে। আলোচ্য মাসে ৩০০ কোটি টাকার নিচেও লেনদেন নেমেছিল। তবে চলতি মাসে সূচক ও লেনদেনে ইতিবাচক ধারা অব্যাহত রয়েছে। বেশিরভাগ কার্যদিবসে লেনদেন ৫০০ কোটির ওপরে রয়েছে। একদিন মাত্র লেনদেন হয়েছে ৫০০ কোটির নিচে। আর গত বুধবার লেনদেন হয়েছে প্রায় ৮৪০ কোটি টাকা।
জানা গেছে, দিনশেষে ডিএসই ব্রড ইনডেক্স আগের দিনের চেয়ে ৩০ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৩১৬ পয়েন্টে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৪ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১ হাজার ১৮৭ পয়েন্টে এবং ডিএসই ৩০ সূচক ২ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১ হাজার ৯৬৫ পয়েন্টে। দিনভর লেনদেন হওয়া ৩৯৫ কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৯৭ টির, দর কমেছে ২৪৬ টির এবং দর অপরিবর্তিত রয়েছে ৫২ টির। ডিএসইতে ৫৪১ কোটি ৫৫ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। যা আগের কার্যদিবস থেকে ১০৯ কোটি ৬৫ লাখ টাকা কম। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৬৫১ কোটি ২০ লাখ টাকার ।
অপরদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ২৭ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৪ হাজার ৮৫১ পয়েন্টে। সিএসইতে ২১৫ টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৭৭ টির দর বেড়েছে, কমেছে ১১৭ টির এবং ২১ টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। সিএসইতে ৫ কোটি ৩ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।