কোন আশাই স্থিতিশীল হচ্ছে না পুঁজিবাজার, বাড়ছে শেয়ার বিক্রির চাপ
শহীদুল ইসলাম, দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূচকের দরপতনে লেনদেন শেষ হয়েছে। তবে আগের কার্যদিবসে ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশকে (আইসিবি) সভরেন গ্যারান্টির বিপরীতে ৩ হাজার কোটি টাকা ঋণ প্রাপ্তির খবরে কিছুটা সূচক বাড়লেও এক কার্যদিবসের ব্যবধানে ফের দরপতনে পুঁজিবাজার।
এদিন দরপতন হলেও অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ার দর বাড়ছে। তবে আস্থা সংকট থাকায় শেয়ার বিক্রির চাপে পুঁজিবাজার ঘুরে দাঁড়াতে পারছে না। এই মুহুর্তে পুঁজিবাজার স্থিতিশীল রাখতে হলে প্রথমই বিনিয়োগকারীদের মাঝে আস্থা ফেরাতে হবে। এছাড়া সূচকের টানা উত্থানের বিকল্প নেই বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে দেশে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর পুঁজিবাজার সংস্কারের উদ্যোগ নেয় সরকার। এরই ধারাবাহিকতায় পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) পুনর্গঠন করা হয়। পুঁজিবাজারে সংস্কারের উদ্যোগে নতুন আশায় স্বপ্ন বুনতে থাকেন বিনিয়োগকারীরা। তবে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের প্রায় চার মাস অতিবাহিত হতে চললেও বাজারে স্থিতিশীলতা আসেনি।
বরং দিনের পর দিন যে সংকট রয়েছে, তা আরও ঘনীভূত হতে চলেছে। এতে চার বছরের মধ্যে সর্বনিম্নে নেমেছে সূচক। ফলে এমন পরিস্থিতিতে শূন্য হচ্ছে বিনিয়োগকারীদের পোর্টফোলিও। পুঁজি হারিয়ে ‘নিঃস্ব’ হয়ে বাজার ছাড়তে শুরু করেছেন অনেক বিনিয়োগকারী।
বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, কোন আশাই পুঁজিবাজার স্থিতিশীল হচ্ছে না। মুলত আইসিবির ঋণ প্রান্তির খবরে বাজার নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে নতুন করে আশার সৃষ্টি হয়েছিল তা একদিনের ব্যবধানে ফের দরপতনে সেই আশায় গুড়েবালি। মুলত একটি সিন্ডিকেট চক্র বাজারকে কোন ক্রমেই ঘুরে দাঁড়াতে দিচ্ছে না। এরা শেয়ার বিত্রির চাপ দিয়ে বাজার অস্থিতিশীল রাখছে। একটু বাজার ঘুরলেই কারা শেয়ার বিক্রি করছে বিএসইসি সার্ভিল্যান্সের মাধ্যমে তদারকী দরকার বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
জানা গেছে, দিনশেষে ডিএসই ব্রড ইনডেক্স আগের দিনের চেয়ে ৫ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৫ হাজার ১৯২ পয়েন্টে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক .৩২ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১ হাজার ১৬৬ পয়েন্টে এবং ডিএসই ৩০ সূচক ১ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১ হাজার ৯১৬ পয়েন্টে।
দিনভর লেনদেন হওয়া ৩৯০ কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১২৫ টির, দর কমেছে ১৯৬ টির এবং দর অপরিবর্তিত রয়েছে ৬৯ টির। ডিএসইতে ৪৭৩কোটি ৭৫ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। যা আগের কার্যদিবস থেকে ২২ কোটি ৫৯ লাখ টাকা বেশি। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৪৫১ কোটি ১৬ লাখ টাকার ।
অপরদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৬২ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪ হাজার ৫৩২ পয়েন্টে। সিএসইতে ২১৯ টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১১৫ টির দর বেড়েছে, কমেছে ৭৬ টির এবং ২৮ টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। সিএসইতে ৫ কোটি ৬০ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।