যে কারণে ব্র্যাক ব্যাংকের এমডির পদত্যাগ দাবি
দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: আমানতকারীদের আস্থার সংকট সৃষ্টি করতে পারে এমন মন্তব্যে ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদ থেকে সেলিম আর এফ হোসেনের পদত্যাগের দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তা কর্মচারীরা। গত বৃহস্পতিবার বিকালে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুক্তিযুদ্ধ সংসদে অনুষ্ঠিত এক প্রতিবাদ সভায় এমন দাবি জানান তারা। তবে ব্র্যাক ব্যাংকের এমডির দাবি, তিনি সেখানে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তাদের জবাবদীহিতার অভাবের কথা বলেছেন যা নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের মধ্যে ভুল বুঝাবুঝি হয়েছে।
প্রতিবাদ সভায় কর্মকর্তার অভিযোগ করেন, বাণিজ্যিক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের বিদেশযাত্রায় আগে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমতি লাগলেও যার হইতকরণের উদ্যোগ নেয় এই ব্যবস্থাপনা পরিচালক। এর পর পরই কয়েকজন দূর্নীতিগ্রস্থ এমডি বিদেশে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। দেশের সকল দায়িত্বশীল ব্যক্তি তার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি গ্রহণ করেই বিদেশে যাওয়ার রীতি প্রচলিত আছে।
বক্তার আরো অভিযোগ করেন, ফ্যাসিস্ট সরকারের নির্ধারিত সিনেমা বাংলাদেশ ব্যাংকের সকল কর্মকর্তাকে দেখতে বাধ্য করায়, এর জন্য অর্থায়ন করা এবং যারা যারা সিনেমা দেখতে যায়নি তাদের একটি বিশেষ সংস্থার মাধ্যমে তালিকা বানানোর মত অনৈতিক কাজে তিনি যুক্ত ছিলেন তিনি। প্রয়োজনীয় যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও নীতিমালা লংঘন করে রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতায় বিপুল বেতন ভাতায় পতিত সরকারের আমলে ব্যাংকের এমডির চাকরি পান তিনি।
কর্মকর্তারা বলেন, আইডিএলসিতে থাকাকালে পিকেহালদার সংশ্লিষ্ট বেনামী প্রতিষ্ঠান ক্লিস্টোন গ্রুপের আবদুল আলীমকে কোটি টাকা ঋণ দেন তিনি।
আর্থিক অনিয়মের কারণে তার আপন ভাই সিটি ব্যাংকের এমডির পদ ছাড়তে বাধ্য হয়। পরে তারই প্রভাব ও প্রতিপত্তিতে সে আবার ব্যাংকিং খাতে ফিরে আসে। নজরুল ইসলাম মজুমদারসহ সকল ব্যাংক ডাকাতদের সাথে বিশেষ সখ্যতাকারী এই প্রভাবশালী এখন সরকার পরিবর্তনের সুযোগে ভোল পাল্টাতে আরম্ভ করেছেন। উল্লেখ্য, গত বুধবার বি আই বি এম এর এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের উপস্থিতিতে তিনি অভিযোগ করেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে ব্ল্যাকমেইল করছে। নিয়োগ বদলি ও প্রমোশনের বিষয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের চাপের কথা উল্লেখ করেন ওই অনুষ্ঠানে।
সভায় সেলিম আর এফ হোসেনের বিরুদ্ধে খুব দ্রুত প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য ডেপুটি গভর্নর ও গভর্নরের কাছে অনুরোধ জানানো হবে মর্মে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। তার ব্যক্তির বিরুদ্ধে দ্রুত প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলেআরো বৃহত্তর কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে বলেও কর্মকর্তারা একমত হন।
এ বিষয়ে ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম আর এফ হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বুধবার আমি যখন কিছু কথা বলি তখন সেখানে গভর্নর, ডেপুটি গভর্নররা ছিলেন। আমি সেখানে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তাদের জবাবদীহিতার অভাবের কথা বলেছি। আমি বলেছি এটা তদন্ত করা প্রয়োজন। আমি বলেছি ব্যাংকের পরিচালন পর্ষদ, ব্যবস্থাপনা একই সাথে বাংলাদেশ ব্যাংকের সুশাসনেরও একটা ব্রেকডাউন হয়েছে।
এসব বিষয়ে যারা শীর্ষ পর্যায়ে নেতৃত্বে ছিলেন আমি তাদেরকে বুঝিয়েছি। এতে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা হয়তো ভুল বুঝেছেন বা ভুল বুঝাবুঝি হয়েছে। এছাড়াও এটার পেছনে কারও বা কোনো গ্রুপের অসৎ উদ্দেশ্য আছে কি না সেটাও দেখার বিষয়।