শহীদুল ইসলাম, দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: সপ্তাহজুড়ে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূচকের দরপতনের মধ্যে দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। আস্থা ও তারল্য সংকটে কারনে ঘুরে দাঁড়াতে পারছে না পুঁজিবাজার। ফলে দিন যতই যাচ্ছে বিনিয়োগকারীদের লোকসানের পাল্লা ততই ভারী হচ্ছে। এক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রক সংস্থা দেখেও না দেখার ভান করছে। ফলে বিএসইসি উপর আস্থা সংকটে ভুগছেন বিনিয়োগকারীরা। এদিকে সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসই’র ১১ হাজার ৯৫৯ কোটি টাকার বাজার মুলধন উধাও হয়ে গেছে। ডিএসইর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

একাধিক বিনিয়োগকারীর সাথে আলাপকালে বলেন, বর্তমান বাজার পরিস্থিতি ২০১০ সালের চেয়ে ভয়াবহ। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বিনিয়োগকারীরা আশার আলো দেখলেও গত তিন মাসের দরপতনে অধিকাংশ বিনিয়োগকারীদের পুঁজি ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ উধাও। এছাড়া যারা মার্জিন লোনে বিনিয়োগ করছেন তাদের অধিকাংশ পোর্টফোলিও ইক্যুইটি মাইনাস। এ অবস্থায় বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরাতে না পারলে পুঁজিবাজারের ভবিষ্যত নিয়ে শঙ্কিত বলে মনে করছেন বিনিয়োগকারীরা।

জানা গেছে, আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস ডিএসইর বাজার মূলধন ছিল ৬ লাখ ৭৪ হাজার ৬৭৮ কোটি টাকা। আর বিদায়ী সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বাজার মূলধন দাঁড়ায় ৬ লাখ ৬২ হাজার ৭১৯ কোটি টাকায়। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে বাজার মূলধন কমেছে ১১ হাজার ৯৫৯ কোটি টাকা বা ১.৭৭ শতাংশ। সপ্তাহটিতে টাকার পরিমাণে লেনদেন ৪৪১ কোটি ৮ লাখ টাকা কমে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৩২৯ কোটি ২ লাখ টাকায়। আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস ডিএসইতে লেনদেন হয়েছিল ২ হাজার ৭৭০ কোটি ১০ লাখ টাকা।

সপ্তাহটিতে ডিএসইর প্রধান সূচক ১৫৭ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ১৯৭ পয়েন্টে। অপর সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ সূচক ৩৭ পয়েন্ট এবং ডিএসই-৩০ সূচক ৬৭ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১ হাজার ৯১৯ পয়েন্টে এবং ১ হাজার ৫১৫ পয়েন্টে। সপ্তাহটিতে ডিএসইতে ৩৮২ টি কোম্পানি লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ২৩ টির, দর কমেছে ২৮৭ টির এবং ৩১টির শেয়ার দর অপরিবর্তিত রয়েছে।

এদিকে, প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন কমেছে ৮৮ কোটি ২২ লাখ টাকা বা ১৫ দশমিক ৯২ শতাংশ। চলতি সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৪৬৫ কোটি ৮০ লাখ টাকা। এর আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছিল ৫৫৪ কোটি ২ লাখ টাকা। সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে ৩৮২টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড ইউনিটের লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দাম বেড়েছে ৭২ টি কোম্পানির, কমেছে ২৮৭টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৩টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।