টানা ছয় কার্যদিবস পর সূচকের উত্থানে ফিরছে পুঁজিবাজার, লেনদেনে ভাটা
শহীদুল ইসলাম, দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: টানা ছয় কার্যদিবস দরপতনের পর আজ সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূচকের উত্থানে লেনদেন শেষ হয়েছে। তবে সূচকের বড় উত্থান হলেও লেনদেনে ভাটা পড়েছে। মুলত টানা দরপতনের কারনে বিনিয়োগকারীদের মাঝে আস্থা সংকট থাকায় নতুন করে বাজারমুখী হচ্ছে না। এছাড়া নতুন বিনিয়োগকারীরা বাজারে আসছে না। এর ফলে পুঁজিবাজারে আস্থা সংকটের পাশাপাশি তারল্য সংকট রয়েছে।
এদিকে সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে ডিএসই’র দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে সিংহভাগ কোম্পানি। ফলে সবকটি মূল্য সূচকের বড় উত্থান হয়েছে। তবে কমেছে লেনদেনের গতি। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। তবে এর আগে টানা ছয় কার্যদিবস ডিএসইর সূচকের পতন হয়েছে। ঐ টানা পতনে পুঁজিবাজারে ১৩৩ পয়েন্ট সূচক কমেছে। আর বিনিয়োগকারীদের বাজার মূলধন উধাও হয়েছে ১৪ হাজার ৩২৯ কোটি টাকা। তবে আজ ডিএসইর সূচক উত্থানের পাশাপাশি বিনিয়োগকারীরা ফিরে পেয়েছেন ৩ হাজার ৫১১ কোটি টাকা।
একাধিক বিনিয়োগকারীর সাথে আলাপকালে বলেন, বর্তমান পুঁজিবাজারের মূল সমস্যা আস্থা সংকট। মুলত বিএসইসি’র নতুন চেয়ারম্যান যোগদানের পর থেকে হুটহাট সিদ্ধান্তে আস্থা বদলে বিনিয়োগকারীদের অনাস্থা সৃষ্টি হয়েছে। বিনিয়োগকারীদের মাঝে এ অনাস্থা বিএসইসি দূর করতে হবে। তা না হলে বাজার স্থিতিশীল করা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবো। কারন অনাস্থা থাকায় বিনিয়োগকারীরা নতুন করে লেনদেনে ফিরছে না। এমনকি বিএসইসি’র বিনিয়োগকারীদের পুঁজির নিরাপত্তা দিতে হবে বলে তারা মন্তব্য করেন।
বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, টানা ছয় কার্যদিবস পর সূচকের কিছুটা উত্থান হলে লেনদেনে ভাটা থাকায় আতঙ্ক কাটছে না। তবে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহের কারণেই সূচকের উত্থান হয়েছে। কোম্পানিগুলোর প্রতি আগ্রহ তৈরি না হলে বিনিয়োগকারীরা তাদের কষ্টার্জিত অর্থ বিনিয়োগ করবে না। তবে সব সময় খারাপ কোম্পানি এড়িয়ে ভালো মৌল ভিত্তি কোম্পানিতে বিনিয়োগ করতে হবে। ভালো কোম্পানিতে বিনিয়োগ করলে সেখান থেকে মুনাফা পাওয়ারও আশা থাকে। যেটা খারাপ কোম্পানি থেকে আশা করা যায় না।
জানা গেছে, দিনশেষে ডিএসই ব্রড ইনডেক্স আগের দিনের চেয়ে ৭৩ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ১৭৮ পয়েন্টে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১২ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১ হাজার ১৫২ পয়েন্টে এবং ডিএসই ৩০ সূচক ২৬ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১ হাজার ৯০৮ পয়েন্টে।
দিনভর লেনদেন হওয়া ৩৯০ কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ২৩২ টির, দর কমেছে ৮৯ টির এবং দর অপরিবর্তিত রয়েছে ৬৯ টির। ডিএসইতে ৩০৪ কোটি ১০ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। যা আগের কার্যদিবস থেকে ৪৭ কোটি ৪৯ লাখ টাকা কম। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৩৫১ কোটি ৫৯ লাখ টাকার।
অপরদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১২৯ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪ হাজার ৪৩৩ পয়েন্টে। সিএসইতে ১৬৬ টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৮৭ টির দর বেড়েছে, কমেছে ৪৭ টির এবং ৩২ টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। সিএসইতে ৫ কোটি ৭০ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।